Alapon

করোনার অজুহাতে ধ্বংস করা হচ্ছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা...



অবশেষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলো। করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর সরকার সেই যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলো, তারপর ৬৫ সপ্তাহ অর্থাৎ দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলো। করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সবার শীর্যে।

যদিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সম্পূর্ণরূপে খুলে দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলবে না। প্রতি শ্রেণী সপ্তাহে একদিন স্কুল করতে পারবে। এভাবে ধীরে ধীরে স্কুল কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হবে। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী দিপুমনি বলেছেন, ‘সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে আবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

মন্ত্রী মহাদয়ের কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে, সরকার বাহাদুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার চেয়ে বন্ধ রাখাতেই বেশি উৎসাহি। কিন্তু কেন?

সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী কিছুদিন পূর্বে বলেছিলেন, ‘আমাদের কাছে গোয়েন্দা রিপোর্ট রয়েছে যে, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুললেই নাশকতা ও অরাজকতার মত পরিস্থিতি তৈরি করবে।’

তার মানে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, সরকার গণরোশের আশঙ্কা করছে। আচ্ছা বলুন তো, কোন সরকার গণরোশের আশঙ্কা করে? একমাত্র স্বৈরাচার সরকারই গণরোশের আশঙ্কায় থাকে। তারা সর্বদা জনগণের শক্তিকে ভয় পায়। জনগণের একত্রিত হওয়াকে ভয় পায়। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ভোটারবিহিন নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে স্বৈরশাসন কায়েম করেছে। আর এই স্বৈরশাসন কায়েম করতে গিয়ে তারা জনসাধারণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আর এই বিচ্ছিন্নতাই তাদের মনে ভয়ের সৃষ্টি করেছে। এই ভয় থেকেই তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণরূপে খুলে দেওয়ার সাহস পাচ্ছে না।

একদিকে সরকার বাহাদুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছে না নিজেদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখতে, অন্যদিকে এ কারণেই লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়ে গেছে। কতক শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার মাস্টার্সে এসে ধমকে গেছে। কারও আবার অনার্স ফাইনালে এসে থেমে গেছে। অথচ এই দেড় বছরে কয়েক লাখ শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করে ফেলতে পারতো। তারপর তারা কর্ম জীবনে পদার্পন করতে পারতো। এতে দেশের অর্থনীতিও লাভবান হতো। কিন্তু সরকার নিজের গদি রক্ষার্থে এসকল শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। গত দেড় বছরে কত শিক্ষার্থী যে ঝরে পড়েছে, তার ইয়াত্তা নেই। আর ঝড়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। কারণ, নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো তো তাদের সন্তানদের মাসের পর মাস এভাবে অলস বসিয়ে রাখতে পারে না। যার কারণে তাদের বাধ্য হয়েই পড়াশোনা বাদ দিয়ে জীবিকার খোঁজে ঝাপিয়ে পড়তে হচ্ছে।

অন্যদিকে, শিক্ষা কার্যক্রমের স্বাভাবিক গতি ধরে রাখতেই নাকি সরকার অটো পাশের ব্যবস্থা করেছে। এই অটোপাশ দিয়ে পুরো একটি জেনারেশনকেই ধ্বংসের মুখে ঢেলে দিয়েছে। এই জেনারেশনটি হয়ে উঠবে আত্মবিশ্বাসহীণ জেনারেশন। সরকার কেবল নিজের ক্ষমতাকে নিরাপদ করতে পুরো জাতিটাকেই হুমকির মুখে ফেলে দিলো!

পঠিত : ৩১২ বার

মন্তব্য: ০