Alapon

"ইসলাম কি সকল অ.মু.স.লি.ম.কে হ.ত্যা করে ফেলতে বলে??"



"ইসলাম কি সকল অ.মু.স.লি.ম.কে হ.ত্যা করে ফেলতে বলে??"


ইসলামের প্রতি কমন কয়েকটা অভিযোগের অন্যতম হচ্ছে যে ইসলাম নাকি সকল অমুসলিমকে হত্যা করার আদেশ দেয়। এর পেছেনে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করা হয় অনেকগুলো আয়াতকে। বিশেষত সুরা তা.ও.বার ০৫ নাম্বার আয়াত, সুরা বা.কা.রা ১৯১ নাম্বার আ.য়া.ত এবং সুরা নি.সা.র ৮৯ আ.য়া.তসহ এমন কতিপয় আয়াতে কারিমাকে। আমি ভবিষত্যে আয়াতগুলো নিয়ে সুন্দর এবং বিস্তারিত আলোচনা করবো ইন শা আল্লাহ। তবে আজকে ইসলাম অ.মু.স.লি.মদের সম্পর্কে কী ঘোষণা করে, এবং নেতৃত্ব কিংবা যু.দ্ধে.র ময়দানেও অমুসলিমদের সম্পর্কে ইসলামের, প্রিয় নবি স্বল্লাল্লাহু আলাইহি ও’সাল্লামের নির্দেশনা কী, সেগুলো কিছুটা তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নিরপরাধ মানব খু.ন সম্পর্কে ইসলামের অবস্থান :
ইসলামের মূলসূত্র আল-কুরআন। সে পবিত্র কুরআনে মানুষ হত্যা সম্পর্কে বলা হয়েছে; যে ব্যক্তি কোনো ব্যক্তিকে হ.ত্যা করে বিনা কারণে (অন্য প্রাণের তথা অন্য নিরপরাধ কোনো মানুষকে হ.ত্যার বিনিময় ব্যতীত, কিংবা তার দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠে কোন ফিতনা-ফাসাদ, স.ন্ত্রা.সী, বিশৃঙ্ক্ষলা বিস্তার ব্যতীত) তা হলে সে যেনো গোটা জগতের সমস্ত মানুষকে হ।ত্যা করার মতো জঘন্য কাজ করলো; আর যে ব্যক্তি কোনো মানুষকে রক্ষা করলো, তা হলে সে যেনো গোটা জগতের সমস্ত মানুষকে রক্ষা করলো।
নিরপরাধ অ.মু.স.লি.ম.কে হ.ত্যা.র পরিণাম :
রাসুলুল্লাহ( ﷺ ) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো কারণ ব্যতিত মু’আহিদ(ইস.লা.মি রাষ্ট্রে চুক্তিবদ্ধ অ.মু.স.লি.ম) কো্নো ব্যক্তিকে হ.ত্যা করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। [ সুনানে আবু দাউদ; জি.হা.দ অধ্যায়, হাদিস: ২৭৬০]
“ জান্নাতের ঘ্রাণ চল্লিশ বছরের পথের যে দূরত্ব, সে দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়। কিন্তু কেউ যদি কোনো চুক্তিবদ্ধ অমুসলিমকে হত্যা করে, তা হলে সে জান্নাতের গন্ধও পাবে না।” [বুখারী ৬৯১৪]
রাসুল ( ﷺ)-এর মামলা দানের হুঁশিয়ারী :
মদিনায় যখন রাসুল ( ﷺ) রাষ্ট্রনায়ক হলেন, তখন তিনি সবার স্বাধীনতা ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করেছেন। তিনি উদাত্ত কণ্ঠে ঘোষণা দিয়ে বলছিলেন—
"যদি কোনো মুসলিম কোনো অমুসলিম নাগরিকের ওপর নিপীড়ন চালায়, তার অধিকার খর্ব করে, তাকে কষ্ট দেয় এবং তার থেকে কোনো বস্তু বলপ্রয়গ করে নিয়ে যায়; তাহলে কিয়ামতের দিন আমি উক্ত মুসলিমের বিরুদ্ধে আল্লাহর আদালতে মামলা দায়ের করবো।” [ আবু দাঊদ : ৩০৫২]
যু.দ্ধের ময়দানে অ.মু.স.লিম হ.ত্যা করার বিধান :
মূতার যু.দ্ধের কথা সকলেই কমবেশ জানি। সে যু.দ্ধে রওনা হবার সময় রাসুলুল্লাহ ( ﷺ) মুসলিম বাহিনীকে যে নির্দেশ দেন, তা হলো—
"কোনো নারীকে হ.ত্যা করা যাবেনা, কোনো শিশুকে হ.ত্যা করা যাবেনা এবং বয়স্ক , যে যু.দ্ধ করার শক্তি-সামর্থ্য রাখেনা; এমন কাউকেও হ.ত্যা করা যাবেনা। শুধু তাই নয়। আল্লাহর রাসুল আরো নির্দেশ দিয়েছেন— কোনো গাছ যেনো তাঁর সৈনিকরা উপড়ে না ফেলে, কোনো খেজুর গাছ-ফল গাছও যেনো জ্বা.লিয়ে না দেয়। এবং কোনো বসত-ভিটেও যেনো নষ্ট না করে। [মুসলিম : ১৭৩১]
.
ভিন্নধর্মের উপাসনালয়ের বিষয়ে নির্দেশনা :
"... আমি তোমাদের কয়েকটি উপদেশ দিয়ে প্রেরণ করছি, যু/দ্ধক্ষেত্রে তোমরা বাড়াবাড়ি করবে না, ভীরুতা দেখাবে না, শ.ত্রু.পক্ষের কারো চেহারার বিকৃতি ঘটাবে না, কোনো শিশুকে হ/ত্যা করবে না, কোনো উপাসনালয়ও জ্বা.লিয়ে দেবে না এবং কোনো বৃক্ষও উৎপাটন করবে না।’' [মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক : ৯৪৩০]
.
যু.দ্ধে.র ময়দানে এমন মানবিক আর সুন্দর বিধান ইসলাম বিরোধী কোনো অপশক্তি ইসলামের আগ অবধি দিতে পেরেছে? ইদানীং যারা মানবিক সেজেছে তারাও কি এমন সুন্দর বিধান দেওয়া এবং তা বাস্তবায়ন করে আজ অবধি বিশ্ববাসীকে দেখাতে পেরেছে? অথচ ইসলাম তা পেরেছে। ইসলাম শত্রুর সাথে যু/দ্ধেও আদল-ইনসাফের নির্দেশ দিয়েছে।
অথচ আজকের বিশ্ব-সভ্যতার ধারকবাহক যারা, তারা তো প্রতিনিয়তই ফি.লি.স্তি.নে, সিরিয়ায়, ইরাকে আ.ফ.গানে কীভাবে থাকার ঘরবাড়ি, ফলফলাদি, শতবর্ষী বৃদ্ধ থেকে শুরু করে কোলের শিশু এবং গর্ভবতী নারীদেরকেও কী জঘন্য আর পৈশাচিকভাবে হত্যা করে, যা আমাদের নিত্যদিনই চোখের দেখা !

~রেদওয়ান রাওয়াহা
১২.১০.২১

পঠিত : ১২৮৯ বার

মন্তব্য: ০