Alapon

শেকড় ভোলার দায়.......



যার উদ্দেশ্য তোমার কাছে ক্লিয়ার না। যার গন্তব্য তোমার কাছে স্পষ্ট না। যারা তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য- উদ্দেশ্য এবং গন্তব্য তোমার কাছে পরিস্কার করে না। তাদেরকে এড়িয়ে যাবে। তা না পারলে পারতপক্ষে তাদের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দেবে না। তাদের কোনো মুখরোচক ও চটকদার কথায় প্রভাবিত হবে না। যদি তা-ই করো, তাহলে তুমি শেকড় হারাবে। নিজেই নিজের শেকড়কে ভুলে যেতে চাবে। শেকড়কে ভুলে থেকেই তখন তৃপ্ত আর তুষ্ট হবে। নিজের অজ্ঞতা আর জাহালাতকে তুমি শেকড়ের অজ্ঞতা আর জাহালাত ভাববে। নিজের দুর্বলতা আর কূপমণ্ডূকতাকে শেকড়ের দিকে নিবেদিত করবে। অথচ এটা যতোটা না শেকড়ের দোষ, তারচেয়ে বরং তোমার দায়টা-ই বেশি।

অথচ তখন তুমি নিজের দায় আর দোষকে ঢাকতে শেকড় কেটে ফেলতে চাবে। এটাকে তুমি তোমার শেখরে ওঠার মূলমন্ত্র মনে করবে। এটাকেই তুমি তোমার জাগরণ মনে করবে। কী অদ্ভুত! শেকড় ভোলার দায়টা কতোটা ভয়ংকর হতে পারে, এটা কি তুমি আদৌ উপলব্ধি করতে পারো? তুমি নিজেই তো শেখরে ওঠতে চেয়ে যত্ন নাওনি শেকড়ের। অথচ হওয়ার কথা ছিলো কী!

শেখরে ওঠতে চাওয়া খারাপ কিছু না। কিন্তু শেকড়কে ভুলে যাওয়া খারাপ, নিজের বেড়ে ওঠার পেছনে শেকড়ের অবদান ভুলে যাওয়া খারাপ। তার অবদান অস্বীকার করা খারাপ। শেকড় থেকে অন্যদের বিচ্যুত করতে চাওয়া খারাপ। সুতরাং শেকড় ধরে রাখতে চেষ্টা করো। শেকড় বাঁচলে তুমিও বাঁচবে। শেকড়কে বিচ্ছিন্ন করে পরিতৃপ্ত হলে সেটা কখনো ভালো কিছু বয়ে আনে না। কারণ মূল বা শেকড় দুর্বল হতে পারে, তবে একেবারেই শক্তিহীন নয়। দুর্বল শেকড়ের গোড়ায় একবার সার ও পানি সিঞ্চন হলে তা গজিয়ে ওঠবেই। হ্যাঁ, ওঠবেই! তখন বুঝতে পারবে শেকড় ভোলার দায়টা কতোটা ভয়ানক হতে পারে। শেকড় কাটার পরিণামটা কী ভীষণ খারাপ হতে পারে! সুতরাং সাবধান! শেখরে যেতে চাও, যাও; কিন্তু শেকড় কেটে নয়। কারণ শেকড়ের সাথে শতো সহস্র শ্রম ও ঘাম জড়িত। কখনো কখনো রক্তও দিতে হয় শেকড়ের ভিত্তি স্থাপন করার সময়! ভুলে যেওনা। মনে রেখো। মগজের ভাজে ভাজে গেথে গেথে রেখো....

আমরা কৌশলী হবো। আমরা উদার হবো। কিন্তু কৌশলী হওয়া মানে আদর্শের সাথে কম্প্রোমাইজ করা নয়। আমরা উদার হবো। উদার হওয়া মানে নিজ সত্ত্বাকে বিষর্জন করা নয়। উদার হওয়া মানে মূলকে বদলে ফেলা নয়। উদার হওয়া মানে ভুল-অন্যায়-অপসংস্কৃতিকে মেনে নেয়া নয় ! আমরা উদার হবো, তবে মূলকে ধারণ করে.........

//শেকড় ভোলার দায়.........//
~রেদওয়ান রাওয়াহা

পঠিত : ৫৩৫ বার

মন্তব্য: ০