Alapon

যে সালাত অস্থিরতার তা পণ্ডশ্রমের মূল...



ভিডিওর যে ব্যক্তিকে সালাত পড়তে দেখছি; এমন সালাত (নামাজ) অনেক ব্যক্তিকেই আমরা পড়তে দেখি। কোন ব্যক্তি খালেস নিয়তে এ ধরনের সালাত যদি ৮০ থেকে ১০০ বছর ধরেও পড়েন। তদুপরি তিনি হাশরের ময়দানে সালাত বিহীন নিঃস্ব মানুষের মতই হাজির হবেন। এমন সালাত সেদিন কোন কাজেই আসবে না!

আরব দেশের মসজিদ গুলোতে পৃথিবীর নানা প্রান্তের মুসলিমেরা সালাত পড়েন। এমন দ্রুতগতির অস্থির সালাত পড়ুয়া মানুষ এদেশেও দেখা যায় এবং এটা পৃথিবীর সকল জাতীর মধ্যেই দৃশ্যমান। তাই কোন জাতীর নাম ধরে কটাক্ষ করা থেকে বিরত থাকি।

এই মানুষগুলো যদিও সালাত পড়ছেন কিন্তু তলে তলে শয়তানের খপ্পরে নিমজ্জিত থাকেন। শয়তানের কর্মপদ্ধতি মানুষের চেয়ে ভিন্ন। কারো কার্যক্রম পছন্দ না হলে, মানুষ তার বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করে। শয়তান এভাবে করেনা। শয়তান আগে দেখে মানুষটির পছন্দ এবং স্বাচ্ছন্দ্য কোন বিষয়ে জড়িত। অতঃপর সে ওটার বাহ্যিক আচরণকে হুবহু রেখে, মনস্তাত্ত্বিক চিন্তায় পরিবর্তন ঘটিয়ে দেয়।

যেমন এই ব্যক্তি নামাজ পড়ছেন কিন্তু শয়তান তার স্বভাবে তাড়াহুড়ো মনোভাব ঢুকিয়ে সালাতকে বরবাদ করে দিয়েছে। মানুষকে কেয়াম করতে বলা হল (কেয়াম মানে দাড়িয়ে সালাত পড়া), শয়তান মনের পরিবর্তন ঘটিয়ে সেখানে ইসলামী গজল ঢুকিয়ে ভিন্ন ধরনের শ্রদ্ধার জন্ম দিল! মানুষকে জিকির করতে বলা হল, জিকির মানে নিজের প্রতিটি কার্যক্রমে আল্লাহকে স্মরণ ও ভয় করা কিন্তু মানুষ শরীর দুলিয়ে, সুরের লয়-তালে কিছু আরবী বাক্য উচ্চারণে ব্যস্ত রয়ে গেল। শয়তান মূলত এভাবে মনস্তাত্ত্বিক ভাবে হানা দেয়। ফলে বাহ্যিক বিষয়টিকে হুবহু রাখে কিন্তু ভিতরে মুড়ির মত ফাঁকা করে দেয়।

এই মানুষগুলো ঠিকই জানে তার সালাত সঠিক হচ্ছে না। কেননা আশে পাশের অনেক মুসল্লিকে তার চেয়ে ব্যতিক্রমি দৃশ্যত শুদ্ধ সালাত পড়তে দেখার পড়ও, নিজে শুদ্ধ হয়না, তার মনে কোন প্রশ্নেরও উদ্রেক হয় না। সে সঠিক ও শুদ্ধ এমন গোঁয়ার্তুমি তাকে গ্রাস করেছে। প্রবাসে ভাষা না জানার কারণে একজন অন্যজনকে শুধরাতে পারে না। কিছু মানুষ আছে তাদেরকে পরামর্শ দেওয়া হলে, উল্টো ক্ষেপে গিয়ে দু'এক কথা শুনিয়ে দিবে। এরা ওয়াজ নসিহত শুনলেও নামাজের পরিবর্তন ঘটাতে পারে না। কেননা শয়তান সেরা কারবারি, একবার মনের চাবি ঘুরিয়ে দিতে পারলে, মানুষ আজীবন সেটাই অনুসরণ করে।
এমন পরিস্থিতিতে করণীয়: ধমক দিয়ে, সমালোচনা করে, বকা-ঝকা করে এমন অভ্যাস কখনও পরিবর্তন করা যায় না। তার চেয়ে বরং বয়সে মুরুব্বী কিংবা গ্রহণযোগ্য আলেম তার সাথে বন্ধুত্ব করে, একদিন চায়ের আলাপ চারিতায় একাকী তাকে বিষয়টি বুঝিয়ে দিলে ভাল কাজ হয়। জনে জনে বুঝালে ভাল কাজ হয়। এটাই রাসুল (সা) দেখানো অন্যতম পদ্ধতি। এমন পদ্ধতি প্রয়োগ করে আবু বকর (রা) যাদের দাওয়াত দিয়েছিলেন, তাদের পাঁচ জনই আশরায়ে মোবাশ্বেরার নামে স্থান পেয়েছিলেন।

ধমক দিয়ে তাকেই সোজা করা যায়, যিনি আগে থেকেই সব নিয়মনীতি মেনে চলতেন কিন্তু মাঝপথে কোন কারণে বিচ্যুতি ঘটেছে। সেটা হয় ছাত্র কিংবা সন্তান। আল্লাহ পথের পথিক কে শুদ্ধ করতে গেলে দরদী মন ও নির্ভেজাল অন্তর লাগে।

- নজরুল ইসলাম টিপু

পঠিত : ৩২৫ বার

মন্তব্য: ০