Alapon

পূর্ণিমা ধর্ষণকাণ্ডের নেপথ্যে...



সিরাজগঞ্জের পূর্ণিমা রাণী শীল। একটি বহুল আলোচিত নাম। ২০০১ সালে ৮ অক্টোবর পূর্ণিমার পরিবারের সাথে পানি গড়ানো নিয়ে প্রতিবেশীদের মারামারি হয়। সেসময় পূর্ণিমা বা তার পরিবারের কেউ আওয়ামীলীগ করে বলে জানা যায় না।

এই মারামারির খবর পত্রিকায় আসতেই বেবি মওদুদ ও শাহরিয়ার কবিররা ছুটে যায় পূর্ণিমাদের বাড়ি। প্রথমে প্রতিবেশীর সাথে মারামারির ঘটনাকে চাউর করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হিসেবে। কারণ এর অল্প ক'দিন আগেই ১ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াত জোট বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়।

তারা দাবি করে নতুন নির্বাচিত জোট দেশে কোনো হিন্দু রাখবে না। তাই পূর্ণিমাদের ওপর এই আক্রমণ। অথচ ঐ গ্রামে পূর্ণিমারা একাই হিন্দু নয়। আরো হিন্দু আছে। তাদের ওপর আক্রমণ হলো না কেন?

যাই হোক এর কয়েকদিন পর তারা এই বিষয়টাকে নিয়ে আরো খেলতে চায়। ঘটনার চারদিন পর তারা পূর্ণিমাকে গণধর্ষণ করেছে অভিযোগ আনে ও মামলা করে। যাদের সাথে মারামারি হয়েছে তাদের নামেই মামলা করে।

সারাদেশে বামাতি ও আওয়ামী মিডিয়াগুলো প্রচার করে যাদের সাথে পূর্ণিমাদের মারামারি হয়েছে তারা বিএনপি কর্মী। মূল কথা হলো পূর্ণিমারাও রাজনীতি করে না। অন্যদিকে পূর্ণিমাদের সাথে মারামারি করা প্রতিবেশীরাও রাজনীতি করে না।

কিন্তু দোষটা বিএনপির ওপর দিতে পূর্ণিমাদের আওয়ামীলীগ বানানো হলো আর প্রতিবেশীদের বানানো হলো বিএনপি। কাউকে তো আর যেন তেন ভাবে জামায়াত বানানো যায় না তবে বিএনপি বানানো যায়। তবে বছর খানেক পরে পূর্ণিমাদের ওপর হামলাকারীদের পরিচয় আর বিএনপি থাকে না। হয়ে যায় বিএনপি জামায়াতের কর্মী।

পূর্ণিমাকে আওয়ামী লীগ সাজাতে একটি অভিনব ঘটনার অবতারণা হয়। শাহরিয়ার কবিররা প্রথমে জানিয়েছেন,

//সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার দেলুয়া গ্রামের অনিল কুমার শীলের কিশোরী কন্যা পূর্ণিমা রানী শীল। অষ্টম সংসদ নির্বাচনের সময়টাতে ছিলেন হামিদা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। নির্বাচনের দিন দেলুয়া হাইস্কুল কেন্দ্রে যান তিনি।

সেখানে তাঁর গৃহশিক্ষক সাধন পোলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন। পূর্ণিমাকে দেখে সাধন অনুরোধ করেন বলেন, তিনি বাসায় খেতে যাবেন। তাই তিনি ফিরে আসার আগ পর্যন্ত যেন পূর্ণিমা একটু বসেন। পরে সাধন ফিরে আসলে পূর্ণিমা বাড়ির দিকে রওয়ানা দেন। পথে বিএনপির কর্মী ও সমর্থকরা তাকে শাসায়। সপ্তাহখানেক যেতে না যেতেই সেই শাসানোকে বাস্তবে রূপ দেয় বিএনপির সন্ত্রাসীরা। ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী অক্টোবর মাসের ৮ তারিখ রাতে পূর্ণিমার ওপর চালানো হয় বর্বরতম অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন।

রাতে জোরপূর্বক বাড়িতে ঢুকে পুরো পরিবারের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের চালায় বিএনপির সন্ত্রাসীরা। এক পর্যায়ে অনিল শীলের ছোট মেয়ে পূর্ণিমাকে নিপীড়ন করে তাঁরা। এত মানুষ দেখে পূর্নিমার মা সেদিন বলেছিলো, বাবারা, আমার মেয়েটা ছোট তোমরা একজন একজন করে ঘরে এসো, নয়তো মেয়েটি মরে যাবে।//

এখানে কিছু ভয়ংকর অসঙ্গতি আছে।

প্রথমত, পূর্ণিমা ভোটার নয়, তবে কেন সে ভোট কেন্দ্রে যাবে?

দ্বিতীয়ত, সে ভোট দেয়নি, তার জাল ভোট দেওয়ার ঘটনাও জানা যায় না।

তৃতীয়ত, বাংলাদেশে ভোটের পরিস্থিতি কী এতই স্বাভাবিক ও ছেলে খেলার বিষয় যে, সাধন একজন নাবালিকাকে পোলিং এজেন্ট বানাবে?

চতুর্থত, সাধনের খাবার বিরতিতে কিছুক্ষণের জন্য বসা পূর্ণিমা কী এমন কাজ করেছে যে, সাধনের প্রতি বিএনপির অভিযোগ নেই, সব অভিযোগ পূর্ণিমার বিরুদ্ধে?

পঞ্চমত, পূর্ণিমা বিভিন্ন স্থানে সাক্ষাতকারে বলেছে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে শ্মশানঘাটের পাশে একটি ক্ষেতে। তাহলে তার মায়ের এই কথার কী ব্যাখ্যা হবে?

মূলত কোন কিছু না ভেবে শাহরিয়ার কবির ও বেবি মওদুদ গং এই কাহিনী সাজায়। পরে যখন ঘরের মধ্যে হামলার প্রমাণ দেখাতে পারবে না তাই পরে শ্মশানঘাটের কাহিনী আসে। প্রতিবেশীদের মারামারি হয়েছে ঘরের বাইরে। তাদের ঘর হামলার শিকার হয়নি। তাই কাহিনী চেইঞ্জ করতে হয়েছে।

যাই হোক দুঃখজনক হলেও সত্য ১০ তারিখের পর থেকে পূর্ণিমা বেবি মওদূদের তত্ত্বাবধানে থাকে। তাকে নিয়ে ১৪ তারিখ হাসপাতালে গিয়ে ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে একটি দুঃখজনক রিপোর্ট আসে। তা কমেন্টে দেওয়া ডকুমেন্টারিতে উল্লেখ রয়েছে। ধর্ষণ প্রমাণ করার জন্য কী ভয়ংকর ষড়যন্ত্র ঘাদানিক করতে পারে তা আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না।

পঠিত : ১১৪০ বার

মন্তব্য: ১

২০২১-১০-১৯ ০৯:১৭

User
আহমেদ আফগানী

https://youtu.be/8Ha8qshNUkk?list=PLKKL2TuuVmFHguRuSiCGY19-9r8ojtU_p

submit