Alapon

একজন মুসলিম নারীর প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য

আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য সৃষ্টির নিদর্শনের মধ্যে একটি বড় নিদর্শন এই যে, আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি প্রাণী জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন। তেমনিভাবে মানুষের মধ্যেও সৃষ্টি করেছেন দুটি শ্রেণি, নর ও নারী।

আল্লাহ বলেন, "আসমান ও যমীনের স্রষ্টা, যিনি তোমাদের আপন প্রজাতি থেকে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন, অনুরূপ অন্যান্য জীবজন্তুরও (তাদের নিজ প্রজাতি থেকে) জোড়া বানিয়েছেন এবং এই নিয়মে তিনি তোমাদের প্রজন্মের বিস্তার ঘটান। বিশ্ব-জাহানের কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়। তিনি সব কিছু শোনেন ও দেখেন।"
(সূরা আশ শূরা : ১১)

"হে মানব জাতি! তোমাদের রবকে ভয় করো। তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি প্রাণ থেকে। আর সেই একই প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া। তারপর তাদের দু’জনার থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। সেই আল্লাহকে ভয় করো, যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের কাছ থেকে নিজেদের হক আদায় করে থাকো এবং আত্মীয়তা ও নিকট সম্পর্ক বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকো। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ‌ তোমাদের ওপর কড়া নজর রেখেছেন।"
(সূরা আন নিসা : ১)

এই যে নারী-পুরুষ হিসেবে মানুষের মধ্যে দুটো জাতি সৃষ্টি করেছেন, তন্মধ্যে নারী জাতিকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল মুহাম্মদ (স.) দিয়েছেন বিশেষ সম্মান।

মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ‘নিসা’ অর্থাৎ ‘মহিলা’ শব্দটি ৫৭ বার এবং ‘ইমরাআহ’ অর্থাৎ ‘নারী’ শব্দটি ২৬ বার উল্লেখ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ‘নিসা’ নামে নারীর অধিকার ও কর্তব্যসংক্রান্ত একটি স্বতন্ত্র বৃহৎ সূরাও রয়েছে। এতদ্ব্যতিত কোরআনের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসে নারীর অধিকার, নিরাপত্তা, মর্যাদা ও তাদের মূল্যায়ন সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে।

মা হিসেবে, স্ত্রী হিসেবে, কণ্যা হিসেবে নারীদের দেওয়া হয়েছে স্বতন্ত্র সম্মান।

সকল দিক বিবেচনায় নারীদের সম্মান ও মর্যাদা ইসলামে ব্যাপক। সেই সাথে তাদের রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব‌ও।

একজন মুসলিম নারীর প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্যকে ৩ টি ক্ষেত্রে ভাগ করা যায়। সেগুলো হচ্ছে :
১. ব্যক্তিগত দায়িত্ব ও কর্তব্য
২. পারিবারিক দায়িত্ব ও কর্তব্য
৩. উম্মাহর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্য

ব্যক্তিগত দায়িত্ব :
১. ইসলামের যথার্থ জ্ঞান অর্জন
>কুরআন ও হাদিস বুঝে পড়ার চেষ্টা করা, শুদ্ধভাবে কুরআন পড়তে জানা
>মহিলা সাহাবীদের জীবনী সম্পর্কে জানা
>সুযোগের আলোকে ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করা

২. আখিরাতে সফলতার জন্য হাদিসে বর্ণিত ৪ টি কাজ যথাযথভাবে পালন করা।
>যথাসময়ে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায়
>রমজানের সাওম পালন করা
>নিজের সতীত্বের হেফাজত করা
>স্বামীর আনুগত্য করা
(মুসনাদে আহমাদ)

পারিবারিক দায়িত্ব :
১. বাবা-মা সন্তানের প্রথম শিক্ষক। আর মা ছেলেবেলায় সন্তানের সবচেয়ে কাছের সঙ্গী। তাই সন্তানদের সঠিকভাবে গড়ে তুলতে, তাদেরকে নৈতিকতা শিক্ষা দিতে মায়ের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখা প্রয়োজন ।
২. সুন্দর ও কোমল আচরণ করা। এটা পারিবারিক বন্ধনকে শক্তিশালী করে
৩. স্বামী ও সন্তানদের আস্থায় পরিণত হ‌ওয়া
৪. পর্দার বিষয়ে সচেতন থাকা এবং গাইরে মাহরাম থেকে নিজেকে হেফাজতে রাখা
৫. মিতব্যয়ী হ‌ওয়া
৬. উচ্চাকাঙ্ক্ষা থেকে বেঁচে থাকা

উম্মাহর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব :
১. মহিলাদের অঙ্গনে যথাসম্ভব দাওয়াতি কাজ করা
২. সাধ্যমতো জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর কাজে সক্রিয় থাকা
৩. আল্লাহর পথে অর্থব্যয়
৪. ভাই, স্বামী ও সন্তানদের জিহাদের পথে সক্রিয় রাখতে প্রেরণা যোগানো
৫. উত্তম ধৈর্য্যধারণ করা।

পঠিত : ৪৯৮ বার

মন্তব্য: ২

২০২২-০৫-১৪ ১২:৩৩

User
সামিউল ইসলাম বাবু

অনেক সুন্দর লিখেছেন।
এধরনের লেখা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম

submit

২০২২-০৯-২৯ ১৮:৩৮

User
Masum Billah Bin Nur :

জাযাকাল্লাহ খাইরান ❤️
দোয়ায় শামিল রাখবেন। যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় বিষয়ক একটি লেখা আসবে খুব শীঘ্র‌ই ইনশাআল্লাহ। ্

submit