Alapon

ভুল করা মানে দূরে ঠেলে দেওয়া নয়!


মানুষ যুগে যুগে ভুল করে আসতেছে। এই ভুল করার নীতি হযরত আদম আ: থেকেই প্রবর্তিত। তার ধারাবাহিকতায় আদম আ: এর পরবর্তী বংশধররা ভুল করে আসছে। আমাদের সকলেরই একটি প্রবাদ জানা রয়েছে, 'মানুষ মাত্রই ভুল করে'। মূলত মানুষ ভুল করবে এটাই স্বাভাবিক। আল্লাহ তা'য়ালা নবী রসূলগণকে সৃষ্টি করেছেন পাপহীন ভাবে। উনারা প্রত্যেকেই পবিত্র। উনাদের ব্যাকগ্রাউন্ডে কোনো পাপ নেই। যদি উনাদের জীবনীতে পাপ থাকতো তাহলে উনাদের উনাদের কথা মানুষদের নিকট বিশ্বাসযোগ্য হতো না বা কম বিশ্বাসযোগ্য হতো। এজন্য আল্লাহ তা'য়ালা উনাদেরকে পাপমুক্ত ভাবে সৃষ্টি করেছেন।[১]

আমাদের মধ্যে একটি বিষয় খুব ভালোভাবেই লক্ষ্যণীয়। তা হলো, আমাদের কোনো ভাই যদি একটি বিষয় নিয়ে ভুল করে তাহলে আমরা তাকে নিয়ে ট্রল করি বা তাকে দূরে ঠেলে দেই, যা মোটেও আমাদের জন্য শোভনীয় নয়। নবী করিম সা: যখন তায়েফের ময়দান থেকে ফিরে আসেন তখনকার ঘটনা কি আমাদের অজানা?

'তায়েফ থেকে ফেরার পথে আল্লাহ তা‘আলা রসূল সা: এর কাছে পাহাড়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা প্রেরণ করলেন। ফেরেশতা উনার কাছে তায়েফবাসীদের উপর মক্কার বড় দু’টি পাহাড় নিক্ষেপ করে তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়ার অনুমতি চাইলেন। উত্তরে নবী (ﷺ) বললেন বরং আমি চাই আল্লাহ তাদের বংশধর হতে এমন মানুষ সৃষ্টি করবেন যারা আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবেনা।'

কি ছিল নবী করিম সা: এর বাণী? কেউ ভুল করলে তাকে দূরে ঠেলে দেওয়া নাকি তার জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করা। আমরা দোয়া তো করিই না বরং কেউ ভুল করলে তার নামে যত ধরণের কুৎসা রটনা করা যায় সব করি।

মুআবিয়া ইবনে হাকাম আস-সুলামি (রা.) বর্ণনা করেন, 'আমি রাসুল (সা.)-এর সাথে নামাজে ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি হাঁচি দেয়। আমি তার উত্তরে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলি। তখন উপস্থিত লোকজন আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে থাকলে আমি বললাম, ধুর! তোমরা আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছ কেন? তখন মানুষজন (বিস্মিত হয়ে) তাদের উরুতে চাপড়াতে শুরু করে। আমি বুঝতে পারি যে, তারা আমাকে চুপ করতে বলছে। আমি চুপ হয়ে যাই। রাসুল (সা.) নামাজ শেষ করে আমাকে ডাকলেন। তিনি (নামাজে আমার অবাঞ্ছিত কথাবার্তার জন্য) আমাকে তিরস্কারও করলেন না এবং কটু কথাও বললেন না। আমি তাঁর আগে ও পরে তাঁর চেয়ে উত্তম কোনো শিক্ষক দেখিনি। তিনি শুধু বললেন, ‘আমাদের জন্য নামাজে কথা বলা সমীচীন নয়। নামাজ হলো তাসবিহ, তাকবির এবং কুরআন তেলাওয়াতের সমষ্টি'। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৩৭)

তিনি তো কাউকে কটু কথা বলতেন না, তাহলে উনার আদর্শের অনুসারী হয়ে আমরা কী করি? আমাদের উচিৎ উনাদেরকে বুঝানো। সত্যের পথে আহ্বান করা। ভুলগুলোকে এমন ভাবে চিহ্নিত করা যাতে উনারা কোনো কষ্ট না পান। তবে কিছু মানুষ রয়েছে যিনারা একগুয়েমি করে। উনাদের কথা ভিন্ন।
আল্লাহ আমাদেরকে উত্তম বুঝ দান করুন।(আমিন)

পঠিত : ৪৭২ বার

মন্তব্য: ০