Alapon

বন্ধ হোক ট্রাফিক পুলিশের অরাজকতা...!



সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হচ্ছে, নিজ মটরসাইকেলে আগুন দেওয়া। গতকাল একজন মটর সাইকেল চালক নিজেই নিজের গাড়িতে আগুন দিয়ে জালিয়ে দিয়েছেন। কারণ, ট্রাফিক পুলিশ বার বার বিভিন্ন কারণে মামলা দিয়ে জরিমানা করায় ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে নিজের গাড়ি জালিয়ে দিয়েছেন। জালিয়ে দিয়েছেন বললে ভুল হবে, তিনি মূলত প্রতিবাদ করেছেন।

আমি ব্যক্তিগতভাবে এই প্রতিবাদকে সাধুবাদ জানাই। শওকত নামের ওই ব্যক্তি সাহস করে নিজের গাড়ি আগুন দিয়ে জালিয়ে দিতে পেরেছেন, কিন্তু আমি পারিনি। ট্রাফিক পুলিশের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আমারও একাধিকবার মনে হয়েছিলো, গাড়িটা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেই। আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতে পারিনি ঠিকই কিন্তু পারতপক্ষে আর বাইক না চালানোরই চেষ্টা করি।

আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো তাহলে আপনাদের সাথে শেয়ার করি। মটর সাইকেল কেনার পর কেরানীগঞ্জ বিআরটিএ-তে গেলাম ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য। নির্ধারিত ফর্ম ফিলআপ করে জমা দিলাম। এর সপ্তাহখানেক পরে এমসিকিউ পরীক্ষা ও ড্রাইভিং টেস্ট দেওয়ার পর লার্নার কার্ড পেলাম। বিআরটিএ থেকে বলল, আপাতত এটা ব্যবহার করে গাড়ি চালাতে পারবেন। মাস খানেক পর ড্রাইভিং লাইসেন্সের কার্ড নিয়ে যাবেন। তাদের কথামত লার্নার কার্ড দিয়ে আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম। একদিন ট্রাফিক পুলিশ দাড় করালো। লার্নার কার্ড দেখে বলল, আপনার তো ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। লার্নার কার্ড দিয়ে গাড়ি চালানো যাবে না। তারপর সে মামলা দিলো। এরপর বিআরটিএ তে গেলাম লাইসেন্সের কার্ড আনতে কিন্তু তারা কার্ড না দিয়ে অস্থায়ী অনুমতি পত্র দিলো; যার মেয়াদ ছয় মাস!

তারপর সেই কার্ড দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলাম। আর একদিন ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালো। অস্থায়ী অনুমতি পত্রটি নিয়ে দেখল আজই এটার লাস্ট ডেট। আগামীকাল থেকে ডেট বাড়িয়ে না নিলে এটা দিয়ে আর গাড়ি চালানো যাবে না। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল, এটার ডেট ওভার হয়ে গেছে; অতএব মামলা হবে! ট্রাফিক পুলিশ আমার কোনো কথাই শুনলেন না; আবারো মামলা দিয়ে দিলেন।

আর একদিনের কথা বলি। বাইকটা সার্ভিসিং এ দিয়েছিলাম। সার্ভিসিং প্রায় শেষ তখনও লুকিং গ্লাসগুলো লাগানো হয়নি। আমি সার্ভিসিং সেন্টারের লোকটাকে বললাম, ‘আমার ইমারজেন্সি বাসায় যাওয়া দরকার। আগে বাসা থেকে ঘুরে আসি তারপর লুকিং গ্লাস লাগিয়ে নিবো।’

এ কথা বলে আমি বাইক নিয়ে বাসায় যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে ট্রাফিক পুলিশ বাইক থামালো। বলল, লুকিং গ্লাস নাই কেন? আমি তাকে ব্যাপারটা খুলে বললাম। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ নাছোড়বান্দা! লুকিং গ্লাস না থাকার অপরাধে তিনি মামলা দিলেন।

এই হলো আমাদের ট্রাফিক পুলিশের অবস্থা। ট্রাফিক পুলিশদের মটর সাইকেল আর প্রাইভেট কারগুলোকে মামলা করার জন্য যতোটা উৎসাহি দেখা যায়, বাসের ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। যদিও ঢাকার রাস্তাঘাটে বাসগুলোই সবচেয়ে বেশি আইন ভঙ্গ করে। কিন্তু তারপরও ট্রাফিক পুলিশ সেদিকে বেখবর।

বন্ধ হোক ট্রাফিক পুলিশের এই অরাজকতা!

পঠিত : ২৪৬ বার

মন্তব্য: ০