Alapon

ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ এবং কিছু কথা...



আল্লাহ প্রদত্ত শরীয়াহ আমাদের জীবিত রাখে, পক্ষান্তরে মানব রচিত সংবিধান বিষতূল্য, যা তার অনুসারীদের জীবন কেড়ে নিয়ে মৃত বানিয়ে রাখে।

মানুষ যেমন অক্ষম, তাদের রচিত সংবিধান ও অক্ষম। তারা যেমন অজ্ঞ ও মূর্খ তাদের সংবিধান ও মূর্খতায় ভরপুর। এই সংবিধান এমন এক সংবিধান যেখানে প্রাধান্য পায় মনোবৃত্তি, স্বার্থপরতা ও অজ্ঞতার।

ধর্মনিরপেক্ষতা মানেই হল ধর্মহীনতা। যারা এই মতবাদকে বিশ্বাস করে আর বলে যে ইসলাম এই যুগের জন্য উপযুক্ত নয় তারা পথভ্রস্ট হয়ে গেছে সেক্যুলার নীতি অনুসরণ করার কারনে।

মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেছেন। যে দ্বীনের মাঝে খুজে পাওয়া যাবে সকল বিধি -বিধান , রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে সকল কিছু।
'আল্লাহ ছাড়া কোনো বিধানদাতা নেই ' [সূরা ইউসুফ ১২ঃ৪০]
সত্য স্পষ্ট যাওয়ার পর নিরপেক্ষতার ভাব ধরা ভণ্ডামি।
তারা মাঝখানে দোদুল্যমান, না এদিকে না ওদিকে,না ওদের দিকে, বস্তুত আল্লাহ যাকে পথভ্রস্ট করেন তুমি তার জন্য কখনো পথ পাবে না।
[সূরা আন নিসা - ৪ঃ ১৪৩ ]

এখন আপনি যদি সেই সকল বিধি বিধান কে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য অনুপযুক্ত মনে করেন তাহলে আপনি স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার দেয়া নীতিমালা কে অস্বীকার করলেন। আর যদি কোনো ব্যক্তি দ্বীনের কোন বিষয় অস্বীকার করলে সে মুরতাদ হয়ে যায়।

আজ সেক্যুলাররা আমাদের কে ওদের মানব রচিত নীতিমালা শেখায়। মুসলিম উম্মাহর অধিকাংশরাই মেনে নিতে শুরু করেছে। ধর্মনিরপেক্ষতা মতবাদটি এখন গুটি কয়েক দেশেই সীমাবদ্ধ নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে গেছে। যা কিনা আল্লাহর দ্বীনকে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় জানাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

যারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী তাদের কাছে প্রশ্ন, তারা কি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে? রাসূলগনের প্রতি বিশ্বাস রাখে? কুরআন মানুষকে দেখায় সহজ সরল পথ, এবং কুরআনের সকল বিষয় সত্য, তারা কি মেনে নেয়? যদি তারা মেনে নেয় তাহলে তাদেরকে অবশ্যই তাগুতকে বর্জন করতে হবে। কুরআন, সুন্নাহ, দ্বীন কে আকড়ে ধরতে হবে।
আল্লাহর নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য দীন ধর্ম বা জীবনবিধান হচ্ছে ইসলাম।’
[সূরা আলে ইমরান : ১৯]

অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যে ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো জীবনব্যবস্থা তালাশ বা অবলম্বন করবে, তার কাছ থেকে সেটি কোনোদিনই গ্রহণ করা হবে না। আর সে ব্যক্তি পরকালে হবে ব্যর্থ ও মহা ক্ষতিগ্রস্ত’।
[সূরা আলে ইমরান : ৮৫ ]

ইসলামের এ স্পষ্ট ঘোষণা থেকে দিবালোকের মতো উজ্জ্বল হয়ে যায় যে, ইসলামে থাকাবস্থায় মুসলিমদের পক্ষে আংশিক বা পূর্ণ ইসলাম ত্যাগ করার কোনো সুযোগ নেই। ধর্মকে একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় বানিয়ে রাখার অধিকারও নেই। ইসলামের পাশাপাশি অপর কোনো ধর্ম বা জীবনব্যবস্থা গ্রহণ করারও উপায় নেই। জীবনের কোনো ক্ষেত্রে কোনো পর্যায়ে ধর্মহীন হওয়ার অবকাশও নাই। মুসলমানদের কেবল মুসলমান হতে হবে, সেক্যুলার মুসলমান হওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।

ইসলামে নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত কোনো বিষয় যে প্রত্যাখ্যান করল, সে কাফের ও পথভ্রষ্ট, যদিও তার প্রত্যাখ্যান করা বিষয়ের পরিমাণ খুবকম ও সামান্য হয়। অতএব পার্থিব রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ইসলামের সকল বিধান যে প্রত্যাখ্যান করে, সে কাফের বলার অপেক্ষা রাখে না, যেমন সেকুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতার অনুসারীরা।

দ্বিতীয়ত ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদের অনুসারীদের মাঝে ইসলাম বিনষ্টকারী কারণও রয়েছে, যেমন তারা বিশ্বাস করে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ থেকে অন্য কারও আদর্শ উত্তম, অনুরূপ তার ফয়সালা থেকে অন্য কারও বিচার-ফয়সালা উত্তম। এ কারণেও তারা কাফের।

শায়খ আব্দুল আযীয ইবন বায রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “ইসলাম বিনষ্টকারী চতুর্থ প্রকারের অন্তর্ভুক্ত ঐ ব্যক্তি, যে বিশ্বাস করল মানুষের তৈরি আইনি সংস্থাগুলো ইসলামী শরীয়তের বিধান থেকে উত্তম, অথবা বিশ্বাস করল যে, বিংশ শতাব্দীতে ইসলামী বিধান বাস্তবায়ন করা যুক্তিসঙ্গত নয়, অথবা ইসলাম প্রগতির অন্তরায়, অথবা বলল ইসলাম শুধু ব্যক্তি ও তার রবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, মানুষের জীবনের অন্য কোনো অংশে প্রবেশ করার অধিকার ইসলামের নেই”।

- কাজী রবিউল হাসানাত

পঠিত : ২৭৯ বার

মন্তব্য: ০