Alapon

আল্লাহর সাথে সম্পর্ক



প্রতিটি হৃদয় এখন হতাশায় ভোগে। পদে পদে রয়েছে ক্লান্তির ছোঁয়া। খোঁজে এর থেকে বেরিয়ে আসার নানান পন্থা। ছুটে চলে যায় সুইসাইডের মতো নিকৃষ্টতম কাজের দিকে। মনে করে এর মাধ্যমেই সম্ভবত মুক্তি মিলবে। কিন্তু নিজেকে আগুনের দীপ্ত শিখায় যে ফেলতেছে তা তারা কল্পনাও করতে পারে না। কারণ তারা পরিচিত ছিল সুইসাইড ও নেশার মতো মারাত্মক সব ব্যধির সাথে। আল্লাহর সাথে তারা পরিচিত হতে পারেনি। তারা নিজেরা হয়নি বা সমাজ তাদেরকে হতে দেয়নি। আল্লাহর সাথে তাদের সম্পর্কটা অনেকাংশেই ভেঙ্গে যায় যায় অবস্থা। সবাই যে এমন তা নয়। অনেকেই আল্লাহ এবং ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান রাখে কিন্তু সেটাকে কর্মে পরিণত করে না।

‘‘নিশ্চয়ই আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মরণ সারা জাহানের রব আল্লাহর জন্য’’-(সূরা আনআম ৬ : ১৬২)


উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা'য়ালা তার সাথে আমাদের সম্পর্কের কথা বলেছেন। কেমন হওয়া উচিৎ সেই সম্পর্কে, সেই বিষয়ে আলোচনা করেছেন সৈয়দ মওলানা আবুল আলা মওদূদী রহিমাহুল্লাহ।

আল্লাহর সাথে সম্পর্ক করা মানে সর্বপ্রথম নিজের নিয়তকে ঠিক রাখা। আল্লাহর বিশ্বাসে অটল থাকা। 'তার সন্তুষ্টির জন্য সব কাজ করবো' এই বিশ্বাসকে আরো শক্ত করা। যেকোনো কাজ করবো সেটা যেন হয় মহান রবের জন্য। গরীবদেরকে সাহায্য করবো সেটাও যেন রবের জন্য। দেশের মানুষের মন জয়ের জন্য যেন না হয়। যদি তাই হয় তাহলে দেশের মানুষের মন জয় করা যাবে হয়তো কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যাবে না।

আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখা বা বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন দিক রয়েছে। বিভিন্ন ভাবে করা যেতে পারে। যেমন:
*নফল ইবাদত সমূহ
*আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসা
*আল্লাহর জন্য কাউকে ঘৃণা করা
*দান-সদকা করা
*মানুষকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করা
*জিকিরের মাধ্যমে। ইত্যাদি

→নফল ইবাদত সমূহর মধ্যে উত্তম যেগুলো সেগুলো হলো 'তাহাজ্জদ', 'কোরআন তেলাওয়াত'। এর মাধ্যমে জিকিরের দিকটিও প্রতিফলিত হবে। কেননা আল্লাহ তা'য়ালা বলেছেন,
"তোমার প্রতি যে কিতাব ওহি করা হয়েছে, তা থেকে তেলাওয়াত করো এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করো। নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা করো।" (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৪৫)

আয়াতের দুটি দিক রয়েছে। এক হলো কোরআন তেলাওয়াত, দুই নামাজ। এখান থেকেই বুঝা যায় উত্তম জিকির হলো এই দুইটি।

→দুনিয়ার স্বার্থে যেন কাউকে না ভালোবাসি আমরা। আল্লাহর জন্য অপরকে ভালোবাসবো, আল্লাহর জন্য কাউকে ঘৃণা করবো। কেননা হাদিসে এসেছে,
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যার মধ্যে তিনটি গুণ বিদ্যমান সে ঈমানের স্বাদ পাবে—
(ক) যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে সর্বাধিক ভালোবাসে, (খ) যে শুধু আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসে
(গ) আল্লাহ যাকে কুফরি থেকে মুক্তি দিয়েছেন সে কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে এমনভাবে অপছন্দ করে, যেভাবে অপছন্দ করে আগুনের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৮২৭; মুসলিম, হাদিস : ৯৪)

→এবং বেশি বেশি দান করলে নিজের ছগিরাহ গুনাহ গুলো মাফ হয়ে যায়। আবার আল্লাহও খুশি হোন। তবে সেই দান যেন লোক দেখানো না হয়।

আল্লাহর সাথে যদি সম্পর্কটা আমাদের আরো পাওয়ারফুল হয় তাহলে কোনো বিরোধীশক্তি আমাদেরকে ইসলাম থেকে আলাদা করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।


~আব্দুল্লাহ আল কাফি জোহা

পঠিত : ১০৬৯ বার

মন্তব্য: ০