Alapon

"কীভাবে সবসময় দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা যায়?"



জীবনের চরম শত্রু বলে যদি কিছু থাকে, সেটা হলো দুশ্চিন্তা। আমরা সর্বদা একটা ভুল করি, আমরা ভাবি—আমাদের আশপাশের মানুষ মনে হয় আমাদের শত্রু, কিন্ত না, আমার শত্রু আমি নিজেই।

'ম্যান এগেনস্ট হিম সেলফ' বইটিতে কার্ল মেনিঞ্জার বলেছেন কিভাবে আমরা নিজেরাই উদ্বেগ, চিন্তা, হতাশা, অসন্তোষ, ঘৃণা, ভয় প্রভৃতি দ্বারা নিজেদের শরীর ও মনকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাই।

কঠোর বাস্তব জীবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে অনেকেই উদ্বেগ ও হয়রানির শিকার হয়ে পড়েন। উত্তেজনা স্বাভাবিক পাচক রস নিঃসরণে বিঘ্ন ঘটায় এবং এর ফলে দুরারোগ্য আলসারের সৃষ্টি হয়।

ড: যোসেফ এফ মন্টেও বলেছেন, 'আমরা যা খাই তার থেকে আলসারের সৃষ্টি হয় না ।আলসারের মূল কারণ হচ্ছে দুশ্চিন্তা, যা দিবারাত্র আমাদের কুরে কুরে খায়।

আমাদের মনের শক্তি যে কী দুর্বার তা আমরা নিজেরাই জানি না। আমরা যদি ইচ্ছে করি, তাহলে আমরা সব সময় ভালো থাকতে পারি। তার জন্য গভীর আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে নিজের স্বপ্নকে সফল করার লক্ষে এগিয়ে যেতে হবে।

দুশ্চিন্তার হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য প্রত্যেকদিন শুধু সেই দিনটির কাজকর্ম ও সমস্যা গুলোর সমাধান করে কাটাতে হবে। আগামীতে কী হবে, গতকাল কী ঘটেছে—সেই ভাবনা মাথা থেকে মুছে ফেলতে হবে। আমি কেবল আজকের দিনটা নিয়েই চিন্তা করবো, এবং এক মনে কাজ করে যাবো।

ড: আলেক্সিস ক্যারেল বলেছেন— 'দুশ্চিন্তার সঙ্গে মোকাবিলা কী করে করতে হয়, যাঁরা তা জানে না অল্প বয়সেই তাঁদের মৃত্যু ঘটে। তাই দুশ্চিন্তার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া জন্য এই তিনটি প্রাথমিক ধারা শিখে নেওয়ার প্রয়োজন।

১.সমস্যাটির সম্বন্ধে সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।

২. যে তথ্যগু্লো সংগ্রহ করা হলো তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করতে হবে।

৩.সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যেএকটা যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, এবং সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করতে হবে। শোনা যায়, প্রখ্যাত দার্শনিক অ্যারিস্টটল নিজে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতেন।

সমস্যাটি সম্বন্ধে সমস্ত দুর্ভাবনা মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। দূরবর্তী অস্পষ্ট আশার দিকে তাকিয়ে না থেকে আমাদের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে বর্তমান বা বাস্তব পরিস্থিতিতে যা স্পষ্টতর সেই করণীয় কাজগুলো সুসম্পন্ন করা। বর্তমানই ভবিষ্যত উত্তরণের ক্ষেত্রে যথার্থ ও মূল্যবান সময়। তাই বর্তমানে অর্থাৎ আজকের দিনটিতেই ভবিষ্যতের ইশারা লুকিয়ে আছে।

তুচ্ছ বিষয় মনে প্রবেশ করিয়ে মনতকে চঞ্চল করা যাবে না। মনে রাখতে হবে আমাদের জীবন পরিধি খুবই সীমিত, তাই সংকীর্ণমনা হবার কোনো অবকাশ নেই। তাই সব সময় দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে-

ক) দুশ্চিন্তা নামক বাজে অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।কর্মব্যস্ততার মধ্যে ডুবে যান।

খ) যে সমস্ত ব্যাপার গুলো তুচ্ছ সেগুলো কে অবহেলা করতে শিখুন।

গ) যা অবশ্যম্ভাবী ঘটনা তাকে মেনে নিন।

ঘ) অতীত ঘটনার জন্য অনুশোচনা বন্ধ করুন।

ঙ) মন থেকে ভয় নামক শত্রুকে ত্যাগ করুন।

চ) যেকোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে চলার চেষ্টা করুন।

মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনকে সুখ-শান্তিতে ভরিয়ে দিতে পারি। আনন্দমূলক চিন্তা ও আনন্দমূলক কাজে মগ্ন থাকলে, জীবন আপনাআপনি আনন্দময় হয়ে ওঠবে। https://t.me/RedwanRawaha

পঠিত : ৩৯৯ বার

মন্তব্য: ০