Alapon

ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিলো?



ভাষা আন্দোলন নিয়ে আমাদের ইতিহাসে অনেক বেশি বৈপরীত্য লক্ষ্য করা যায়! তারই ধারাবাহিকতায় আমরা এখন পর্যন্ত ভালো ভাবে জানিনা আসলে ঠিক কি কারনে বা কি উদ্দেশ্যে ভাষা আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিলো;

'রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন প্রথমে শুরু করেছিলেন ছাত্ররা। তাদের মনে একটি আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছিল, যদি উর্দুকেই একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা করা হয় তবে উর্দু যাদের মাতৃভাষা অথবা হয়ে উঠেছিলো মাতৃভাষার মতো, উর্দু ভাষায় তারা প্রতিযোগিতামূলক পরিক্ষা দিয়ে সহজেই পেতে পারবেন সরকারি কর্ম। বাংলাভাষীরা হতে পারবেন না বড় সরকারি পদের অধিকারী। এ ছিলো এই আন্দোলনের রাজনৈতিক ও অর্থনেতিক যুক্তি।
প্রথমে এই আন্দোলন আরম্ভ হয় ছাত্র সমাজ কর্তৃক কিন্তু পরে তা হয়ে উঠে গণআন্দোলনে। তাই আন্দোলন সাফল্য পায়।'
(বইঃ আত্মপরিচয়ের সন্ধানে; এবনে গোলাম সামাদ, পৃষ্ঠা-১১১)

এক্ষেত্রে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীনরাও যথেষ্ট অপরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছেন। তারা যদি মাত্র ১০০বছর পূর্বে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির দেখানে পঁথকে অনুস্বরণ করতেন তাহলে তাদের এত বড় আন্দোলনের মুখে পড়তে হতোনা, যা ভারত ভালো ভাবে করেছে।

'ইংরেজরা এদেশে শাসন ক্ষমতা পাবার পরপরই ইংরেজিকে সরকারি ভাষা করেননি। সরকারি এবং আদালতের ভাষা করে রেখেছিলেন ফার্সি।পরে ১৮৩৫ সালে ইংরেজিকে করা হয় সরকারি ভাষা। ১৮৩৮ সালে আদালতের ভাষা হিসেবে ফার্সির স্থলে ইংরেজিকে প্রবর্তন করা হয়।
যার ফলে রাতারাতি ফার্সি ভাষা যারা জানতেন তারা হয়ে যান মূর্খ অক্ষর-জ্ঞানহীন! এর পুরো প্রভাব পড়ে মুসলিম জনগণের উপর এবং তারা সবাই সরকারি দফতর থেকে চাকরিচ্যুত হন।'
(বইঃ আত্মপরিচয়ের সন্ধানে; এবনে গোলাম সামাদ, পৃষ্ঠা-৬৯)

আর এভাবেই ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজি ভাষার প্রবর্তন হয়।
যা এখনও পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশের সকল স্বাধীন দেশের দ্বিতীয় সরকারি ভাষা হিসেবেই রয়েগেছে!
যদিও ভারতীয় উপমহাদেশের সকল ভাষা তথা- বাংলা,উর্দু,হিন্দী,সিন্ধি,পাঞ্জাবী,সংস্কৃত,পালি,সিংহলি সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক ভাষা একি উৎস, আদি আর্য ভাষা(ইন্দো-ইরানীয় শাখা) থেকে এসেছে এর পরেও এগুলো কোনোটিই অন্যদেশে দ্বিতীয় সরকারি ভাষার মর্যাদা পায়নি! আর এই সুযোগটিকে পাকিস্তানের তৎকালীন শাসকরা কাজে লাগাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়।

আ জ ম ওবায়দুল্লাহ

পঠিত : ৪০৭ বার

মন্তব্য: ০