Alapon

বাংলাদেশের ক্রিকেটের সর্বনাশ করেছে খোদ ক্রিকেট বোর্ড...!



আজ বাংলাদেশে ক্রিকেট দলের বাঁচা মরার লড়াই। এই লড়াইটা যদি হতো সুপার সিক্সে ওঠার লড়াই অথবা সেমিফাইনালে ওঠার লড়াই তাহলে আজ নিশ্চয়ই সারা বাংলার মানুষের মতো আমিও উৎফুল্ল থাকতাম। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এটা বাংলাদেশের বিশ্বকাপের মূলপর্বে ওঠার বাঁচা-মরার লড়াই। আজ যদি বাংলাদেশ ওমানের কাছে হেরে যায়, তাহলে বাংলাদেশকে বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হবে। আর যদি জিতেও যায়, তারপরও বাংলাদেশকে ওমান আর স্কটল্যান্ডের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। কারণ, ওমানের রান রেট অনেক বেশি। তাই আজ যদি বাংলাদেশ ওমানকে পরাজিত করতে পারে, আর স্কটল্যান্ড পাপুয়া নিউ গিনির কাছে পরাজিত হয়, তাহলে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেক বেশি উজ্জল!

এই যে বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা লিখছি, এটা লিখতে আমার ভীষণ লজ্জা লাগছে। বাংলাদেশ এতোদিন ধরে ক্রিকেট খেলে এখন বিশ্বকাপের ‍চূড়ান্ত পর্বে খেলতে পারবে কিনা সেটা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। আর যদি চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছায়ও তাহলে কেমন গরীবি পারফরমেন্স বিশ্বকে উপহার দিবে, সেটা ভাবতেই এখনই আমার নাক কাটা যাচ্ছে!

বোধ করি গোটা জাতিরই নাক কাটা যাচ্ছে। আর এই নাক কাটার ব্যবস্থা কারা করেছে জানেন, খোদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড! বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখতে ক্রিকেট বোর্ড আয়োজন করল, একের পর এক সিরিজ। আর সেই সিরিজে স্পোর্টিং উইকেট ব্যতিরেখে বানানো হলো স্লো এবং টার্নিং উইকেট। যে উইকেটে কেবল বোলাররা সুবিধা পাবে আর ব্যাটসম্যানরা চাঁদ-তাঁরা দেখবে! আর ঘটেছেও তা-ই! নিউজিল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়াকে এমন উইকেটে সিরিজ হারিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বনাশের চূড়ান্ত করা হয়েছে। আর এ কথা খোদ সাকিব আল হাসানই বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এমন উইকেটে খেলা হলে, আমরা ব্যাটিং করাই ভুলে যাবো।’ আর খুব সম্ভবত বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ব্যাটিং করতেই ভুলে গেছে। আর আমাদের সৌম্য সরকার তো ক্রিকেট খেলাটাই ভুলে গেছেন। তিনি উইকেটে আসেন, তারপর আউট হয়ে বাতাসে ব্যাটিং প্রাকটিস করতে করতে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান। এই হলো আমাদের ক্রিকেটের অবস্থা!

জাতিগতভাবেই আমাদের শারীরিক ভাষা কখনোই স্ট্রং থাকে না। আর আমাদের ক্রিকেটাররা যেন আরও দুর্বল। স্কটল্যান্ডের মতো একটি দলের সাথে খেলতে গিয়েও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শারীরিক ভাষা ছিল দুর্বলদের মতো। তাদের ভিতর থেকে লড়াই করার স্পিডটাই হারিয়ে গেছে। এমনকি তারা যেন চ্যালেঞ্জ নিতেই ভুলে গেছে। স্কটল্যান্ডের ক্যাপ্টেন আর কোচ বাংলাদেশকে নিয়ে এভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করলো, অথচ মাহমুদুল্লাহরা তাদের ছুড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জটাই নিতে পারলো না। বরং মনে হলো, তারা ভয়ে কুঁকড়ে আছে।

আমি মাহমুদুল্লাহর শারীরিক ভাষা নিয়ে সেই প্রথম থেকেই আপত্তি করি। সে লড়াকু মানসিকতা রাখে না। ঝিমিয়ে পড়া, রুগ্ন রুগ্ন ভাব নিয়ে ক্যাপ্টেন্সি হয় না। বিরাট কোহলিকে আপনি যতোই অপছন্দ করেন, কিন্তু তার আগ্রাসী ক্যাপ্টেনসি ভারতের ক্রিকেট দলকে অনেকবেশি প্রেরণা যোগায়। আর সেই প্রেরণাটাই মাহমুদুল্লাহ ক্যাপ্টেন হিসেবে যোগাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। আশা করছি, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল খুব দ্রুতই নিজেদের ফিরে পাবে এবং সেরা খেলাটা বিশ্বকে উপহার দিবে।

পঠিত : ৩৮১ বার

মন্তব্য: ০