Alapon

ভারত প্রতিবেশী হিসেবে কেমন বন্ধু রাষ্ট্র....?



ভারত বাংলাদেশের বন্ধু প্রতীম প্রতিবেশী রাষ্ট্র, স্বাধীনতার সময় আমাদের অনেক উপকার করেছে। ভারত আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধকে প্রত্যক্ষ সমর্থন না করলে অবশ্যই আমাদের স্বাধীনতা এত সহজ হত না। তাই ভারতের প্রতি আমাদের স্বাধীনতার জন্য কৃতজ্ঞতা থাকবেই। আসুন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা এবং বর্তমান ভারতের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কের একটি ব্যবচ্ছেদ করা যাক।

১। ভারত ১৯৬৫ সালে শিয়ালকোট লড়াইয়ে সূচনীয় পরাজের কারনে তখনই উপলব্ধি করে দুই পাকিস্তানকে ভাগ করতে না পারলে ভারত কখনোই মাথা উঠাতে পারবে না।

২। মহাত্মা গান্ধী, ইন্দিরা গান্ধিকে উপদেশ দিয়ে গিয়েছিল যে যদি পাকিস্তানকে যদি দুই টুকরা মা করা যায় তাইলে ভারত কোন দিন শান্তিতে থাকতে পারবে মা।

৩। ভারত এই স্বার্থকে উদ্ধারের জন্যই রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং তথা 'র' কে এই দায়ীত্ব দেয় এবং ৭১ সালে সফল হয়।

৪। এ কথা অনস্বীকার্য যে ভারত সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বিশ্ববাসীর ও জাতিসংঘের সমর্থন আদায় করেছে ভারত।

৫। স্বাধীনতার পর পরই ভারত যুদ্ধ পরবর্তী শোষনের কথা সবারই মনে আছে, ক্যান্টনমেন্ট গুলো হতে বেতের চেয়ার গুলো পার্যন্ত ভারতীয় সৈন্যরা নিয়ে গেছে। প্রবাদ চালু হয়েছিল তখন মুজিবের ভাষন, আইয়্যুবের শাসন ও ইন্দিরার শোষন।

৬। রক্ষি বাহিনী দিয়ে হেন কোন অত্যাচার নাই ভারত বাংলাদেশের উপর করে নি। বাংলাদেশের অনেক গৃহ বধুর পেটে আলকাতরা পর্যন্ত লাগিয়ে ছিল এই রক্ষি বাহিনী।

৭। ভারত এত বন্ধু প্রতিম হয়েও বাংলাদেশের উজানে বাঁধ দিয়ে পানি সরিয়ে নিয়ে বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশকে প্রতিবছরই বন্যার পানিতে চুবায়।

৮। ভারত নিজে ট্রানজিটের সকল সুবিধা বাংলাদেশ হতে আদায় করলেও বাংলাদেশকে দিচ্ছে কাচকলা। ভারতীয়রা আশুগঞ্জ হতে আগরতলা ট্রানজিট রাস্তা এবং আখাউড়া হতে আগরতলা রেল লাইন অবাধে নিয়ে গেলেও বাংলাদেশকে কসবা ও সালদা সীমান্তে পুরাতন রেল লাইন সংস্কার করতে দিচ্ছে না। বরং তারা এই দ্বিপাক্ষিক বিষয়টি আলোচনা না করে বাংলাদেশের বার বার অনুরোধের পরও আন্তর্জাতিক আদালতে নালিশ করেছে। অথচ এই রেললাইন দিয়ে ভারতের পন্যই চট্টগ্রাম হতে আগরতলা যাবে।

৯। ভারত এমন একটি রাষ্ট্র যারা বাংলাদেশের টাকায় কেনা ভ্যাক্সিন বাংলাদেশকে না দিয়ে নিজেরা আগে ব্যবহার করেছে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের যখন প্রয়োজন কমে গেছে তখনই বাংলাদেশকে দিয়েছে, কিন্তু এটা একটা আন্তর্জাতিক অপরাধ।

১০। চালের সংকটে চাল রপ্তানি বন্ধ, বন্যার সময় পানির বাঁধ ছেড়ে দেওয়া, টিকার সংকটে টিকা বন্ধ করে দেয়া এগুলো বন্ধুর লক্ষন নয়, এটা স্বার্থপরের লক্ষন।

১১। ভারতের বিএসএফ মায়ানমার, চীন, ভুটান, নেপাল ও পকিস্তান সীমান্তে একটা পাখিও গুলি করার সাহস দেখায় না কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্তে প্রায় প্রতি দিনই মানুষ পাখির মত গুলি করে হত্যা করে, এটা কি বন্ধু না শত্রুর লক্ষন।

১২। আপনারা জানেন যে ভারত তার পররাষ্ট্র নীতিতে চাণক্যের নীতি অনুসরন করে, এ নীতির মূলমন্ত্র হল প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে সর্বদাই দাবিয়ে রাখতে হবে, তাদের হতে যা পার সুবিধা আদায় কর কখনোই কিছু দিবে না। এমন নীতিতে যারা চলে এরা কোন দেশের বন্ধু হলে তাদের শত্রু থাকার কি দরকার?

১৩। ভারত তাদের নিজেদের স্বার্থেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় উপকার করেছে, বাংলাদেশের মানুষকে ভালবেসে নয় এটা সবার মনে রাখতে হবে। যে ভারত নিতেই জানে সে ভারত কাউকে কিছু বিনা লাভে কিছু দিবে এটা ভাবা বোকামী ছাড়া আর কিছুই না।
সচেতন মহলের চিন্তার বিষয় হল এ ভারত আমাদের যতদিন বন্ধু আছে ততদিন আমাদের শত্রুর কি প্রয়োজন আছে?

ডা.বশির আহাম্মদ।

পঠিত : ৩৩৯ বার

মন্তব্য: ০