Alapon

নারীর সম্মান



অনেক বছর পূর্বের কথা। প্রায় সাড়ে চৌদ্দশত পূর্বের! যখন সমাজে কোনো নারীর সম্মান ছিল না, মত প্রকাশের কোনো স্বাধীনতা ছিল না, ছিল না শিক্ষার অধিকার, যখন মেয়েদেরকে শিশু থাকতেই হত্যা করা হতো, ব্যবহার করা হতো উপভোগের সামগ্রী হিসেবে তখন পৃথিবীর বুকে আসেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাsmile। নারীর ইজ্জত-সম্মান রক্ষার্থে যিনি করে গেছেন সংগ্রাম, সমাজে যিনি নারীদেরকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখিয়েছেন তিনিই মুহাম্মদ (সাsmile

সেই জাহেলীয়াতের যুগে প্রায় সকলের উলঙ্গ অবস্থায় থাকতো। মহিলাদের কোনো কথায় কেউ শুনতো না। তাদের কোনো ইচ্ছার কোনো মূল্যও ছিল না। নবী করিম (সাsmile এর আগমণের পরে দ্বীন ইসলামে যারা দীক্ষিত হয় তাদের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে তারা নারীদেরকে সম্মান করেছেন। প্রথমত নবী করিম (সাsmile নিজে প্রত্যেককে নারীকে তাদের মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়েছেন অতঃপর উনার সাহাবী রা. দেরকেও আদেশ করেছেন।

উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি..

মহানবী (সা.) বলেন, ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত’। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, একবার এক লোক মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দরবারে এসে জিজ্ঞেস করলেন, আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার বেশি অধিকারী কে? নবীজি (সা.) বললেন, ‘তোমার মা’। ওই লোক জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? তিনি উত্তর দিলেন ‘তোমার মা’। ওই লোক আবারও জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কে? এবারও তিনি উত্তর দিলেন ‘তোমার মা’। (বুখারি)

সম্মানের কোন পর্যায়ে গেলে প্রথম তিনবারই সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিক হকদার হয় মা! এরকম আরো অনেক ঘটনায় সাহাবীদের মধ্যে পাওয়া যায়।

মহানবী (সা.) ঘোষণা করেন,‘যার রয়েছে কন্যাসন্তান, সে যদি তাকে (শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রে) অবজ্ঞা ও অবহেলা না করে এবং পুত্রসন্তানকে তার ওপর প্রাধান্য না দেয়; আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা নারীদের উত্তম উপদেশ দাও (উত্তম শিক্ষায় শিক্ষিত করো)।’

এ থেকে কি বুঝা যায় না যে নারীকে ইসলাম কতটুকু সম্মান দিয়েছে? তবুও স্যাকুলাররা একটা আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা করে বসে। অন্যান্য আয়াতের দিকে তাদের চোখ যায় না। তারা এই একটা আয়াত নিয়েই অসংখ্য মুসলিমকে বিভ্রান্ত করছে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,
'তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্র,তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।' (বাকারা)

এই আয়াতটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে স্যাকুলাররা শস্যক্ষেত্র দ্বারা যেটাকে বুঝায় সেটা না। যদিও তারা এটা জানে এবং বুঝে কিন্তু মানে না। তারা মানবে না। তারা নিজেরা যা মনে করে সেটাই সঠিক হিসেবে ধরে নেয়।

তাদের কথা একটাই! ইসলাম নারীকে এই কথা দ্বারা অপমান করেছে, হেয় করেছে। কিন্তু তারা এই কথার ব্যাখ্যার দিকে কখনো যাবে না। যদি আপনি ব্যাখ্যা করে দেন সেটাও তারা মানবে না। বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থে এই আয়াতের দুটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাদের সামনে উপস্থাপন করলে তারা তা কোনোভাবেই মেনে নিবে না।

ইসলাম যেখানে নারীকে নিচ থেকে উঁচুতে তুলেছে সেখানে তারা মনে করে তাদের বেপর্দায় বুঝি নারীর সম্মান বাড়িয়েছে। অথচ বেপর্দায় যারা চলে তাদের মধ্যে লজ্জার অভাব এটা স্পষ্ট। তারা পর্দাকে বন্দি হিসেবে ধরে নেয় অথচ সেইসব জনগণ বিভিন্ন স্থানে, বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন নিয়মের কারণে নিজেদের সম্পর্ণ শরীর আবৃত করে(পুরুষরা)। তাহলে নারীদের পর্দা করতে সমস্যা কোথায়? তারা অবুঝ।

ইসলামকে নারীকে বন্দি হিসেবে জীবনযাপন করতে বলেনি। তবে কিছু নিয়ম তো অবশ্যই রয়েছে। পৃথিবীতে ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা নারীকে সবচেয়ে বেশি সম্মান দিয়েছে। গুণসম্পন্ন নারী মানেই যেন জান্নাতের সুযোগ।

~আব্দুল্লাহ আল কাফি জোহা

পঠিত : ৪৪২ বার

মন্তব্য: ০