Alapon

জামায়াত ইসলামির স্ট্যাবিলিশমেন্ট নিয়ে দুটি কথা...



জামায়াত ইসলামির স্ট্যাবিশমেন্ট সম্পর্কে ধারণা পেতে আপনাদের উদ্দেশ্যে দুটো কথা বলি।

আমার চাচ্চু আবদুল বাসেত মারজাত ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। এবং তিনি বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করেন।

এরপর জল অনেক গড়িয়েছে। চাচ্চু এখন এবি পার্টিতে যোগদান করেছেন। তিনি এবি পার্টির রংপুর অঞ্চলের নেতা। এখন প্রশ্ন হল, এবার এবি পার্টির প্রার্থী হিসেবে আবদুল বাসেত মারজান যদি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন করে, তাহলে কি পূর্বের ন্যায় রেকর্ডসংখ্যক ভোট নিয়ে বিজয় লাভ করবে?

বিজয় তো দূরকি বাত! চাচ্চু, তার আপন আত্মিয়-স্বজনদেরই ভোট পাবেন না। আমার আব্বা উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির। আমার বিশ্বাস, আব্বার মাথায় কেউ যদি পিস্তল ঢেকিয়েও বলে, জামায়াতের প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে আপনার আপন ভাইকে ভোট দিন! তারপরও আব্বা চাচ্চুকে ভোট দিবেন না।

আম্মা জামায়াতের রুকন নন; কিন্তু সংগঠনকে ভীষণ মহব্বত করেন। শুধু এই মহব্বতের জেরেই আম্মাও জামায়াতের প্রার্থী ব্যতিরেখে নিজের দেবরকে ভোট দিবেন না; যিনি এবি পার্টির প্রার্থী!

আব্বা যখন আম্মাকে বিয়ে করেন, তখন নানাবাড়ির কেউই জামায়াত সম্পর্কে তেমন কিছু জানতেন না। শুধু এতোটুকু জানতেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। এরপর আব্বা নানাবাড়ির মানুষদের একে একে সংগঠন সম্পর্কে ধারণা দিতে লাগলেন। একপর্যায়ে নানাবাড়ির সকলে সংগঠনমনা হলেন। নানাবাড়ির কেউই সংগঠনে খুব বেশি একটিভ না হলেও, সংগঠনের খেদমতে তারা প্রাণ উজাড় করে দিতেন। নানী প্রায়ই শিবিরের দায়িত্বশীলদের দাওয়াত করে খাওয়াতেন।

সংগঠন সম্পর্কে সামান্য ধারণা পাওয়া নানাবাড়ির মানুষগুলোও চাচ্চুকে ভোট দিবে না; কারণ তিনি জামায়াতের প্রাথী নন। বুঝ হবার পর থেকে দেখছি, ইউপি ভোট আসলেই নানা আম্মার থেকে জেনে নিতেন, সংগঠন কাদের কাদের সমর্থন দিয়েছে। আর যখন শুনতেন, সংগঠন কাউকেই সমর্থন দেয়নি, তখন ভোটই দিতে যেতেন না।

এটাই হল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির স্ট্যাবিলিশমেন্ট। এই স্ট্যাবিলিশমেন্টের বিরুদ্ধে যারাই দাড়িয়েছে, তারাই বিলীণ হয়ে গেছে।

পঠিত : ৫৮৭ বার

মন্তব্য: ০