Alapon

অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়



উনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বিজ্ঞান-ধর্ম আলোচনার তুঙ্গে পুরনো এক আলোচনা নতুন প্রাণ লাভ করে। বিজ্ঞানকে ধর্মের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে যুদ্ধপ্রস্তাব করতে থাকেন পণ্ডিতমহলের কেউ কেউ। এ ব্যাপারে সবচেয়ে প্রভাবশালী ছিলেন জন উইলিয়াম ড্রেপার এবং অ্যান্ড্রু ডিকসন হোয়াইট।
ড্রেপার The History of Conflict Between Religion and Science (1871) বইতে এই সংঘর্ষকে জোরালো করে তোলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গোঁড়া সেক্যুলারিস্ট ডিকসন হোয়াইট আরেকটি বই লিখেন A History of the Warfare of Science and Theology in Christendom (1896) শিরোনামে।
উভয়েই দেখাতে চেষ্টা করেন কিভাবে ধর্ম/ধার্মিক ব্যক্তিগণ যুগে যুগে বিজ্ঞান/প্রগতির বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ টানা হয় গ্যালিলিও ও চার্চদ্বন্দ্বের ঘটনাসহ আরও অনেক ঘটনা। [1]
ঐতিহাসিকভাবে নাস্তিকদের স্টেপল ফুড হলো এই ওয়ারফেয়ার থিসিস। শুধু অ্যাপোলজেটিক বই নয়; মুভি, থ্রিলার বইয়ের মাঝেও এগুলো ঢুকানো হয়েছে।
ড্যান ব্রাউন বিশ্বব্যাপী ব্যবসা করে যাচ্ছেন ওয়ারফেয়ার থিসিসের বয়ানকে ব্যবহার করে। সোনার বাংলায় এই কাজের আঞ্জাম দিয়েছেন অনেক লেখক। এদের মাঝে উল্লেখযোগ্য হলেন ড. জাফর ইকবাল, ড. হুমায়ুন আজাদ, অভিজিৎ রায় প্রমুখ।
যেমন ড. আজাদ তার এক গ্রন্থে বলেন :
"কিছু কিছু কপট মানুষ, বিশেষ ক'রে রাজনীতিবিদেরা ও সুবিধাবাদী বিখ্যাত ব্যক্তিরা, ব’লে থাকেন যে ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই; তবে এটা মিথ্যেকথা— ধর্ম ও বিজ্ঞান সম্পূর্ণরূপে পরস্পরবিরোধী : বিজ্ঞান সত্যের সাধক, আর ধর্ম মিথ্যের পূজারী।"
ড. আজাদের এই বক্তব্য মূলত ওয়ারফেয়ার থিসিসের প্রকাশ, তিনি মনে করেন বিশ্বাস থেকে কখনও জ্ঞানের বিকাশ ঘটে না, জ্ঞানের বিকাশ ঘটে নাকি অবিশ্বাস থেকে! উনার ভাবশিষ্যরাও স্বীয় বইতে একই আলোচনা টেনেছেন ধর্ম সম্পর্কে মানুষের মন বিষিয়ে তোলার জন্য।
কিন্তু এই চিত্র কতটুকু সঠিক ?
আসলেই কি ধর্মের সাথে বিজ্ঞান যুদ্ধে লিপ্ত ?
বর্তমান বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সূচনার ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় এই পদ্ধতির রূপরেখা কোনো নাস্তিক-ধর্মবিরোধীর আবিষ্কার নয়; বরং একজন মুসলিমের আবিষ্কার! [2]
না, এটা আমার বানানো কথা না, যার বই থেকে এই ঐতিহাসিক সত্য জেনেছি সে নিজেও নাস্তিক। তবে দেশীয় কুশীলদের চেয়ে কিছুটা সৎ মনে হয়েছে তাকে।
ঘটনাটা অল্প একটু বলি, কেমন?
মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর এই দুনিয়া ত্যাগের পর দীর্ঘ সময় মুসলিমরা বিশ্বের সুপার পাওয়ার হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। তাঁদের সুশাসন আস্বাদন করে জ্ঞানের ফল্গুধারা বয়ে গিয়েছিল ইতিহাসের সরোবরে।
.....৮ম-১৪শ শতকের মাঝে মুসলিম সাম্রাজ্যে ঘটে যায় এক অভূতপূর্ব জ্ঞানবিপ্লব। অনেকেই এই সময়কালকে 'গোল্ডেন এইজ অব ইসলামিক সাইন্স' বলে অভিহিত করেন। এই কয়েক শতাব্দীতে মুসলিমরা জ্ঞান ও বিজ্ঞানে যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি এবং উন্নতি লাভ করেছিলো, মানব ইতিহাসে তার দ্বিতীয় কোনো নজির পাওয়া যায় না। মরুভূমির শুষ্ক ও তপ্ত বালুতে জেগে উঠে, সুদূর স্পেন থেকে নিয়ে ভারতবর্ষ পর্যন্ত বিকশিত হওয়ায় ইসলামী সভ্যতা তখন অসংখ্য বৈচিত্রময় সংস্কৃতি, ধর্ম এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ঐতিহ্যের ধারকে পরিণত হয়।
.....পূর্ববর্তী সভ্যতাগুলোর অবদানগুলোকে একত্রিত ও সমন্বিত করে বিজ্ঞানচর্চার এক নব দিগন্তের সূচনা হয়। মুসলিম সাম্রাজ্য তখন নানা চিন্তার, নানা বৈশিষ্ট্যের অসংখ্য জ্ঞানী মানুষের এক মিলনমেলায় রূপ নেয়। [3]
গ্রিক চিন্তাবিদগণ মূলত থিওরিস্ট ছিলেন, স্বীয় অনুধাবন-অনুযায়ী কিছু ধারণা প্রকাশ করতেন। কিন্তু সেগুলোকে গবেষণা/পরীক্ষালব্ধ কোনো উপায়ে উপস্থাপনের উপায় জানা ছিল না কারও। ১০ম-১৪শ শতকের মুসলিম পণ্ডিতগণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ছক গড়ে তুলতে মূল ভূমিকা পালন করেন। তাঁদের মাঝে প্রথম যিনি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ধারণা যাচাই-বাছাইয়ের ছক আঁকেন, তিনি ছিলেন অপটিক্স-এর জনক হাসান ইবন-আল হাইসাম (965-1040 খ্রি.), একজন মুসলিম পণ্ডিত। বর্তমানে তাঁকে 'আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির জনক' হিসেবে গণ্য করা হয় সেক্যুলার অ্যাকাডেমিয়াতে।
আল খাওয়ারিজমের খাতে 'বীজগণিত' এর উন্নয়নের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল ইলমুল ফারায়েজ বা ইসলামি উত্তরাধিকার বন্টনের সমাধান। [4]
ইসলামি সভ্যতায় ব্যাপক জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোল, গোলীয় জ্যামিতি ও গোলীয় ত্রিকোণমিতি চর্চার মূল শুরুর উদ্দেশ্য ছিল : পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে কিবলা ঠিক করা, যে-কোনো স্থানে সালাতের সময় নির্ধারণ এবং ইসলামি ক্যালেন্ডার উদ্ভাবন! যেহেতু সে সময় নতুন নতুন এলাকা ইসলামি সভ্যতার অধীনে আসছিল। [5]
"আল্লাহ এমন কোনো রোগ সৃষ্টি করেননি, যার চিকিৎসা সৃষ্টি করেননি" — এই হাদীস মুসলিম চিকিৎসকদের উদ্বুদ্ধ করেছিল গবেষণায়, বিভিন্ন সভ্যতার চিকিৎসাবিদ্যা অনুবাদ ও বিশ্লেষণে। ইবনু নাফিস এই হাদীস দ্বারাই অনুপ্রাণিত হয়ে 'মানবদেহে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া' আবিষ্কার করেন ১২৪২ সালে, যেটার ক্রেডিট এখন নেন উইলিয়াম হার্ভে! [6]
ইমাম ফখরউদ্দিন রাযী রহ. তাঁর 'মাতালিব' কিতাবে ইসলামের কসমোলজি আলোচনা করেন, এরিস্টটলের পৃথিবী-কেন্দ্রিক মডেলের সমালোচনা করেন। এবং 'আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন' আয়াতের উপর ভিত্তি করেই 'মাল্টিভার্স' এর অস্তিত্বের ব্যাপারে আলোকপাত করেছেন!
এসবের পিছনে অবদান ছিল সেই আসমানি বাণীর, যা ইসলামকে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল জ্ঞান অর্জনকে আবশ্যিক করেছে!
আরব বিজ্ঞানী ও দার্শনিকগণ আসমানি বাণীতে সেই অনুপ্রেরণা খুঁজে পেয়েছিলেন, যার সাক্ষ্য দিয়েছেন সেক্যুলার গবেষকরাই। [7] ইসলামের কট্টর সমালোচক হার্টউইগ হার্শফেল্ড লিখেন :
|| "আল-কুরআনকে যে জ্ঞানের ঝরনার উৎসমুখ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এটা দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আকাশ-পৃথিবী থেকে শুরু করে মানবজীবন, ব্যাবসা-বাণিজ্য প্রভৃতির সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয় এখানে স্থান পেয়েছে। ফলে এই পবিত্র গ্রন্থের বিভিন্ন অংশের ব্যাখ্যা হিসেবে রচিত হয়েছে বিষয়ভিত্তিক অগণিত প্রবন্ধ-রচনা। এভাবে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ব্যাপক আলোচনা, এবং পরোক্ষভাবে মুসলিম বিশ্বে বিজ্ঞানের নানা শাখার বিস্ময়কর অগ্রগতির জন্য আল-কুরআনই দায়ী।" || [8]
পরবর্তীকালে হাসান ইবন-আল হাইসাম থেকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ধারণা গ্রহণ করেন ইউরোপের পণ্ডিত রজার বেকন। কিন্তু বড় আফসোসের ব্যাপার হলো— বেকন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আবিষ্কারের কৃতিত্ব হাসান ইবন-আল হাইসামকে না দিয়ে, পিটার পেরেগ্রিনাস নামের এক ফরাসি পণ্ডিতকে দিয়েছেন! কিন্তু কেন?
আমেরিকান সাহিত্যিক ব্রাডলি স্টিফেনস তাঁর Ibn al-Haytham : First Scientist বইয়ের শেষ অধ্যায়ে এর কারণ উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেন :
|| "বেকন পেরেগ্রিনাসকে ব্যক্তিগতভাবে জানতেন এবং তার কাজের ভূয়সী প্রশংসা করতেন। সে কারণেই হয়তো তিনি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির জনক হিসেবে ইবন আল-হাইসামের বদলে পেরেগ্রিনাসকে বেছে নিয়েছিলেন। আরেকটি কারণ হতে পারে যে, মুসলিম ও খ্রিষ্টানরা যখন জেরুজালেম ও সংলগ্ন এলাকার কর্তৃত্ব দখল নিয়ে ক্রুসেড যুদ্ধে লিপ্ত ছিল, সেসময় বেকন ও পেরেগ্রিনাস উভয়েই ছিলেন ধর্মপ্রাণ খ্রিষ্টানদের দলে। বেকন ছিলেন পাদরিদের কাতারে, আর পেরেগ্রিনাস তো এক ক্রুসেড যুদ্ধে মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াইতে অংশ নিয়েছিলেন। এসকল সংঘাতের প্রেক্ষিতে বেকন হয়তো ভেবেছিলেন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাথে মুসলিম পণ্ডিতের নাম জুড়ে দিলে খ্রিষ্টসমাজে এই পদ্ধতির গ্রহণযোগ্যতা মন্থর হয়ে পড়বে।" || [9]
আফসোস! যে মুসলিমদের হাত ধরে বিজ্ঞানের মশাল জ্বলে উঠলো, সেই আলো অন্যেরা সুকৌশলে সরিয়ে নিয়ে গেল! মানুষ জানতেই পারল না যে, মুসলিম সভ্যতার অবদানের কারণেই একসময় অন্ধকার ইউরোপে আসে নবজাগরণ বা রেনেসাঁ!
|| "পঞ্চাদশ শতক নয়, বরং মরুবাসী ও স্পেনের অধিবাসী আরবদের দ্বারা সংস্কৃতির পুনর্জাগরণের প্রভাবে প্রকৃত রেনেসাঁ সংঘটিত হয়েছিল। ইটালি নয়, বরং (মুসলিম) স্পেনই ছিল ইউরোপের নবজাগরণের জন্মস্থান স্বরূপ…।" || [10]
এখন প্রশ্ন হলো, কেন হাইসাম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চিন্তার ছক আঁকতে গেলেন ? তিনি কী ধর্ম বনাম বিজ্ঞান যুদ্ধতে জয়ী হওয়ার জন্য এমনটি করেছিলেন ? উত্তর হচ্ছে, না।
ব্রাডলি স্টিফেনস হাইসামের জীবনী আলোচনা করে দেখিয়েছেন, বৈজ্ঞানিক রূপরেখা আঁকার পিছে যে বাসনা চালিকাশক্তি হিসেবে ছিল তা হলো, স্রষ্টার নৈকট্য হাসিল করা!
সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও নানা আবিষ্কারের পেছনে 'ধর্ম বনাম বিজ্ঞান' এমন কোনো ন্যারেটিভ ছিল না; ছিল ধর্মীয় উৎসাহ, আসমানি গ্রন্থের অনুপ্রেরণা আর আল্লাহর কাছে যাওয়ার বাসনার মিশেল। সুতরাং ‘ধর্ম ও বিজ্ঞান সম্পূর্ণরূপে পরস্পরবিরোধী : বিজ্ঞান সত্যের সাধক আর ধর্ম মিথ্যের পূজারি’— এমন দাবি অন্য ধর্মের জন্য প্রযোজ্য হলেও হতে পারে, কিন্তু ইসলামের ক্ষেত্রে তা খাটে না।
আসলে ধর্ম ও বিজ্ঞানের সম্পর্কটা জটিল প্রকৃতির। বিজ্ঞানের সূচনাকালে ধর্মই বিজ্ঞানকে অনুপ্রাণিত করেছে। এমনকি ইউরোপে মুসলিমদের লেগেসি যখন রেনেসাঁ আনয়ন করে, তখন থেকে বহু বছর খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারীরা বিজ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তবে এমনটা নয় যে বিজ্ঞানের কোনো কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা দাঁড়াননি; কিন্তু এমন উদাহরণ কম।
তাই বর্তমানে অধিকাংশ বিজ্ঞান-ইতিহাসবিদ এই ওয়ারফেয়ার থিসিসের বয়ানকে বাতিল ঘোষণা করেছেন। [11]
নাস্তিক দার্শনিক মাইকেল রুজ অ্যাকাডেমিক আর্টিকেলে লিখে দেখিয়েছেন— এই ওয়ারফেয়ার থিসিস আসলে মিথ্যা! [12]
গবেষক মরিস ফিনোকিয়ারো- এর মতে, ওয়ারফেয়ার থিসিস মূলত ইতিহাসের সরলীকৃত, বিভ্রান্তিকর ও প্রপঞ্চময় উপস্থান! তিনি দেখেছেন, এই মিথ বহুল প্রচলিত; শুধু ড্রেপার, হোয়াইট নয়; বরং ভলতেয়ার, আইনস্টাইন, বার্ট্রান্ড রাসেল, কার্ল পপার সকলেই এই মিথে বিশ্বাস করেছিলেন! [13]
জন হপকিনস ইউনিভার্সিটির প্রফেসর লরেন্স এম. প্রিন্সিপে তার কোর্সবুকে এ বিষয়ে লিখেন :
|| "বিজ্ঞান বা বিজ্ঞান-ধর্ম বিষয়ক কোনো চিন্তাশীল ঐতিহাসিক এখন আর ওয়ারফেয়ার থিসিসকে সঠিক মনে করেন না। ..... এই ওয়ারফেয়ার থিসিসের জন্ম হয় ঊনবিংশ শতকের শেষের দিকে, বিশেষ করে দুজন মানুষের হাত ধরে— জন উইলিয়াম ড্রেপার ও অ্যানড্রু ডিকসন হোয়াইট । এই থিসিস উপস্থাপনের পেছনে এদের বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল; এবং বলাই বাহুল্য, তাঁদের কাজের ঐতিহাসিক ভিত্তি অনির্ভরযোগ্য।" || [14]
অর্থাৎ সেক্যুলারিজমের প্রসার ঘটাতেই ইতিহাসের বিকৃত উপস্থাপন করা হয়েছিলো। উনিশ শতক থেকে বলপ্রয়োগ ও রক্তের স্রোত দিয়ে রেইন অফ টেরর কায়েম করে সেক্যুলারিজমের ধ্বংসযাত্রা শুরু হয়েছিলো, বিশ-একুশ শতকে তা রক্তের মহাসাগরে পরিণত হয়েছে! যুদ্ধ, ডেমোসাইড প্রভৃতি মিলে বিশ-একুশ শতকের ইতিহাসের পাতা রক্তকান্নায় সিক্ত!
ইউনিভার্সিটি অফ ডেলাওয়ারের ফিজিক্স এন্ড অ্যাস্ট্রোনমির প্রফেসর স্টিফেন এম. বার এর ভাষায় :
|| "অনেকেই যেটাকে ধর্ম আর বিজ্ঞানের সংঘাত মনে করেন, তা আদতে ভিন্ন কিছু৷ এটা মূলত ধর্ম বনাম বস্তুবাদের দ্বন্দ্ব। বস্তুবাদ নিজেকে বৈজ্ঞানিক বলে জাহির করতে চায়, এমনকি একে প্রায়ই ‘বৈজ্ঞানিক বস্তুবাদ’ বলার চেষ্টা করা হয়৷ ..... কিন্তু একে বিজ্ঞানের অংশ বলা আদৌ যুক্তিসম্মত নয়৷" ||
যারা মূলত বিজ্ঞানকে ধর্ম বানিয়ে ফেলেছে, অথবা বস্তুবাদের বিশ্বাসকে বিজ্ঞানের মোড়ক দিয়ে বিকোতে চায়, তারাই কেবল ধর্ম-বিজ্ঞান যুদ্ধ দাঁড় করায়!
সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা যায়, অধিকাংশ বিজ্ঞানীই মনে করেন না যে— ধর্ম ও বিজ্ঞান সংঘাতে লিপ্ত! পৃথিবীর আটটি অঞ্চলের নয় হাজারের বেশি বিজ্ঞানীদের ওপর পরিচালিত গবেষণায় এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। [15]
যারা মূলত বিজ্ঞানকে ধর্ম বানিয়ে ফেলেছে অথবা বস্তুবাদের বিশ্বাসকে বিজ্ঞানের মোড়ক দিয়ে বিকোতে চায়, তারাই কেবল ধর্ম-বিজ্ঞান যুদ্ধ দাঁড় করায়!
Reference :
1. Karen Armstrong, The Case for GOD: What Religion Really Means; p. 247
2. Jim Al-Khalili, The House of Wisdom: How Arabic Science Saved Ancient Knowledge and Gave Us the Renaissance; chapter 11: The Psycisist (Penguin Publishing Group, 2011)
3. Firas Alkhateeb (2017), Lost Islamic History: Reclaiming Muslim Civilisation from the Past (UK: Hurst & Co., Revised-Updated Edition) p. 75
4. https://cutt.ly/AQRQ6SX
5. https://cutt.ly/7QRQ2WO
6. "Pulmonary Transit and Bodily Resurrection: The Inter action of Medicine, Philosophy and Religion in the Works of lbn al-Nafis (d. 1288)"
7. Jonathan Lyons, The House of Wisdom: How the Arabs Transformed Western Civilization; p. 81-83 (Bloomsbury Publishing, 2010)
8. Hartwig Hartwig, New researches into the composition and exegesis of the Qoran; p. 09 (London: Royal Asiatic Society, 1902)
9. Ertan Salik, Ibn al-Haytham: First Scientist. The Fountain Magazine, Issue 63, May 2018
10. Robert Briffault, The Making of Humanity; p. 188 (London, George Allen & Unwin Ltd., 1st published 1919)
11. https://cutt.ly/sQRQPFo
12. https://cutt.ly/OQRQVvs
13. Maurice A. Finocchiaro, The Trial of Galileo : Essential Documents; p. 2 (Hackett Publishing, 2014)
14. Lawrence M. Principe, Science and Religion; p. 7 (The Teaching Company, 2006)
15. https://cutt.ly/wQRQR6H
— • —
মূল আর্টিকেলঃ "ওয়ারফেয়ার থিসিস "
লেখক © ডাঃ রাফান আহমেদ
বইঃ অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়, সন্দীপন প্রকাশনী
[ ঈশৎ পরিমার্জিত ও পরিবর্তিত ]

পঠিত : ৩৭৪ বার

মন্তব্য: ০