Alapon

জালিমদের ব্যাপারে ইমাম আহমাদের অবস্থান



ইমাম আহমাদ বছরের পর বছর কারাগারে বন্দী। অপরাধ– আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আহর উপর অটল থাকা এবং মুতাযিলী ফিতনার বিরোধিতা করা। পর পর তিন খলিফার শাসনামল তাকে কারাগারেই কাটাতে হয়। তার সম্পর্কে তার ছাত্র ইমাম আবু দাউদ রহিমাহুল্লাহর একটি উক্তি এখানে উল্লেখ করি। ইমাম আবু দাউদ বলতেন, ‘আমাদের মধ্যে সবচেয়ে হাদিস জানে, ইমাম আহমাদ। তাই আল্লাহর রাসুল সম্পর্কেও সবচেয়ে বেশি জানে, ইমাম আহমাদ। তাই আমি আবু দাউদ আর কী করব? আমিও ইমাম আহমাদের মতো পোশাক পড়ি, চলি-ফিরি, খাই।’
একদা এক কারারক্ষী ইমাম আহমাদকে কারাগার থেকে বের করে তার পাহারা দেওয়ার স্থানে নিয়ে এল।
– ইমাম ইবনু হাম্বাল, এখানে বসুন
– ওহে কারারক্ষী, আমাকে এখানে কেন নিয়ে এলে?
– আমি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি হাদিস সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি।
– সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম.... কোন হাদিস সম্পর্কে তুমি জানতে চাচ্ছ?
– যালিম ও তার সহযোগীদের ব্যাপারে যে হাদিসটি রয়েছে সেটি। হাদিসটি কি সহিহ?
– যালিম ও তার সহযোগীদের সম্বন্ধে হাদিস তো অগণিত। তার মধ্যে একটি সহিহ হাদিস হলো:
(হাদিসটির সনদ বর্ণনা করার পর)
জাবির রদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
‘‘একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কা’ব বিন উজরাহকে বললেন, ‘আল্লাহ তোমাকে নির্বোধদের শাসনকাল থেকে আশ্রয় দিন।’ কা’ব বললেন, ‘নির্বোধদের শাসনকাল কী?’ তিনি বললেন, ‘আমার পরবর্তীকালে এক শ্রেণীর আমীর হবে; যারা আমার আদর্শে আদর্শবান হবে না এবং আমার পদ্ধতিও অবলম্বন করবে না। সুতরাং যারা তাদের মিথ্যাবাদিতা সত্ত্বেও তাদেরকে সত্যায়ন করবে এবং অত্যাচারে তাদেরকে সহযোগিতা করবে তারা আমার দলভুক্ত নয় এবং আমিও তাদের দলভুক্ত নই। তারা আমার ‘হাওয’ (কাওসারের) পানি পান করার জন্য উপস্থিত হতে পারবে না’।” [১]
কারারক্ষী কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর বলল,
– আমি কি যালিমের সহযোগী?
– না, তুমি যালিমের সহযোগী নও। যালিমের সহযোগী তো তারা, যারা তাদের চুল আঁচড়ে দেয়, তাদের সামনে খাবার পরিবেশন করে, তাদের জীবনচলার কাজে সহযোগিতা করে। ওহে কারারক্ষী, তুমি যালিমের সহযোগী নও, বরং তুমি নিজেই যালিমদের একজন.....। [২]
.
_______________________________
[১] আহমাদ, আল মুসনাদ, হাদিস: ১৪৪৪১
[২] ইবনুল কায়্যিম, মানাকিবুল ইমাম আহমাদ ১/৪৩১

~সাফওয়ান বিন বাশার

পঠিত : ৫৯১ বার

মন্তব্য: ০