Alapon

"ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু ভাইয়ের প্রতি খোলা চিঠি "




হে প্রিয় ভাই!
যে শিখিয়েছে আল্লাহর কাছে ইসলাম ছাড়া অন্যকোনো মতবাদ গ্রহণযোগ্য নয়, যে শিখিয়েছে ইন্না সালাতি ও নূসুকি....

অত:পর সে-ই যখন বলে, ধর্মের সাথে রাষ্ট্রের সম্পর্ক নেই। যখন বলে আমরা ধর্মের প্রতিষ্ঠার জন্য আসিনি। আমরা কোনো ধর্মীয় দল নই। সে তিনিই যখন দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বলেন মতবাদ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন!

প্রিয় ভাই!
যিনি শপথ দিয়েছেন ইসলামই কালজয়ী জীবন বিধান..., তিনিই যখন সে পথ থেকে সরে যান। তিনিই যখন তার দেওয়া শপথগুলোকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেন, তখন প্রিয় ভাই, কলিজা হতে রক্ত ঝরে। বুক ফেটে কান্না আসে।

শ্রদ্ধেয় ভাইয়া!
আমি জানি, জামায়াত শিবিরে অসংখ্য বেয়াদব আছে। চরম অহংকারী উগ্র ছেলেপেলে আছে। জানি, অন্যকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার মতো মন এবং আচরণের অধিকারী সর্বোচ্চ শপথের কর্মীও আছে, তাদের সেই নির্মম ও তিক্ত আচরণের শিকার আপনিও হয়েছেন। আপনার মতো অসংখ্য কেন্দ্রীয় নেতা বা সভাপতিরাও হয়েছে। অনেক আলিম ওলামাকেও তাদের বাজে ব্যবহারে বীণে বিদ্ধ হতে হয়েছে। নিয়মিতই হয়।
কিন্তু তবুও প্রিয় ভাই, দ্বীনের সাথে, সেকুলারিজমের সাথে চূড়ান্ত সমঝোতার প্রশ্নই আসেনা।

প্রয়োজন হলে আপনি অন্য আরেকটি ইসলামি দলে গড়ুন। অন্য আরেকটি ইসলামি সংগঠনে যান। প্রয়োজন হলে সামাজিক কার্যক্রম করুন। শিক্ষা সাহিত্য সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ুন। গণতন্ত্রের রাজনীতিই যে সব, তা তো না।
আপনি ছিলেন একটি ইসলামি সংগঠনের প্রধান সিপাহসালার। আপনি অনেকের আদর্শ ছিলেন। আপনার কারণেই হয়তো এখন অনেকে খিলাফতের চিন্তা বাদ দেবে। আপনার কারণেই সেকুলারিজমকে ইসলামিকরণ করবে। ইতোমধ্যে অনেকেই আপনার দেখাদেখি করছেনও...

আমরা দ্বীনের সাথে সচেতনভাবে আপোষ করবো না!আমি সকল মাসলাকের ইসলামপন্থীদের আপন মনে করি। কিন্তু সেকুলারিজম, সোশ্যালিজম আমার দুচোখের বিষ! একজন মুমিন একেবারেই এসব মানতে পারে না। সমর্থন করতে পারে না।

আমি আপনাকে অনেক বেশিই ভালোবাসি। আমি ছাত্রসংবাদ, নয়াদিগন্ত খুঁজে খুঁজে, প্রোফাইল ঘেটে ঘেটে আপনার লেখা পড়তাম। কিন্তু আমি আপনার বর্তমান অবস্থা মেনে নিতে পারতেছি না।

আপনিই তো অসংখ্য অবুঝকে সবুজ করেছেন। আপনিই তো অসংখ্য পথহারাকে পথে এনেছেন। দ্বীন থেকে দূরে যাওয়া তরুণ ছাত্রদেরকে দ্বীনের পতাকা তলে এনেছেন। সেই আপনিই কীভাবে আপনার দেখানো পথ ছেড়েছেন?

নিজের মতামতের সেক্রেফাইসের নসীহা প্রদান করেছেন। মতের কুরবানিই সবচেয়ে বড়ো কুরবানি; সামষ্টিক সিদ্ধান্তই আমারও সিদ্ধান্ত বলে টিসি টিএসে আলোচনা রেখেছেন। কী করে আপনি আপনার সেই পথ সেই মত থেকে বিচ্যুত হলেন? কী করে সেই কালজয়ী জীবন বিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ছেড়ে অন্যত্র গেলেন?

মানুষের মনগড়া মতবাদ কখনো মানুষের জন্য শান্তি এনে দিতে পারে না, এসব তো ছাত্রসমাজকে আপনারাই বলতেন।

পর্দার আয়াত-হাদিস মুখস্থ করাতেন। পর্দার বিধান লঙিত হলে শপথের কর্মী করতেন না। এই সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে উক্ত ব্যক্তিকে সংগঠন থেকে বহিঃস্কার করতেন। সে আপনিই ঊন্মুক্তভাবে, নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণকে অপরাধ মনে করেছেন না। পর্দাহীনতাকে কোনো বিষয়-ই মনে করছেন না।

প্লিজ ভাইয়া, আল্লাহর জন্য ভালোবাসি আপনাকে। আপনি ফিরে আসুন। দ্বীনের পথে ফিরে আসুন। আপনার দলের সঙ্গে রাগ করে সেকুলারিজমকে আপন করবেন না।

আপনার গুণমুগ্ধ ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষী : রেদওয়ান রাওয়াহা

পঠিত : ১২১২ বার

মন্তব্য: ০