Alapon

মুমিনের শেষ ঠিকানা...



নির্জন এক নিঝুম রাত...আকাশে হাজারো তারার মেলা।রূপোর থালার মত পূর্ণিমার চাঁদটা যেন আজ খুব আনন্দ করে তার রূপোলী শুভ্র কিরণ ছড়াচ্ছে...!আশেপাশের বকুল ফুলগুলো যেন আজ একটু বেশিই সুবাস ছড়াচ্ছে...চারপাশে বয়ে যাওয়া এক শীতল হাওয়া যেন পরিবেশটাকে আরো শান্ত করে তুলছে...!আশেপাশে সজীবতা ও মাটির এক মিষ্টি গন্ধ...আশেপাশের বেলীফুলের মোহ মোহ গন্ধে আর জোছনা ভরা রাতের নির্জনতায় মনটা আজ খুবই ভালো আব্দুল্লাহ সাহেবের।যানজট আর কোলাহলের এ ব্যাস্ত শহরে এমন এক রাত উপভোগ করা দুরূহও বটে!

'আজ খুব করে মনে পড়ছে আমাতুল্লাহকে!বেলীফুল তার ভারী পছন্দের ফুল ছিল।আমার স্বল্প উপার্জনের কারণে তাকে খুব দামী কিছু না দিতে পারলেও মাঝে মাঝে তার জন্য এক গোছা বেলীফুল এনে তার খোপায় বেঁধে দিতাম। সে যে এতেই খুব সন্তুষ্ট ছিল তা তার মিষ্টি মুখের মুচকি হাসি দেখলেই বোঝা যেত..!(১)আর আজকের মত এমনই এক জোছনা রাতে তার সাথে আমার প্রথম মনের ভাব হয়েছিল।পরনে লাল টুকটুকে শাড়ি,হাত-পা তার মেহেদী দিয়ে রাঙানো,চোখ দুটিতে ঘন কালো কাজলের প্রলেপ!ঠোঁট দুটো ছিল তার গোলাপ ফুলের পাপড়ির মত লালচে গোলাপি!সে তার দীর্ঘ পল্লব বিশিষ্ট চোখদুটিকে প্রসারিত করে সেদিন আমায় বলেছিল, "আজ আমরা অর্ধেক দ্বীন পূরণ করেছি।(২)আজ থেকে শুরু আমাদের সীরাতুল মুস্তাকিমের দিকে একসাথে এগিয়ে যাওয়া!আজ থেকে আমরা কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে প্রবলভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব ইন শা আল্লাহ!(৩) দুনিয়াকে প্রাধান্য না দিয়ে আখিরাতে দুজনে একসাথে জান্নাতে যাওয়ার স্বপ্ন বুনবো।জীবনে বিপদ-আপদের প্রতিটি অধ্যায়ে আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করে সবর করব।(৪)কেননা আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন(৫)! আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও জান্নাতে যাওয়া...!"

কথাগুলো শুনতে শুনতেই লক্ষ্য করলাম তার চোখে-মুখে উজ্জ্বলতার আভাস!একবুক আশা নিয়ে সে তাকিয়ে আছে আমার দিকে!তার হাস্যজ্জ্বল চেহারায় হঠাৎ করেই এক অজানা আবেগে দু'ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো,অশ্রুগুলো ভিজিয়ে দিল তার পাপড়িগুলোকে!সেদিন তার কথাগুলো আমাকে গভীরভাবে অভিভূত করেছিল..!কত মিষ্টি,প্রশান্তিময় ঈমানী চিন্তাচেতনা তার..!সেদিনই বুঝে গিয়েছিলাম সে আমার যোগ্য জীবনসঙ্গিনী..!এবং সেদিন থেকেই শুরু হয়েছিল আমাদের পথচলা...।'

ভাবছিলেন আব্দুল্লাহ সাহেব। মনের ভেতরকার স্মৃতির পাতাগুলো উল্টে পাল্টে দেখছিলেন কল্পনায়...।প্রিয়তমা আমাতুল্লাহর সাথে জিবনের কত রকম স্বপ্নই না বুনেছিলেন তিনি!আজ তার মনে পড়ছে জিবনের অতীত থেকে শুরু করে বর্তমানে ঘটে যাওয়া একেকটি অধ্যায় কিভাবে তিনি সবর করে পার করেছেন। দুনিয়াটা কতই না ক্ষণস্থায়ী! হাটিহাটি পা পা করে শুরু হয় মানুষের জীবন তারপর শৈশব থেকে কৈশোর,যৌবন পার করে মানুষ উপনীত হয় বৃদ্ধতে।আজ এমন এক জোছনা ভরা সুন্দর রাতে পাশে নেই তার প্রিয়তমা আমাতুল্লাহ!বিয়ের ৯ বছর পর এই তুচ্ছ দুনিয়া ছেড়ে সে চলে গিয়েছে আখিরাতের প্রথম ধাপ কবরে।আর আব্দুল্লাহ সাহেবের জন্য রেখে গেছেন তাদের সন্তান মুহাম্মাদ ও মুবাসশিরা কে।আজ তারাও শৈশব পার করে যৌবনে এসে পৌছেছে।আর এখন আব্দুল্লাহ সাহেব বার্ধক্যের নানা ব্যাধির ভারে জীবনের শেষ সময়ে এসে হাসপাতালের এক বিছানায় শুয়ে নিজের মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

আমাতুল্লাহ চলে যাওয়ার আগের দিন রাতে খুব মন খারাপ ছিল আমাতুল্লাহর।মুবাসশিরা তখনো পৃথিবীতে আসেনি তবে তার আগমনের সময় প্রায়ই হয়ে এসেছিল। ৭ বছর বয়সী মুহাম্মদকে ঘুম পাড়িয়ে সে বারান্দায় আমার কাছে এলো।সেদিন তাকে খুব মায়াবী লাগছিল।হটাৎ দেখি সে অশ্রুভেজা চোখ দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে! আমি কিছু জিজ্ঞেস করতে যাব আর তখনই সে বলতে লাগলো," আমি যদি মারা যাই তবে আপনি আল্লাহর উপর ভরসা করে সবর করবেন এবং ভাববেন এটা আল্লাহর তরফ হতে পরিক্ষা।(৬) আমাদের দুনিয়ায় বোনা স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন হওয়ার আগেই যদি আমার মৃত্যু হয় তবে আমায় ক্ষমা করে দিবেন। সে স্বপ্নগুলো নাহয় জান্নাতেই পূরণ হবে! দুজনের মধ্যে যদি আমি সবার আগে মারা যাই তাহলে মুহাম্মদ ও আমাদের অনাগত সন্তানের খেয়াল রাখবেন। তাদের দ্বীনদার সন্তান বানিয়ে বড় করবেন।আর আমার জন্য কখনই কষ্ট পাবেন না, পারলে দুআ করবেন। আমি জান্নাতী হলে জান্নাতে আপনার জন্য অপেক্ষা করতে থাকব,কেমন?"একথা বলে এক মিশ্র আবেগে অশ্রুভেজা চোখেই মুচকি হেসে কোনরকম নিজেকে আড়াল করে ওখান থেকে চলে গিয়েছিল সে।তার চোখ যে অশ্রুসিক্ত ছিল তা সে আমার থেকে আড়াল করার চেষ্টা করলেও প্রথম থেকেই আমি তা লক্ষ্য করেছিলাম।কেন জানিনা তার মায়াবী চেহারা দেখে সেদিন খুব দুআ করেছিলাম আমাদের ও আমাদের সন্তানদের জন্য।

কিন্তু...ঠিক পরের দিনই ছোট্ট মুবাসশিরাকে জন্ম দিতে গিয়ে আমার আমাতুল্লাহ মারা যায়। একথা ভাবতেই আব্দুল্লাহ সাহেবের বুকটা ফেঁটে যেতে চাইলো। চোখ দিয়ে অজস্র ধারায় অশ্রু টপটপ করে গড়িয়ে পড়তে লাগলো! আমাতুল্লাহর কথা মনে পড়লেই সিজদায় লুটিয়ে পড়ে কান্না করে দুআ করেন সবসময় আব্দুল্লাহ সাহেব। সেদিন তার বলে যাওয়া কথাগুলো যেন আজও তার কানে ভেসে আসে! আবারো মনে মনে ভাবতে থাকেন আব্দুল্লাহ সাহেব...হয়তো আমি তার কথা রাখতে পেরেছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক সংগ্রাম আর সবর করে আমার সন্তানদের দ্বীনদার(৭) বানিয়ে একা একাই বড় করেছি।সবসময় আল্লাহর পথে চলার চেষ্টা করেছি। এখন আমার দায়িত্ব শেষ। জানিনা আল্লাহর কাছে কতটুকু প্রিয় হতে পেরেছি। জানিনা আমাতুল্লাহ আর আমি পরকালে একসাথে জান্নাতে থাকতে পারব কিনা। জানিনা আমাতুল্লাহ তার বারযাখ জীবনে কেমন আছে, জান্নাতের সুসংবাদ পেয়ে ভাগ্যবতী হতে পেরেছে কিনা।

কত জানা-অজানা পাপ হয়তো জমে আছে আমার আমলনামায়। মাঝে মাঝে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে পাপী ব্যাক্তি মনে হয়। জেনে না জেনে কত ধরনের পাপ যে আমরা করেই যাচ্ছি তার দিকে আমাদের কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই! আমরা কেবলই ছুটে যাচ্ছি এ মিছে দুনিয়ার পিছে! আজকাল এ জাহেলিয়াত সমাজে পাপের মাত্রা এতটাই বেড়ে গেছে যে অনেকে তো কিছু পাপকে পাপ হিসেবেই দেখেনা। দেখে আধুনিকতা ও সংস্কৃতি হিসেবে! গীবত,মিথ্যা বলা,গালি দেওয়া,যিনা,বাদ্যযন্ত্র যুক্ত গান-বাজনা শোনা,বিধর্মীদের সংস্কৃতির অনুসরণ,সুদ,ঘুষ ইত্যাদি আরো নানা হারাম কাজ ও কবীরা গুনাহ(৮)তো আমাদের "Daily Routine" হয়ে উঠেছে! আজকাল এমন কোনো মজলিস পাওয়া দুস্কর যেখানে গীবত(৯) নেই! এ সমাজে এগুলো এড়িয়ে দ্বীন পালনে অটল থাকা জলন্ত কয়লা হাতে রাখার মত কঠিন(১০)হলেও মুমিন ব্যাক্তি ঠিকই এগুলোকে উপেক্ষা করে তার ঈমানের শক্তিতে দ্বীন পালনে অটল থাকতে পারবে। দ্বীন পালনে বাধা আসলে সবর করতে হবে।(১১) আমি তা পেরেছি কিনা জানিনা তবে যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। আল্লাহু আলম।

ভয় হয়! সংশয় হয়! যদি আমার ঈমানী মৃত্যু না হয়! যদি আল্লাহ আমার কোনো জানা কিংবা অজানা পাপের কারণে আমার উপর নারাজ হয়ে থাকেন! তাহলে তো আমি জাহান্নামে নিক্ষেপিত হবো!আমি যতই আমল করি না কেন আমার দয়াময় রব্বের অনুগ্রহ ছাড়া তো জান্নাতে যাওয়া অসম্ভব!(১৩) তাহলে কি আমি আমার আমাতুল্লাহর সাথে জান্নাতে যেতে পারবো না?! কিন্তু.. কিন্তু আল্লাহ যে আমাকে নিরাশ হতে নিষেধ করেছেন!(১২)তিনি তো অসীম দয়ালু। তিনি ক্ষমাশীল। তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। দয়াময় রব্ব আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি অবশ্যই আমাকে ফিরিয়ে দিবেন না ইন শা আল্লাহ।
"আল্লাহুম্মাগফিরলি! হে আল্লাহ,আমায় ক্ষমা করুন!"
আশা এবং নিরাশার মধ্যবর্তী এ কোন গোলকধাঁধায় ফেঁসে গিয়েছি আমি!

হে আল্লাহ,আমি যে আমার আমাতুল্লাহর সাথে জান্নাতে যেতে চাই! আমার মহান রব্বকে ভালোবেসে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চাই। আমি আল্লাহ ও রাসুলের(সা.) পরে যে আমার প্রিয়তমা আমাতুল্লাহকে সবথেকে বেশি ভালোবাসি! আমাদের মধ্যে এ ভালোবাসা যে স্বয়ং আল্লাহ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এটা যে রব্বের পক্ষ হতে দেওয়া এক প্রশান্তিময় ভালোবাসা!আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরকে ভালোবাসা কত যে মধুর তা কেবল একজন আল্লাহপ্রেমীর দ্বারাই বোঝা সম্ভব!(১৪)

রিমঝিম বৃষ্টির শব্দে হঠাৎ আব্দুল্লাহ সাহেবের ভাবনার ছেদ ঘটে! বৃষ্টি তার খুব প্রিয়। তার স্ত্রী আমাতুল্লাহর সাথে কত যে বৃষ্টিতে ভেজার সুন্নাহ পালন হয়েছে তার!(১৫) বৃষ্টি এলেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে যেত আমাতুল্লাহ।প্রায়ই তারা দুজনে ছাদে গিয়ে বৃষ্টিবিলাস করতেন আর একে অপরের জন্য গোপনে দুআ করতেন কারণ বৃষ্টি যে তৎক্ষনাৎ মহান রব্বের পক্ষ হতে আসে।(১৬)এসময় দুআও কবুল হয়।(১৭) আমাতুল্লাহ যাওয়ার পর একাই বৃষ্টিবিলাস করে আসছেন আব্দুল্লাহ সাহেব। আজও তিনি প্রিয়তমার জন্য দুআ করে যান গোপনে। কিন্তু হাসপাতালে শয্যাশায়ী হওয়ায় আজ তার বৃষ্টিতে ভেজা হলো না। তবে আব্দুল্লাহ সাহেব দমবার পাত্র নন।

দুআ করার সুযোগটা তিনি হাতছাড়া না করে রব্বের নিকট একটি দুআ করে বসেন-
"হে আমার রব্ব! দয়া করে আমাকে ঈমানী মৃত্যু দান করবেন। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ও আমার আমাতুল্লাহকে জান্নাতী হিসেবে কবুল করুন! আমি এবং আমার পরিবার যেন অনন্তকাল জান্নাতে থাকতে পারি! আমিন..।"

দুআটি করতে করতেই হঠাৎ তিনি দেখতে পেলেন তার সামনে কে যেন এগিয়ে আসছে তার দিকে! তাকে দেখেই কেন যেন আব্দুল্লাহ সাহেবের মুখ থেকে বেরিয়ে এলো একটি সুস্পষ্ট বাক্য!তার দুআ কি তবে এক্ষুণিই কবুল হতে যাচ্ছে? বাক্যটি পড়ার পর আব্দুল্লাহ সাহেবের চোখ বন্ধ হয়ে এলো।এক মুহূর্তের জন্য মনে পড়ে গেল তার জীবনের সকল অধ্যায়!

অতঃপর,নিরব নিথর দেহটি পড়ে রইলো হাসপাতালের বিছানার এক কোণে!মুখটি তার হাস্যোজ্জ্বল!হয়তো তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তার রব্ব,তার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন! মালাকুল মউত হয়তো জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে তার রুহুটাকে দেহ থেকে আলাদা করে জান্নাতে অপেক্ষারত তার প্রিয়তমা জীবনসঙ্গিনী আমাতুল্লাহর কাছে নিয়ে যাচ্ছে!তার জান্নাতে যাওয়ার স্বপ্ন পূরন হতে যাচ্ছে! আর সে যে বাক্যটি উচ্চারণ করছিল;সেটা মুমিনের চিরচেনা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বাক্যঃ "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ)......।"❤️

লেখাঃনাবিলা ইয়াসমিন।
????রেফারেন্স সমুহঃ
(১) অল্পতে তুষ্ট থাকাঃ-ইবনে মাজাহঃ ৪১৩৮
(২)বায়হাকী,৫৪৮৬
(৩)কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ সম্পর্কিত আয়াতঃ (৩:১০২), (৩:১৩২), (৩:১৭২),(৪:৫৯)
৪)আল্লাহর উপর ভরসাঃ (৩:১৫৯), (১৪:১৯), (২৫:৫৮), (৮:২), (৬৫:৩), (৩:১৬০)
(৫)সুরা আলে ইমরানঃ ১৪৬
(৬)আল্লাহর পরিক্ষা ও সবর সম্পর্কেঃ ২:১৫৫
(৭)মুসলিমঃ১৬৩১
(৮)সুরা নিসাঃ৩১
(৯) গীবতঃ মুসলিম ২৫৮৯,আবু দাউদ৪৮৭৪,৪৮৭৫,৪৮৭৮,৪৮৮০
(১০)তিরমিযি:২২৬০
(১১)কুরআন ৩:১৮৬
(১২)সুরা বাকারাহঃ২১৪,আলে ইমরানঃ১৩৯,আল জুমারঃ৫৩,কুরআন ৩৯:৫৩,১২:৮৭
(১৩)আল্লাহর রহমত ছাড়া জান্নাতে যাওয়া অসম্ভবঃসহিহ মুসলিমঃ ৬৮৫২
(১৪) আল্লাহর জন্য একে অপরকে ভালোবাসাঃ মুসলিম২৪২৭,মিশকাত হা/৫০০৬,বুখারী ৬৬০,১৪২৩,৬৮০৬
(১৫)মুসলিম ৮৯৮
(১৬)মুসলিমঃ৮৯৮
(১৭)আবু দাউদঃ২৫৪০

পঠিত : ৫২০ বার

মন্তব্য: ০