Alapon

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি বলতে আদৌও কোনো নীতি নাই...



অতি সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হল। বৈঠকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন কি পারবেন, RAB এবং RAB এর সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার উপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করতে।

মিটিং শেষে জানা গেল, এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। তবে, এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থাকে রিপোর্ট দিতে হবে। আর সেই রিপোর্টে সংস্থাগুলোকে সন্তুষ্ট হতে হবে। সন্তুষ্ট হলে তবেই আমেরিকা বিবেচনায় নিবে, এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হবে কি, হবে না!

তবে সরকার মুখে যতোই বড়ো বড়ো কথা বলুক, কিন্তু বাস্তবতা বলছে, সরকার এই নিষেধাজ্ঞায় ভীষণ চাপে রয়েছে। আর সেই চাপের অংশস্বরূপ গত চার মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা কোনো বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড ঘটেনি। তেমন কোনো গুমের ঘটনাও ঘটেনি।

অন্যদিকে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সাহেব যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি নিজের ভক্তি ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েও এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সুরাহা করতে চেষ্টা চালিয়েছেন। মোমেন সাহেব বলেছেন, ‘আমি যখন রাষ্ট্রহীন ছিলাম, বেকার ছিলাম, গৃহহীণ ছিলাম, তখন যুক্তরাষ্ট্র আমাকে আশ্রয় দিয়েছিল। আমি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চির ঋণী।’

আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সাহেবের কখনো নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছিলম, এমন কোনো তথ্য কোথাও পাওয়া যায় না। তাহলে কি আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবেগের আতিশষ্যে উঠে নিজের দেশকে ছোট করে এমন কথা বলেছেন! মন্ত্রীর কথার অন্তনিহিত অর্থ করলে দাড়ায়, যুক্তরাষ্ট্রই মন্ত্রীর রিজিকদাতা, আশ্রয়দাতা, কর্মদাতা। তাই তার প্রতি মেহেরবাণী করুন। কিন্তু মন্ত্রী মহাদয়ের এমন তেলবাজিতেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্টমন্ত্রীর মন গলানো গেলো না। উপরন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্টমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন দেখতে চায়।

আর তখনি মোমেন সাহেব যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করল, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে আমেরিকা যেন সাহায্য করে। এ যেন নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বহিঃ রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করা হচ্ছে। অথচ, এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সাহেবই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মিডিয়া কাভারেজ দিতে নিষেধ করেছেন। অথচ আজ কিনা মোমেন সাহেবই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমেরিকার সাহায্য চাচ্ছে!

এখন দেখে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি বলতে আদৌও কোনো নীতি নাই।

পঠিত : ২৯৩ বার

মন্তব্য: ০