Ⅱ বুলিং - এর বিরুদ্ধে শিশুকে কীভাবে তৈরি করবো? Ⅱ
তারিখঃ ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:২৯
বুলিং - এর বিরুদ্ধে শিশুকে কীভাবে তৈরি করবো?
জায়ান, বয়স ৭, দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র। মাস দুয়েক যাবৎ মা লক্ষ্য করছেন, জায়ান কিছুতেই স্কুলে যেতে চায় না। সে স্কুল বেশ পছন্দই করতো, কিন্তু এখন সকালে উঠেই কোনদিন পেটব্যথা, কোনদিন বা মাথাব্যথা বলে। বৃহস্পতিবার আসলেই তার মন কেমন যেন উৎফুল্ল হয়ে যায়। স্কুল থেকে খোঁজ নিয়ে মা জানতে পারেন যে, প্রায় প্রতিদিনই জায়ানের মুদ্রাদোষের কারণে সে স্কুলে bullying এর শিকার হয়।
বাংলাদেশ সহ বিশ্বের প্রায় সমস্ত দেশে Bullying খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। শুধু স্কুলেই নয়, কলেজে, ইউনিভার্সিটিতে, এমনকি কর্মক্ষেত্রেও আমাদের প্রত্যেককে Bullying এর মোকাবেলা করতে হয়। এই বিদ্রুপ বা উপদ্রব আমরা অনেকাংশেই কাটিয়ে উঠতে পারলেও, শিশুদের জন্য বড়দের সাহায্য ছাড়া উঠে দাঁড়ানো বেশ কষ্টকর। আপনার সন্তানের ক্ষেত্রে এমন সমস্যার সম্মুখীন হলে কিছু পরামর্শ আপনাকে সাহায্য করবে-
১. Find out the reason for bullying: কোন বিষয়টির জন্য লোকে তাকে ঠাট্টা করছে, এটা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। কারণ, তার উপর নির্ভর করে আপনি আপনার সন্তানকে গড়ে তুলবেন। সমাধানযোগ্য সমস্যা হলে উপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব।
২. Teach him how to respond: Bullying এর শিকার হয়ে উপেক্ষা করা, পালিয়ে বেড়ানো বা জবাব না দেয়া, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর জন্য খুব একটা উপকারী নয় ; বরং এতে ভবিষ্যতে স্বাবলম্বী প্রতিবাদের
সৎসাহস কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে অভিভাবক হিসেবে সন্তানকে উপযুক্ত জবাব দেয়া, প্রতিবাদ ইত্যাদি শেখানো উপকারী। আপনি নিজের জীবনের একটি ঘটনা গল্পচ্ছলে শিশুকে শোনাতে পারেন, যেখানে আপনি বা শিশুর আপন কেউ Bullying এর শিকার হয়ে ফেরত এসেছে।
ঘটনার মাত্রা তীব্র না হলে আপনি নিজে উপস্থিত থেকে তাকে সাহায্য না করাই উত্তম, বরং তাকে কৌশল শিখিয়ে নিজেই সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে দেওয়া উচিত; এতে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে।
৩. Building self- esteem: শৈশব কালে বুলিং এর শিকার হওয়া শিশুদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসের জায়গাটা খুব দুর্বল হয়ে থাকে অনেক সময় সে বুলিং এর স্মৃতি বড় হওয়ার পরও ভুলতে পারে না। পুনরায় মানুষকে বিশ্বাস করা এদের জন্য খুব কঠিন হয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরা কর্মজীবনে ও নারীদের প্রতি সন্দেহপ্রবণ থাকে তাই শৈশব কালে এই জায়গাটাতে কাজ করা প্রয়োজন।
৪. Psychotherapy: পিতা মাতা হিসাবে অনেক সময় সন্তানকে বোঝা এবং বোঝানো কষ্টসাধ্য। এক্ষেত্রে সাইকোথেরাপিস্ট বা কাউন্সিলর আপনাকে সহায়তা করতে পারে, কারণ শিশুর জন্য অপরিচিত একজনের কথা মেনে চলা তুলনামূলক সহজ।
আপনার সন্তান যদি কাউকে Bullying করে থাকে, সেক্ষেত্রেও অভিভাবক হিসেবে আপনার দায়িত্ব আছে। কারণ আপনার লালন-পালনের ত্রুটিতে, অন্য কারো সন্তানের ক্ষতি হোক -নিশ্চয়ই আপনি চান না?
Bullying শিকার হয়ে বিষণ্নতা, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার, ফোবিয়াসহ আরও বিভিন্ন মানসিক রোগ হতে পারে।
Those who understand will never judge & those who judge will never understand. So, let's fight against bullying.
- লাইফ স্প্রিং
মন্তব্য: ০