Alapon

ইসলামী যড়যন্ত্রঃ পশ্চিমা বিশ্বের তৎপরতা

ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি সরকারি নথি থেকে জানা গেছে, মুসলিম-বিশ্বে ‘ইসলামী সংস্কার’ প্রচার করার জন্য মুসলিম নারী ও তরুণদের ব্যবহারের ব্যাপারে মার্কিন স্টে-ই-ট ডিপার্টমেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনকে পরামর্শ দিয়েছিল। তাদের মতে নারীর ক্ষমতায়নের ওপর ফোকাস করা মুসলিম-বিশ্বে অ্যামেরিকান শক্তি আর মুক্তির বয়ানকে টিকিয়ে রাখার সুযোগ করে দেবে।
.
ইসলামকে বিকৃত করা এবং মুসলিম উম্মাহকে নিয়ন্ত্রণের জন্য নারী আর তরুণদের ব্যবহারের কৌশল নতুন না। বরাবরই এটা ছিল ঔপনিবেশিক দখলদারদের মূল কৌশল। শুধু মুসলিম-বিশ্বে না, গত কয়েক শ বছর ধরে অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, চীন–এই কৌশল তারা প্রয়োগ করেছে সব জায়গাতেই।
.
লর্ড ক্রোমারসহ অন্যান্য দখলদাররা সুনির্দিষ্টভাবে দাবি করত, মুসলিম পুরুষরা নারীদের বন্দী এবং পরাধীন করে রেখেছে। ইউরোপীয় পুরুষ মুসলিম-বিশ্বে ইউরোপীয় মূল্যবোধ নিয়ে এসেছে মুসলিম নারীকে মুক্ত করার জন্য। ক্রোমাররা বলত, নারী অধিকারকে জায়গা করে দেয়ার জন্য ই-স-লা-মী আ-ই-নে-র (শ-রী-য়া-হ-র) সংস্কার করা জরুরি।
.
‘মুক্ত’ হবার জন্য মুসলিম নারীর প্রথম করণীয় হলো, হিজাব খুলে ফেলে পশ্চিমা নারীদর মতো পোশাক পরা। পাশাপাশি মুসলিম নারীকে সব ধরনের পুরুষের কর্তৃত্ব অস্বীকার করতে হবে। সেটা বাবা হোক, স্বামী হোক, কিংবা পুরুষ আলিম হোক। সেই সাথে বিলুপ্ত করতে হবে বহুবিবাহের ‘বর্বর’ বিধান। ঘরের ভেতর ‘ধুঁকে-ধুঁকে মরা’র জীবন ছেড়ে যেকোনো মূল্যে বেরিয়ে এসে নারীকে যোগ দিতে হবে কাজে।
.
এসব কথাবার্তার সুবাদে দখলদাররা পেল সস্তা আর সহজে প্রতিস্থাপনযোগ্য অনেক শ্রমিক। আর মুসলিম সমাজে পড়ল সুদূরপ্রসারী প্রভাব। মুসলিম বিশ্বে চালানো এসব ঔপনিবেশিক প্রকল্পের আলোচনা বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক কাজে উঠে এসেছে।
.
ঔপনিবেশিক দখলদারদের এই কৌশলের মূল লক্ষ্য ছিল, প্রতিষ্ঠান হিসেবে মুসলিম পরিবারকে ভেঙে দেয়া। মজবুত, সুসংহত পরিবার উম্মাহর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান। স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী, পিতার বিরুদ্ধে কন্যা, ভাইয়ের বিরুদ্ধে বোনকে উস্কে দিয়ে খুব সহজেই এই প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করা যায়। এভাবে ধীরে ধীরে মুসলিম জনগণের ওপর বাড়ে ঔপনিবেশিক দখলদারের নিয়ন্ত্রণ এবং কর্তৃত্ব।
.
শত শত বছর ধরে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে আসছে ওরা। আর এসব করা হয়েছে নারী ক্ষমতায়নের স্লোগানের আড়ালে। দুই শতাব্দী ধরে এভাবেই হয়েছে এই পরিকল্পনার মার্কেটিং। মুসলিম ফেমিনিস্টরা যখন ইসলামের ইলমী সিলসিলাকে অস্বীকার করে শরীয়াহ সংস্কারের আহ্বান করে, তারা তখন মূলত ঔপনিবেশিক আর সাম্রাজ্যবাদীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।

পঠিত : ২৫৮ বার

মন্তব্য: ০