Alapon

|| সোনালী কাবিনের কবি : আল মাহমুদ ||


১৯৭২ সালে আল মাহমুদ গণকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন৷ জাসদের মালিকানাধীন 'গণকন্ঠ' তৎকালীন সময়ে সমাজতন্ত্র তথা বামধারার প্রধান মুখপাত্র হিসেবে ভূমিকা পালন করত৷ এরপর ৭৪ সালে বাকশাল শাসনামলে একদিন জাসদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দেয়া হলে সেদিন রাতেই গ্রেফতার হন আল মাহমুদ৷ বিনা বিচারে অনেকদিন কাটান কারাগারে৷

আল মাহমুদের নিজেকে খুঁজে পাওয়ার সময় এটাই৷ কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ যে আলোর সন্ধান তাকে দিয়েছিল—আধা জীবন সূর্য্যের ঝলমলে আলোতে পার করেও তিনি তা পাননি৷ কারাগার তার জীবনে শাপে বর হিসেবে দেখা দেয়৷
বামপন্থা তথা মার্ক্সকে ছেড়ে শ্বাশত দ্বীন ইসলামের দিকে ফেরার প্রসঙ্গে আল মাহমুদ বলেন–
"আমি কখনোই মার্কসবাদী ছিলাম না৷ বরং আমার চরিত্রে একধরণের দোদুল্যমানতা ছিল৷ আমি যে পরিবারে জন্মেছি তারা সবাই ছিলেন খুব ধর্মপ্রবল লোক৷ কীভাবে যেন তাদের মধ্যেই যে রয়েছে সঠিক পথের ঠিকানা এটা আমাকে দূর থেকে ইশারায় ডাকত৷"

এই সঠিক পথের ঠিকানায় হাঁটতে কবি শিকার হয়েছেন অনেক বঞ্চনার৷ মিডিয়া সর্বাত্মকভাবে বর্জন করেছিল তাকে৷ নতুন প্রজন্ম যেন তার ব্যাপারে জানতে না পারে তাই পাঠ্যবই থেকেও তার কবিতা বাদ দেওয়া হয়৷ বামপন্থীরা সর্বদাই ফ্যাসিবাদের সহযোগী ছিল, নিজেদের আচরণেও সেই ফ্যাসিবাদ তারা জারি রেখেছে—যার নির্দয় শিকার হয়েছিলেন 'বিশ্বাসীদের কবি আল মাহমুদ'৷

অথচ, তারা জানে না আল মাহমুদ বিশ্বাসীদের মিছিলের একজন অগ্রসৈনিক ছিলেন৷ তিনি যেমনটা লিখেছেন—

'' আমরা তো শাহাদাতের জন্যই মায়ের উদর থেকে পৃথিবীতে পা রেখেছি৷
কেউ পাথরে, কেউ তাঁবুর ছায়ায়, কেউ মরুভূমির উষ্ণ বালু কিংবা সবুজ কোনো ঘাসের দেশে চলছি৷
আমরা আজন্ম মিছিলেই আছি,
এর আদি বা অন্ত নেই৷ ''

.

১৯৩৬ সালের ১১ই জুলাই, সোনালী কাবিনের কবি আল মাহমুদ জন্মগ্রহণ করেন৷ বাংলা সাহিত্যের এই সূর্য আজকের দিনে ১৫ ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালে ইন্তেকাল করেছেন৷ আল্লাহ তাকে জান্নাতের একজন মেহমান হিসেবে কবুল করুন৷ আর আমাদের কবুল করুন, আল মাহমুদের মিছিলের একজন হিসেবে!

|| সোনালী কাবিনের কবি : আল মাহমুদ ||
— এ বি সিদ্দিক
.

পঠিত : ৫১৭ বার

মন্তব্য: ০