Alapon

"সাহাবায়ে কেরাম বায়াতকে কীভাবে বুঝেছেন?"



বায়াত হচ্ছে এমন একটা ইবাদাত, যে ইবাদতে আল্লাহ খুশি হন বলে সরাসরি তিনি তা কুরআনের মাধ্যমে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। অথচ সালাতের মতো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের ক্ষেত্রেও এভাবে বলেননি। বায়াতের ব্যাপারে আল্লাহ রব্বুল আলামিন তার কুরআনে বলেন-
لَّقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنزَلَ السَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيبًا﴾

আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা গাছের নিচে তোমার কাছে বাইয়াত করছিলো৷ তিনি তাদের মনের অবস্থা জানতেন৷ তাই তিনি তাদের ওপর প্রশান্তি নাযিল করেছেন, পুরস্কার স্বরূপ তাদেরকে আশু বিজয় দান করেছেন৷( সুরা ফাতহ : ১৮)

গাছের নিচে বায়াত নেওয়া মানুষগুলোর ব্যাপারে তথা আল্লাহর রাসুলের সাহাবিদের গাছের নিচে বায়াত নেওয়ার পরে আল্লাহ যেভাবে তাদের ব্যাপারে সন্তুষ্টির ঘোষণা দিয়েছেন; আপনি সেভাবে বায়াতকে চিনলে-বুঝলে, আল্লাহর সন্তোষভাজন সেসব মানুষের কাতারে আপনিও আপনার নামটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।

ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এবং আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর বায়াতের উদ্দেশ্য আর আপনার বায়াতের উদ্দেশ্য ভিন্ন নয়।

উসামা বিন যায়িদ যে কারণে শপথ নিয়েছেন, উবাদা বিন সামিত যে কারণে বায়াত নিয়েছেন, আপনার কারণও তাদের চেয়ে ভিন্ন নয়।

উবাদা বিন সামিতের বায়াত কী ছিলো?

উবাদা বিন সামিত রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহর সা. এর হাতে এই শর্তাবলির ওপর বাই’য়াত করেছি যে, সর্ব অবস্থায় আমরা তাঁর কথা মানবো, সচ্ছলতা ও অসচ্ছলতা উভয় অবস্থায় আল্লাহর রাস্তায় দান করবো। মানুষকে সৎ কাজের আদশে দেব এবং খারাপ কাযে বাধা প্রদান করবো। সত্যকথা বলতে কারও ভয় করবো না। রাসূলুল্লাহ সা. ইয়াসরিবে (মদিনায়) আসলে তাঁকে সাহায্য করবো। আমাদের জীবন, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির মত তাঁরও রক্ষণাবেক্ষণ করবো। আর আল্লাহর ব্যাপারে কোনো নিন্দুকের নিন্দাবাদের পরোয়া করবো না।

(আনসাবুল আশরাফ- ১/২৫৩, মুসনাদে আহমাদ- ৫/৩২৫, ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)


সাহাবায়ে কেরাম বায়াতকে যেভাবে বুঝেছিলেন; আমরাও বায়াতকে সেভাবেই বুঝবো।


সাহাবায়ে কেরাম বায়াতকে কীভাবে বুঝেছেন? সাহাবায়ে কেরাম বায়াতকে বুঝেছেন সবর হিসেবে। সাহাবায়ে কেরাম বায়াতকে বুঝেছেন নিরবিচ্ছিন্ন এবং স্বতঃস্ফূর্ত আনুগত্য হিসেবে।
সাহাবায়ে কেরাম বায়াতকে বুঝেছেন খুশির দিনেও আনুগত্য, অখুশির দিনেও আনুগত্য হিসেবে। স্বচ্ছলতায়ও আনুগত্য, অস্বচ্ছলতায়ও আনুগত্য হিসেবে।

সাহাবায়ে কেরাম বায়াতকে বুঝেছেন অপর ভাইকে অগ্রাধিকার দেওয়া আমাদের জন্য জরুরি আমল হিসেবে। এই জরুরিয়াতের প্রমাণ তাঁরা দিয়েছেন ইয়ারমুকের যুদ্ধে। এই জরুরিয়াতের প্রমাণ তাঁরা দিয়েছেন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের সময়ে।


~ রাজিবুর রহমান পলাশ
সেক্রেটারি জেনারেল
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শ্রুতি লিখন ও সম্পাদনা : রেদওয়ান রাওয়াহা

পঠিত : ৮৫১ বার

মন্তব্য: ০