Alapon

মসজিদপ্রেমী নারী এবং কিছু কথা...



ইসলামি সমাজব্যবস্থায় একজন নারী বিধবা হলে কিংবা তালাকপ্রাপ্তা হলে পরবর্তী তার বিয়ে হওয়া সহজ ছিলো। আমাদের সমাজে একজন নারীর স্বামী মারা গেলে বা তাকে তালাক দেয়া হলে তো তাকে ‘অপয়া’ ভাবা হয়!

এসব ব্যাপারে যে ইসলামে কুসংস্কার নেই, তার সবচেয়ে বড়ো উদাহরণ হলেন একজন নারী সাহাবী। তাঁর নাম ছিলো আতিকা বিনতে যায়িদ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)। ইসলামপূর্ব মক্কায় যেসব বিখ্যাত ‘হুনাফা’ ছিলেন, আতিকার (রাsmile বাবা যায়িদ ইবনে আমর ছিলেন তাদের একজন। আতিকার (রাsmile ভাই সায়িদ ইবনে যায়িদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ছিলেন ‘আশারায়ে মুবাশশারা’ বা দুনিয়ার বুকে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জনের একজন।
আতিকা বিনতে যায়িদের (রাsmile বিভিন্ন সময়ে পাঁচটি বিয়ে হয়। কখনো তাঁর স্বামী ইন্তেকাল করেছেন, তো কখনো তিনি তালাকপ্রাপ্তা হয়েছেন। তাঁর স্বামীদের মধ্যে বিখ্যাত ছিলেন উমর ইবনুল খাত্তাব (রাsmile

এখানে একটি মজার ব্যাপার আছে। উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বিয়ে করেন সায়িদ ইবনে যায়িদের (রাsmile বোন আতিকাকে (রাsmile, অন্যদিকে সায়িদ ইবনে যায়িদ (রাsmile বিয়ে করেন উমরের (রাsmile বোন ফাতিমাকে (রাদিয়াল্লাহু আনহা); সেই ফাতিমা ও সায়িদের (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) ঘরে গিয়ে উমর (রাsmile ইসলাম গ্রহণে আগ্রহী হোন।

আতিকা বিনতে যায়িদ (রাsmile ছিলেন একজন কবি। তিনি মূলত মার্সিয়া বা শোকগাথা কাব্য লিখতেন, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় । তাঁর স্বামীর ইন্তেকালে, নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তেকালে, শহীদদের জন্য তিনি এসব কবিতা লিখতেন।

মসজিদের প্রতি আতিকা বিনতে যায়িদের (রাsmile আলাদা টান ছিলো। তিনি ফজর ও এশার নামাজেও মসজিদে যেতেন। লোকজন তাঁকে বললো, “আপনি কেনো মসজিদে নামাজ পড়তে যান? আপনি কি জানেন না যে, উমর (রাsmile এটা অপছন্দ করেন?”
তিনি জবাব দিলেন, “তাহলে স্বয়ং উমর (রাsmile আমাকে বাধা দিচ্ছেন না কেনো?”
তাঁকে জানানো হলো যে, নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
“আল্লাহর বান্দীদের (নারীদের) আল্লাহর মসজিদে যেতে বারণ করো না।”
অর্থাৎ, নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেহেতু নারীরা মসজিদে যেতে চাইলে বারণ করতে নিষেধ করেছেন, সেজন্য উমর (রাsmile বারণ করছেন না। [সহীহ বুখারী: ৯০০]

আতিকা বিনতে যায়িদ (রাsmile মসজিদে যাবার আগে তাঁর স্বামী উমরকে (রাsmile জিজ্ঞেস করতেন। কিন্তু, উমর (রাsmile নিষেধ করতেন না। তখন আতিকা (রাsmile বলতেন:
“আল্লাহর কসম! যতোদিন আপনি আমাকে নিষেধ না করেন, ততোদিন আমি (মসজিদে) যেতেই থাকবো।” তবুও, উমর (রাsmile তাঁকে কখনো নিষেধ করেননি। [ইমাম মালিক, মুয়াত্তা: ৪৫৩]

মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ার সময় খলিফা উমরকে (রাsmile আঘাত করা হয়, এই জখমের ফলে তিনি ইন্তেকাল করেন।

ইবনে হাজার আসকালানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: “যেদিন উমরকে (রাsmile আঘাত করা হয়, সেদিনের নামাজে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রী আতিকা বিনতে যায়িদ (রাsmile।” [ইবনে হাজার আসকালানী, ফাতহুল বারী: ৩/৩৪]

উমরের (রাsmile ইন্তেকালের পর আতিকার (রাsmile বিয়ে হয় যুবাইর ইবনে আউয়ামের (রাsmile সাথে। বিয়ের চুক্তিতে আতিকা (রাsmile উল্লেখ করেন যে, যুবাইর ইবনে আউয়াম (রাsmile তাঁকে আঘাত করতে পারবেন না এবং তাঁকে মসজিদে যেতে বাধা দিতে পারবেন না। [ইবনে হাজার আসকালানী, আল-ইসাবা ফী তামিজিস সাহাবা: ৮/১১৪৪৮]

হযরত মুয়াবিয়ার (রাsmile শাসনকালে আতিকা বিনতে যায়িদ (রাsmile ইন্তেকাল করেন।

- আরিফুল ইসলাম

পঠিত : ২৫৯ বার

মন্তব্য: ০