Alapon

প্রিয়জনদের সময় দিন

অস্থিরতা বেড়ে যাচ্ছে! আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এখন খুনের চাইতে আত্মহত্যা কয়েকগুণ বেশি।

ঢাকায় ২০২০ সালে ২১৯টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ৬১৭টি। হত্যার চেয়ে আত্মহত্যা তিনগুণ প্রায়।

শিশু থেকে বয়স্ক, শ্রমজীবী থেকে উচ্চবিত্ত-নিম্নবিত্ত, শিক্ষিত-কমশিক্ষিত, সব ধরনের মানুষই আছে এ তালিকায়। তবে কিশোর ও তরুণদের প্রবণতা বেশি।

২০২১ সালে ঢাকায় ১৬৬ জন খুন হন। একই বছর আত্মহত্যা করে ৬৯৫ জন। যা খুনের তুলনায় চারগুণেরও বেশি। অবিশ্বাস্য! মানুষ আত্মঘাতী হয়ে পড়ছে।

কারণ হিসেবে অনেককিছু রয়েছে!
১. হতাশা। না পাওয়ার হতাশা থেকেই বেশি আত্মঘাতী হচ্ছে মানুষ। এর মধ্যে চাকুরি, ভালোবাসা, ভালো লাইফস্টাইল ইত্যাদি রয়েছে।
২. মানসিক অসুস্থতা। অনেকেই জটিল মানসিক অসুস্থতা, সন্দেহপ্রবণতা থেকে আত্মঘাতী হচ্ছেন।
৩. ক্রেজিনেস। এটা কম বয়স্কদের (কিশোর/কিশোরী) মধ্যে বেশি দেখা যায়। অভিভাবকরা বকা দিলে, পড়াশোনার জন্য চাপ দিলে অথবা কোনো কিছু করতে না দিলেই তারা আত্মঘাতী হয়ে যাচ্ছে। ঢাকায় এই ধরণের কেইস সবচেয়ে বেশি।
৪. জেনেটিক। অনেকে জেনেটিক কারণে আত্মহত্যার জন্য প্ররোচিত হতে পারে। সিম্পল কারণেও তারা আত্মঘাতী হয়।
৫. অপমান ও উৎপীড়ন। সামাজিকভাবে অপমানিত, অপদস্ত, শ্লীলতাহানি ইত্যাদি কারণেও অনেকে আত্মঘাতী হন।
৬. মাদক। মাদকসেবীরাও মারাত্মকভাবে আত্মঘাতী হয়ে থাকে।

আপনার পরিবারের সদস্যদের সময় দিন। কেউ যাতে আলাদাভাবে একাকী সময় বেশি না কাটায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। পারিবারিক, সামাজিক বন্ধনকে সুদূঢ় করতে হবে, একে অপরকে সময় দিতে হবে, কাছের মানুষের কষ্টের কথাগুলো শুনতে হবে।

যারা সামাজিক, রাজনৈতিক ও পরিবারের নানাবিধ কাজের সাথে যুক্ত তারা সাধারণ আত্মঘাতী হন না। প্রতিটি সমস্যাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে তাকে মোকাবেলা করতে শিখতে হবে, মোকাবেলা করতে হবে। সন্তানকে দায়িত্ববানরূপে গড়ে তুলুন। বেশি কড়াকড়ি ও বেশি স্বাধীনতা দুটোই ক্ষতিকর। ব্যালেন্স করতে হবে।

কিশোরদের খেলাধূলা, মসজিদভিত্তিক সামাজিক কাজের সাথে যুক্ত করুন। কিশোরীদের নানাবিধ ক্রিয়েটিভ কাজের (হ্যান্ডিক্রাফট, সেলাই, রান্না ইত্যাদি) সাথে যুক্ত করুন। যারা পড়াশোনায় আগ্রহী তাদের গবেষণানির্ভর কাজে লাগান। এতে তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। হতাশা তৈরি কম হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো ব্যস্ত থাকার উপাদান পাবে। অলসতা করার ও বাজে চিন্তার টাইম পাবে না।

বাড়ির বয়স্কদের যত্ন নিন। তাদের সময় দিন। বয়স্করা যাতে নিজেদের গুরুত্বহীন মনে না করেন সেদিকে খেয়াল রাখুন। কিশোর/কিশোরীদের ক্ষেত্রে সঙ্গ অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। সন্তানরা যাতে ভালো সঙ্গী পায় সেদিকে নজর রাখুন। এক্ষেত্রে ভালো হয় ছেলেদের ছাত্রশিবিরের সাথে যুক্ত করে দিন ও মেয়েদের ছাত্রীসংস্থার সাথে যুক্ত করে দিন।

আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন। আমাদের প্রিয়জন ও পরিবারকে রক্ষা করুন। আমাদের শহরকে রক্ষা করুন। আমিন।

পঠিত : ২৬৩ বার

মন্তব্য: ১

২০২২-০৩-৩১ ১৯:২৭

User
সামিউল ইসলাম বাবু

সুন্দর পোষ্ট।

ভালোলাগা ++

submit