Alapon

যুবকদের কাজে লাগাতে হবে

বর্তমানে গ্রামের সাধারণ থেকে অতি সাধারণ মানুষ-কৃষক, শ্রমিক, মজুররাও রাজনৈতিক পরিচয় গ্রহণে উৎসাহী হয়ে উঠছে। একসময় গ্রামের সালিশগুলো মুরব্বিদের সমন্বয়ে সম্পন্ন হতো। মুরব্বিদের কথার ওপর কেউ কথা তুলতো না। কিন্তু আজ সালিশগুলো পরিচালনা করছেন কথিত রাজনৈতিক নেতারা। তারা সালিশে যান একদল গুন্ডাপান্ডা সঙ্গে নিয়ে। নেতারা সালিশ দাবিদারের রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণা, অর্থকড়ি, দাপট ও প্রভাবের বিষয় মাথায় রেখে রায় দেন। তাদের কাছে নীতির কোনো বালাই নেই। ভ্রুক্ষেপ নেই ন্যায়-অন্যায়ের।


গ্রামের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রাজনীতি ঢুকে পড়েছে। গ্রামের হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন, এমনকি মসজিদগুলোর কমিটি পর্যন্ত দলীয় বলয়ে গঠিত হয়। ফলে দেখা যায় অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত ব্যক্তিরাও উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতির পদ কলঙ্কিত করছে। গাঁজাখোর ও যৌন হয়রানির মামলায় কারাবরণ করা ব্যক্তি সামাজিক সংগঠনগুলোর আহ্বায়ক হচ্ছে। ফলে সচেতন ও শিক্ষিত মানুষ সমাজবিমুখ হয়ে পড়ছেন। দু-চারজন সমাজপ্রেমী ব্যক্তি এসব বিষয়ে কথা বলতে গেলেও হুমকি, ধমকি ও মামলার শিকার হচ্ছেন। জবাবদিহিতার বালাই নেই কোথাও। এভাবে গ্রামগুলো হারাচ্ছে ইতিহাস-ঐতিহ্য।

এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। ঘুরে দাঁড়াতে হবে সচেতন যুবসমাজকে। রুখে দিতে হবে অপরাজনীতিকে। যুবকরা হচ্ছে সমাজের সবচেয়ে কর্মক্ষম অংশ। পরিবর্তনের জন্য যে শক্তি ও ক্ষমতা প্রয়োজন, তা একমাত্র যুবকদেরই আছে। সামাজিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন তরুণদের দ্বারাই সম্ভব। যুবসমাজের শক্তি, সাহস, বুদ্ধি ও মেধা পুরোপুরি ব্যবহার করা গেলে সমাজ উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে। তারা দেশের সমস্যা চিহ্নিত করে এর সমাধানও করতে পারে। তারা দেশের শিশুদের অধিকার সম্পর্কে শিক্ষা দিতে পারে। অন্যদের প্রেরণা দিতে পারে। ভিন্ন চিন্তা ও উদ্ভাবনের সাহস, অসম্ভবকে সম্ভব, অগম্য পথে গমন করার সাহস, যন্ত্রণা দূর করা, প্রতিকূল পরিবেশের বিপরীতে হাঁটার সৎসাহস শুধু যুবসমাজেরই আছে। আমাদের পৃথিবী হবে দারিদ্র্য, অসাম্য, শোষণ ও প্রতারণামুক্ত। সেখানে বর্ণ, ধর্ম, জাতি, ভাষা, লিঙ্গভেদে কোনো বৈষম্য থাকবে না। এ ক্ষেত্রে যুবকরাই পরিবর্তনের অভিভাবক হতে পারে এবং দ্বন্দ্ব-বিবাদ নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা, প্রযুক্তিগত জ্ঞান, ঐকান্তিকতা ইত্যাদির মাধ্যমে যুবকরা গ্রামের উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। সুতরাং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যুবকদের অংশগ্রহণের বিকল্প নেই।

অতএব সমাজকে পরিশীলিত করতে চাইলে, এগিয়ে নিতে চাইলে, চ্যালেঞ্জ নিতে চাইলে, উন্নয়নের পথে হাঁটতে চাইলে, অচলায়তন ভাঙতে চাইলে, জাতিকে স্বপ্ন দেখাতে চাইলে, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে যুবকদের কাজে লাগাতে হবে। যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে।

মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত ত্বোহা : সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট

[email protected]

পঠিত : ২৪৩ বার

মন্তব্য: ০