Alapon

তুরস্ক কি আফগানিস্তানে নিঃস্বার্থভাবে থাকতে চায়?



তুরস্ক আফগানিস্তানে ন্যাটো সৈন্যদের প্রত্যাহারের পরও থাকতে চাইছিলো, এখন প্রশ্ন হলো তুরস্কের এই থাকা কি আফগানিদের মংগলের জন্য স্বার্থহীনভাবে থাকতে চাওয়া ছিলো যার উদ্দেশ্য আফগানিদের ঐক্যবদ্ধ করা,তাদের উপকার করা! নাকি পুরোটাই তুরস্কের নিজ স্বার্থগত ব্যাপার ছিলো?

আসুন এই ব্যাপারটা নিয়ে নিরপেক্ষভাবে একটু পরিষ্কার হয়ে নিই!

তুরস্ক আফগানিস্তানে পরাজিত দখলদার শক্তি আমেরিকার সাথে আফগানে থাকতে চেয়েছিলো পাঁচটি শর্ত আমেরিকা কর্তৃক পূরণের প্রতিশ্রুতির দানের পর!

শর্তগুলো হলো-

১. তুরস্কের বিরুদ্ধে আরোপিত সকল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার (আমেরিকা, ইউরোপ) করতে হবে।

২. রাশিয়ার মিসাইল এস-৪০০ নিয়ে কোনো কথা বলতে পারবে না ন্যাটো জোট, আমেরিকা। এবং এস -৪০০ ইস্যুতে তুরস্ককে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকিও বন্ধ করতে হবে।

৩. এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান প্রকল্পে তুরস্ককে আবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৪. কাবুলে তুরস্কের সৈন্য থাকলেও সব খরচ লজিস্টিক সাপোর্টসহ সব কিছু ন্যাটোকে বহন করে হবে।

৫. এসব ক্ষেত্রে তারা পাকিস্তানকে সাথে রাখার বিষয়টিও বলছে (যেহেতু ইমারতে ইসলামীকে নিষ্ক্রিয় করতে পাকিস্তানের খুব প্রয়োজন ছিলো) ।

http://www.onnoekdiganta.com/article/detail/12261

এখন বিবেকবান মুসলিম ভাইদের প্রতি আমার পাল্টা প্রশ্ন রইলো-ইউরোপের সব অবরোধ প্রত্যাহারের যে দাবী তুরস্ক করেছিলো আফগানে থাকার বিনিময়ে তা কি ইমারতে ইসলামীকে আফগানের ক্ষমতায় আনার জন্য নাকি তাদের বিরুদ্ধে ইউরোপের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করার জন্য?

২/ এস ৪০০ নিয়ে তুরস্কের বিরুদ্ধে আমেরিকার সব কার্যক্রম বন্ধ কিভাবে সম্ভব হতো তুরস্ক কর্তৃক আফগানে থাকার বিনিময়ে? আপনার কি মনে হয় ইমারতে ইসলামীর বিরুদ্ধে কাজ করলে নাকি তাদের পক্ষে কাজ করলে এটা সম্ভব হতো?

৩/ আফগানে থাকার বিনিময়ে এফ ৩৫ যুদ্ধ প্রকল্পে পুনরায় কোন স্বার্থে তুরস্ককে অন্তভূক্ত করার জন্য তুরস্ক আমেরিকার কাছে আবেদন করেছিলো?
এখানে আমেরিকার স্বার্থ কি ইমারতকে ক্ষমতায় নেওয়া নাকি প্রতিহত করা?

৪/ ইউরোপ কেন কোন স্বার্থে আফগানে তুরস্কের থাকার বিনিময়ে সব ধরণের লজিস্টিক সাহায্য সরবরাহ করবে?

যদি বিবেকবোধ বলে আপনার কিছু থেকে থাকে তাহলে পরিষ্কারভাবে বুঝবেন যে তুরস্কের আফগানে অবস্থানের ইচ্ছা ছিলো তুরস্ক ও আমেরিকার পারস্পারিক লাভজনক ব্যবসায়ীক লেনদেন।

তুরস্ক আফগানিস্তানে থেকে ইউরোপ আমেরিকার স্বার্থে ইমারতে ইসলামীকে বলির পাঠা বানানোর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাবে তার বিনিময়ে তুরস্ককে সব ধরণের আর্থিক ও সামরিক সাহায্য করে যাবে ইউরোপ ও আমেরিকা এই হলো তুরস্কের আফগানে অবস্থানের মূল উদ্দেশ্য। উপরের পাঁচটি শর্তের মধ্যেই যার সত্যতা লুক্কায়িত আছে।

সংক্ষেপে যার মানে হলো- পুরোটাই ব্যবসা এবং এই ব্যবসায়ের মাল,সামান হলো আফগানের ইসলামি জাতি। এবং ক্রেতা ও বিক্রেতা হলো যথাক্রমে আমেরিকা ও তুরস্ক।

পুরো পর্যালোচনা থেকে আমরা যা বুঝলাম তাহলো তুরস্কের আফগানে অবস্থান করতে চাওয়া নিঃস্বার্থ নয় বরং পুরোটাই নিজ স্বার্থগত।

পঠিত : ৩৯০ বার

মন্তব্য: ১

২০২১-০৬-২৯ ১০:০৮

User
ইবনে ইসহাক

জটিল আলোচনা

submit