Alapon

একজন সফল ব্যক্তির গল্প...



কুয়েতে জন্মগ্রহণ করা ডক্টর আব্দুর রহমান আস-সুমাইত বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিসিন ও সার্জারিতে বি.এস করেন। অতঃপর উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে যান। ১৯৭৪ সালে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্রপিকাল ডিজিজের ওপর ডিপ্লোমা করেন। কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় (McGill University) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্টগ্রাজুয়েট সম্পন্ন করেন।

মাসে লক্ষাধিক টাকার বেতনে চাকরি করার সুযোগ ছিলো তাঁর সামনে। সুযোগ ছিলো ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডের নাগরিক হবার, মানুষের স্বপ্নের দেশগুলোর যেকোনো একটিতে সম্মানজনক ডাক্তার হিশেবে বসবাস করার। মানুষ বর্তমানে কতো চেষ্টা করে IELTS, GRE, GMAT দিয়ে বিদেশ যেতে চায়। স্বপ্নের দেশগুলোতে যেতে চায়। আব্দুর রহমান আস-সুমাইত সেসব দেশে গিয়ে পড়াশোনা করেন।

১৯৭২ সালে তিনি ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করছেন। তখন শুনতে পেলেন তাঁর এক বন্ধু একটি কনফারেন্সে গেলো। সেই কনফারেন্সে ইউরোপের খ্রিস্টান নেতৃবৃন্দ একত্রিত হয়েছে ‘আফ্রিকা মিশন’ নামে। তারা পরিকল্পনা করলো আগামী ১৮ বছর তারা আফ্রিকায় মিশনারীর কাজ করবে, পুরো আফ্রিকাকে প্রায় শতোভাগ খ্রিস্টান জনসংখ্যায় পরিণত করবে।

আফ্রিকা বর্তমানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম। আফ্রিকা একসময় ছিলো খনিজ সম্পদে ভরপুর। সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর অন্যতম আকর্ষণ ছিলো এই আফ্রিকা। আফ্রিকায় নিজেদের কলোনি স্থাপন করে তারা সেখানকার রক্ত শুষে খেয়েছে, মানুষকে বানিয়েছে দাস। টান্স-আটলান্টিক দাসপ্রথা যার অন্যতম উদাহরণ। সেই আফ্রিকার অবস্থা জরাজীর্ণ। সেখানকার মানুষ খাদ্যাভাবে, চিকিৎসাভাবে মারা যাচ্ছে। পরিবারগুলো ছেলেমেয়েদেরকে পড়ালেখা করাতে পারছে না।

আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির শিকার হয়ে কিভাবে মানুষ তার ধর্মত্যাগ করে, সেই প্রেক্ষাপটে কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘মৃত্যুক্ষুধা’। আফ্রিকার মানুষের অবস্থা তেমন। মিশনারীগুলো সেখানকার মানুষদের খাদ্যাভাব দূর করে, বিনিময়ে তাদেরকে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। গিভ অ্যান্ড টেক রিলেশন।

ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইত ইংল্যান্ডে পড়াশোনাকালীন সময়ে মিশনারীদের পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। পড়াশোনা শেষে তিনি তাঁর স্ত্রীকে বললেন যে, তিনি চান তাঁর ক্যারিয়ার পূর্ব-এশিয়ায় শুরু করতে। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো হলো- চীন, হংকং, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া। এসব দেশে ইসলামের প্রচার-প্রসার তেমন নেই। আব্দুর রহমান আস-সুমাইতের ইচ্ছে ছিলো সেসব দেশে ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি দাওয়াতের কাজ করবেন।

তিনি তাঁর নিজ দেশ কুয়েতে ফিরেন। ঘটনাক্রমে কুয়েতের আমিরের স্ত্রীর সাথে তাঁর দেখা হয়। তিনি চান, আফ্রিকায় তাঁর নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করতে; এক্ষেত্রে ডাক্তারের সরাসরি তত্ত্বাবধান কামনা করছেন। ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইত প্রস্তাবে রাজী হোন। কুয়েতের আমিরের স্ত্রীর অর্থায়নে একটি মসজিদ নির্মাণে পাড়ি জমান আফ্রিকায়।
মসজিদ নির্মাণ করতে গিয়ে তিনি আফ্রিকার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। আফ্রিকার মুসলিমদের অবস্থা দেখে তিনি যেনো নিজের দুচোখকে বিশ্বাস করতে পারছেন না!

তিনি দেখতে পান:
অনেক মুসলিম কিভাবে নামাজ পড়তে হয় জানে না, কিভাবে ওজু করতে হয় জানে না।
তারা নামে মুসলিম, কিন্তু তারা সূর্যের উপাসনা, তারকার উপাসনা করে!
মসজিদের ইমাম মসজিদের মধ্যে যিনায় লিপ্ত!
চারিদিকে শিরক বিদআতের ছড়াছড়ি।
আফ্রিকার মুসলিমরা অর্থাভাবে আছে। সেই দূর্বলতায় খ্রিস্টান মিশনারী আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে তাদেরকে খ্রিস্টান বানাচ্ছে।

আফ্রিকার মুসলিমরা পড়ালেখায় অনেক পিছিয়ে। ফলে, আফ্রিকার নীতিনির্ধারক যারা হচ্ছে, যারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, এমপি-মন্ত্রী হচ্ছে, তাদের বেশিরভাগই খ্রিস্টান। মুসলিমরা আর্থিকভাবে যেমন পিছিয়ে পড়ছে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবেও তেমন পিছিয়ে পড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে আফ্রিকার মুসলিমদের অবস্থা চরম শোচনীয়! আফ্রিকার মুসলিমরা ইসলাম ত্যাগের দ্বারপ্রান্তে।

আব্দুর রহমান আস-সুমাইত আফ্রিকায় গিয়েছিলেন কয়েক মাসের সফরে। কিন্তু, আফ্রিকার এমন অবস্থা দেখে তিনি চিন্তায় পড়ে গেলেন। কিয়ামতের দিন যদি তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, মুসলিমদের এমন শোচনীয় অবস্থা দেখে তিনি কেনো পালিয়ে গেলেন? তিনি কেনো বেটার লাইফস্টাইলের আশায় মানুষকে ঈমানহারা হতে দেখেও চলে যান উন্নত দেশে? এসব চিন্তা তাঁর মাথায় ঝেঁকে বসে।
তিনি স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করেন- “আমাদের তো যাবার কথা ছিলো পূর্ব-এশিয়ায়, এই অবস্থায় আমরা কী করবো?”
তাঁর স্ত্রী জবাব দেন:
“এটা হয়তো আল্লাহরই পরিকল্পনা। মসজিদ প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদেরকে আফ্রিকায় নিয়ে এসেছেন, যাতে আমরা আফ্রিকার অবস্থা দেখতে পারি। আপনি চিন্তা করবেন না, আমি চাই না বিলাসী জীবন। আমি আফ্রিকায়ই থাকতে চাই।”

এই বলে উম্মে সুহাইব (আব্দুর রহমানের স্ত্রী) নিজের স্বর্ণালঙ্কার স্বামীকে দিয়ে বলেন, “এগুলো দিয়ে দাওয়াতের কাজ শুরু করেন। জান্নাতে গেলে আমি এমনিতেই স্বর্ণালঙ্কার পাবো। দুনিয়ার স্বর্ণালঙ্কার আমি জান্নাতের জন্য বিনিয়োগ করলাম।”

একটি মসজিদ স্থাপনের জন্য আসা ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইত তাঁর ঈর্ষণীয় ক্যারিয়ার পেছনে ফেলে বসবাস শুরু করলেন আফ্রিকায়। আফ্রিকার মানুষের কল্যাণে প্রতিষ্ঠা করেন ‘African Muslim Agency’। বৈদেশিক ত্রাণ আফ্রিকার অভাবী মানুষের হাতেনাতে পৌঁছে দেবার জন্য গঠন করেন আরো কয়েকটি সংগঠন।

আফ্রিকার এক দেশ থেকে আরেক দেশে, এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে পায়ে হেঁটে, সাঁতার কেটে, গাড়িতে চড়ে দাওয়াতের জন্য সফর করেন। এমনও দিন অতিবাহিত হয়েছে, যখন তাঁর খাওয়ার জন্য পানি ছাড়া কিছুই ছিলো না। মানুষের মলমূত্র ফেলা হয়, এরকম পুকুর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করে খেতে হয়েছে মাঝেমধ্যে। বেশ কয়েকবার তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। দুইবার তিনি জেলেবন্দী হোন। তবুও তিনি দমে যাননি।

একবার একটি গ্রামে প্রবেশ করতে চাইলেন। সেখানকার অধিবাসীরা ছিলো খ্রিস্টান। দাওয়াতের জন্য সেই গ্রামে তাঁকে ঢুকতে দেয়া হবে না। তারা শর্ত দিলো- আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, আল্লাহ যেনো আমাদের গ্রামে বৃষ্টি দেন। এই গ্রামে গতো ৩-৪ বছর ধরে বৃষ্টি হয় না। আপনার দু’আয় যদি বৃষ্টি হয়, তবেই আমরা ইসলাম গ্রহণ করবো। নতুবা আপনার এই ইসলামের কোনো দরকার নেই। আপনি ভাগেন।

ডাক্তার আব্দুর রহমান বললেন, “এটা তো আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। আমি দু’আ করলেই আল্লাহ বৃষ্টি দিবেন, এমন কোনো নিশ্চয়তা তো আমি দিতে পারি না।”
লোকজন তাঁকে জোরাজুরি করলো। একবার দু’আ করেই দেখেন। যদি আপনার দু’আয় কাজ হয়, তাহলে তো আমরা ইসলাম গ্রহণ করবো।
তিনি তাঁর সঙ্গীদের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন। তারাও পরামর্শ দিলো, আপনি একবার দু’আ করেন।

আব্দুর রহমান আস-সুমাইত হাত তুললেন। তিনি বলেন: “আমি হাত তুলে দু’আ করতে লাগলাম। আমার মনের আকুতি মিশিয়ে আল্লাহর কাছে যতোটা নত হওয়া যায়, কান্না করতে লাগলাম। আমার মনে হলো আমার সমস্ত চোখের পানি ছেড়ে দিই! আমি কাঁদতেই থাকলাম, কাঁদতেই থাকলাম। আমি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করলাম-
‘হে আল্লাহ! আমার পাপের জন্য আপনি আপনার বান্দাদের এমন সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হতে দিয়েন না। আমার পাপ যেনো তাদের ইসলাম গ্রহণে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। হে আল্লাহ, আপনি বৃষ্টিবর্ষণ করুন।’

আমি দু’আ করতে করতে আকাশের দিকে তাকালাম। অবাক হয়ে লক্ষ করলাম আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতে শুরু করেছে, মেঘের গর্জন শুনা যাচ্ছে। অতঃপর ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। এমন বৃষ্টি হলো, আফ্রিকার মানুষ তাদের জীবনে এভাবে মুষলধারে বৃষ্টি দেখেনি। গ্রামবাসী তাদের কথা রাখলো। পুরো গ্রাম ইসলাম গ্রহণ করলো।”

আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইতের উদ্যোগে এমনসব কাজ হয়, যেগুলো রাষ্ট্রীয় উদ্যোগেও হবার চিন্তা করা দুঃসাধ্য। পুরো আফ্রিকাজুড়ে ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইত যা করেন:
৯৫০০ টি এতিমখানা স্থাপন করেন।
৯৫,০০০ শিক্ষার্থীর পড়ালেখার জন্য বৃত্তি প্রদান করেন।
৫,৭০০ টি মসজিদ স্থাপন করেন।
নারীদের জন্য ২০০ টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেন।
৮৬০ টি স্কুল স্থাপন করেন।
১০২ টি ইসলামিক সেন্টার স্থাপন করেন।
তানজেনিয়া, জানজিবার, কেনিয়ায় ৪ টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন।
পানি সঙ্কট নিরসনে ৯৫০০ টি কূপ খনন করেন।
৫ কোটি ১০ লক্ষ কুরআন বিতরণ করেন।
ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইতের সঙ্গীদের তথ্যমতে, তাঁর কল্যাণে আফ্রিকার ১ কোটির বেশি মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে।

আফ্রিকায় এক কুটির ঘরে রাতের বেলা। আব্দুর রহমান বসে আছেন স্ত্রীর পাশে। উম্মে সুহাইবকে বেশ ক্লান্ত মনে হচ্ছে। সারাদিনের পরিশ্রম শেষে শরীর জুড়ে অবসাদের ছাপ। আব্দুর রহমান আস-সুমাইত জিজ্ঞেস করলেন, “ও উম্মে সুহাইব, তোমাকে তো বেশ ক্লান্ত দেখাচ্ছে? তোমার কষ্ট হচ্ছে? তুমি কি হাল ছেড়ে দিয়েছো?”
উম্মে সুহাইব হাসলেন। তিনি ভাবছেন কী আর তাঁর স্বামী জিজ্ঞেস করছেন কী? তিনি বললেন,
“ও আবু সুহাইব! আমি এখন কী ভাবছি জানো?”
“তুমি না বললে জানবো কিভাবে!?”
“আমি ভাবছি, আল্লাহ যদি আমাকে জান্নাত দান করেন, আমি আজ যতোটা খুশি আছি, জান্নাত লাভের পর কি তারচেয়েও বেশি খুশি হবো?”
স্বামী-স্ত্রী নিজেদের পুরো জীবন এমনভাবে দ্বীনের খেদমতে কাজে লাগাত, দুনিয়ায় থাকাবস্থায় তারা জান্নাতের স্বাদ পাচ্ছেন! তারা ভেবে পাচ্ছেন না, তারা এতো সুখে আছেন, জান্নাত পেলে কি তারচেয়েও বেশি খুশি হবেন!

আব্দুর রহমান আস-সুমাইত শুধুমাত্র মুখে মুখে দাওয়াত দেননি। তিনি মানুষের অভাব বুঝতে পারেন, মানুষের চাহিদা বুঝতে পারেন। সেই অনুযায়ী নেমে যান দাওয়াতে। মানুষের খ্যাদ্যাভাব দূর করার জন্য উদ্যোগ নেন, চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, শিক্ষার সুযোগ তৈরি করেন। আফ্রিকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যেনো ভবিষ্যতে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে, ভবিষ্যতে যাতে তারা জাতির কর্ণধার হতে পারে, সেজন্য স্থাপন করেন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। ধর্মীয় অজ্ঞতা দূর করার জন্য স্থাপন করেন মসজিদ, মক্তব, মাদ্রাসা।

নিজের জীবনটা কাটিয়ে দেন আফ্রিকায়। নিজের মেয়ের বিয়ের সময় এমন একজন পাত্রের হাতে মেয়েকে তুলে দেন, যে স্ত্রীসহ আফ্রিকায় বসবাস করতে ইচ্ছুক। আফ্রিকার মুসলিমদের দুর্দশা দূরীকরণে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যান তাঁর নিজের পরিবার।
এতো কিছু করতে গিয়ে নিজের শরীরের দিকে খেয়াল করার সময় তাঁর ছিলো না। আস্তে আস্তে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিকিৎসার জন্য যান।

১৫ আগস্ট ২০১৩। ৬৬ বছর বয়সে ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাহিমাহুল্লাহ। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও উন্নত জীবনযাপনের আশায় তিনি স্রোতের অনুকূলে হাঁটেননি। পুরো জীবনটা বিলিয়ে দেন আল্লাহর রাস্তায়।
ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইতের পুরো জীবনের গল্প পড়ে মনে পড়ে কুরআনের একটি আয়াত। আল্লাহ বলেন:
“মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিজেকে বিলিয়ে দেয়। আর আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি স্নেহশীল।” [সূরা বাকারা ২: ২০৭]

ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইতের ইন্তেকালের পরের ঘটনা। কুয়েতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে একটি কনফারেন্স হয়। সেই কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন পূর্ব-আফ্রিকার দেশ মালাউই এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কনফারেন্স শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, “আব্দুর রহমান আস-সুমাইতের কবর কোথায়?”

পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে কবর দেখানো হলে তিনি যিয়ারত করেন। একজন কৌতুহল দমিয়ে রাখতে না পেরে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি একটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আপনি কেনো এই দেশের একজন সাধারণ ডাক্তারের খোঁজ নিয়ে তাঁর কবর যিয়ারতে যাচ্ছেন?”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জবাব দিলেন:
“আমি ছিলাম একজন এতিম বালক। ডাক্তার আব্দুর রহমান আস-সুমাইত আমার পড়ালেখার ব্যবস্থা করেন। সেদিন যদি তিনি আমাকে টেনে নিয়ে স্কুলে ভর্তি না করতেন, তাহলে আজকে আমি এখানে আসতে পারতাম না!”

- আরিফুল ইসলাম

পঠিত : ৩৭১ বার

মন্তব্য: ০