Alapon

|| সাতক্ষীরায় জামায়াতের বাড়ীতে বুলডোজার গেলে এদেশের ইসলামপন্থীরা কাঁদে না কেন? || .



গত দুইযুগে যে দুটো ঘটনা সুস্পষ্টভাবে এইদেশের গতিধারা ঠিক করে দিয়েছে-২৮শে অক্টোবর ও কাদের মোল্লার ফাসির রায়-দুটো ঘটনার সাথেই এককভাবে জামাআত ও শিবিরের আদর্শিক,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লড়াই জড়িত। ফলে জামাত খুব ছোট একটা দল হয়েও নব্য ব্রাক্ষণ্যবাদী আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ে নিজেদের ভাগ্য অতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ফেলেছে। ফলে এই দেশের ভাগ্যনির্ধারণী লড়াইয়ে জামাআতের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে।
.
২৮শে অক্টোবর ও কাদের মোল্লার ফাসির রায়ের মধ্য দিয়ে যে নব্য আওয়ামী বাকশাল কায়েম হয়েছে সেই বাকশালের ভুক্তভোগী এখন এইদেশের আপামর জনতা। নব্য বাকশালী জমিনে প্রত্যেকটা নাগরিক ভারনারেবল, প্রত্যেকটা নিঃশ্বাস বিষাক্ত, প্রত্যেকটা পদচিহ্ন কালেমালিপ্ত। এই ব্রাক্ষণ্যবাদী ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রথম ধাপ হচ্ছে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ কায়েমের প্রত্যেকটা উপকরণ খুজে বের করা।
.
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যার সূচনা এবং ফ্যাসিবাদের পুনর্জন্মের পেক্ষাপট মাথায় রাখলে নিঃসন্দেহে বলতে হয় এইদেশের সকল রাজনৈতিক সমস্যার শুরুটা হয়েছে ২৮শে অক্টোবরে ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্যাঙ্গারু ট্রাইব্যুনালে জামাআত নেতাদের ফাসি দিয়ে জামাআত ও শিবিরকে ডেমোনাইজ করার মাধ্যমে। ফলে নব্য আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূচনাটাও হতে হবে জামাআত ও শিবিরকে “ডেমোনাইজ” করার ড্রাকনিয়ান কালচার থেকে বের হওয়ার মাধ্যমে।
.
কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিক বিশেষ করে ইসলামপ্রিয় জনতার মধ্যে এই নিয়ে কোন বিকার পরিলক্ষিত হয় না। জায়নবাদী দখলদার ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিনিদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে, বুলডোজার দিয়ে তাদের বাড়িঘর ধ্বংস করে ঠিক একইভাবে জায়নিস্টদের ধাঁর করা কায়দার আওয়ামী জুলুমবাজেরাও সাতক্ষীরার ইসলামপ্রিয় জনগণকে বাড়িছাড়া করেছে-তাদের আবাসস্থল বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। বর্তমান ভারতেও বিজেপির ফ্যাসিস্ট সরকার মুসলিমদের বাড়িঘর ধ্বংস করে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে।
.
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো বাংলাদেশের ইসলামপ্রিয় জনতা ইসরাইল, ভারতের এই ধরণের কর্মকান্ডের বিরোধীতা করলেও বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মুসলিমদের বাড়িঘর ধ্বংসের কোন প্রতিবাদ করেনি। কেন করেনি? সাতক্ষীরায় যাদের বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছে তারা জামাআত করে বলে? এর কন্সিকুয়েন্স হিসেবেই আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা মোদিবিরোধী বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে নিরাপরাধ ১৭ জন মুসলিমকে শহীদ করার মতো ধৃষ্টতা দেখায়।
.
একই ব্যাপার আমরা লক্ষ্য করি বর্তমান শাতিমবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে। এইদেশের মোটামোটি প্রত্যেকটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শাতিমবিরোধী বিক্ষোভ হলেও এই বিক্ষোভগুলোর স্লোগান প্রায় একই-খুব অল্প কয়েকটা স্লোগানে এই বিক্ষোভগুলোর সমাপ্তি টানা হয়। কেন? কারণ বিক্ষোভে “নারায়ে তাকবীর” বলার স্টাইল শিবিরের “নারায়ে তাকবীর” বলার স্টাইলের সাথে মিলতে পারবেনা, বিক্ষোভের কোন স্লোগান শিবিরের স্লোগানের সাথে মিলতে পারবেনা। মোদ্দা কথা শাতিমবিরোধী বিক্ষোভ শিবিরের বিক্ষোভের সাথে মিলতে পারবেনা।
.
আমি আসলে বুঝি না, আপনাদের কিসের এতো ভয়? যে লগি বৈঠা দিয়ে শিবিরকে মারা হয়েছিলো আপনারা কি সেই লগি বৈঠা থেকে বেচে গিয়েছিলেন? যেভাবে রাস্তাঘাটে শিবিরকে শহীদ করা হয়েছিলো আপনাদেরকেও কি সেভাবে হত্যা করা হয়নি? ক্ষুদ্র এই জীবনে যদি “শিবির” হওয়ার মতো সাহস দেখাতে না পারেন-শিবিরের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে না পারেন-তবে লিখে রাখতে পারেন- এই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ব্রাক্ষণ্যবাদী শিকল থেকে আপনি কোনদিনও মুক্ত হতে পারবেন না।
.
~ Ahmad Ishtiaque Masoud

পঠিত : ৩৬২ বার

মন্তব্য: ০