Alapon

হ্যাঁ, তিনিই আমাদের রাসুল সাল্লাহুআলাইহিস সালাম...



তিনিই আমাদের রাসুল (সাঃ) যার আগে পরে সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়ার পর ও তিনি প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজে শত বার তাওবা করতেন। তিনি প্রতি রাতে তাহাজ্জুদের সালাতে দাড়াতেন আর এই দাঁড়ানো এতো টাই দীর্ঘ হত যে, তাঁর পা ফুলে যেত।

যখন তাঁর স্ত্রী তাকে প্রশ্ন করতো যে, আপনার এতো কষ্ট করার কি দরকার? আপনার তো আগে পড়ে সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়েছে। তিনি বিনয়ের সাথে উত্তর দিতেন, আমি কি আল্লাহ্‌র কাছে কৃতজ্ঞ হবোনা?

তিনিই আমাদের রাসুল (সাঃ) যিনি সন্তানের মৃত্যু তে কেঁদেছেন। স্ত্রীদের সাথে অভিমান করে ঘর থেকে বের হয়ে গেছেন। যিনি ঞ্জের ছেড়া জামা নিজের হাতেই সেলাই করেছেন। যিনি যুদ্ধ করেছেন এবং যুদ্ধে নিহত হওয়া সাহাবীদের কে বুকে নিয়ে অঝোরে কেঁদেছেন।
যিনি নিজে কবরে নেমে তাদের কবরস্থ করেছেন। যিনি কিশোরী স্ত্রীর সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করেছেন। প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজার মৃত্যুতে ব্যাথিত হয়েছেন।

মাঝ রাতে তাঁর কবরের পাঁশে গিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদেছেন। তিনি আমাদের মতই একজন মানুষ, তিনিয় আমাদের রাসুল (সাঃ)। দিনের পর দিন যার বাড়ির চুলায় আগুন জলতোনা, পানি আর খেজুর খেয়ে মাসের পর মাস চলে যেত, খুদার্ত সাহাবী এসে খুদার জালায় নিজের পেটে পাথর দেখালে, তিনি নিজের জামা তুলে দেখাতেন তাঁর পেটে এর চেয়ে বেশি পাথর বাধা। যিনি এক তরকারি বেশি দিয়ে আহার করেন নি।

যার ঘর ছিল মাটির, বাড়ি ছিল খেজুরের ছোবলার। আল্লার কসম! তিনিই আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সাঃ) যিনি বদরের প্রান্তরে অল্প কিছু সন্য নিয়ে বিশাল শত্রুর মোকাবিলা করেছিলেন। যিনি তায়েফের প্রান্তরে পাথরের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়েও আল্লার কাছে হাত উঠিয়ে বলেছিলেন, হে আল্লাহ্‌! তাঁরা অবুঝ, তুমি তাদের ক্ষমা করে দাও, তিনিই আমাদের রাসুল্লুল্লাহ (সাঃ) যিনি তাঁর পিতা – মাতার জন্য দোয়া করার অনুমুতি পান নি। জনি মৃত্যুর সময় ও অচেতন, অবচেতন অবস্থায় বার বার বলে যাচ্ছিলেন উম্মাতি, উম্মাতি, উম্মাতি। সাহাবীদের সাথে চলতে গিয়ে তিনি কেঁদে উঠলেন, সাহাবীরা কান্নার কারন জিজ্ঞেশ করলে তিনি বললেন, আমি আমার ভাইদের জন্য কাঁদছি। সাহাবীরা জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ আমরা কি আপনার ভাই নই?

তিনি জবাব দিলেন তোমরা তো আমার সাথী, আমার ভাই হল তাঁরা, যারা আমার পরে আসবে এবং আমাকে না দেখেই আম্র উপর ঈমান আনবে। হ্যাঁ তিনিই আমাদের রাসুল (সাঃ) যিনি আমার আপনার জন্মের আগেই আমাদের জন্য চোখের পানি ফেলে গেছেন। তিনিই আমাদের রাসুল (সাঃ) যার নিজ আত্মীয় – স্বজন লোকেরাই তাকে হত্যার জন্য উথে পড়ে লেগেছিল। যিনি আল্লার দিনের জন্য আত্মীয় স্বজন ঘর বাড়ি সব কিছু ছেরে গেছেন।
যিনি শত্রুদের হাত থেকে বাঁচতে পাহাড়ে পাহাড়ে গুহায় গুহায় ঘুরে বেড়িয়ে ছিলেন।

মুশরিকরা যখন একের পর এক ধন – সম্পদ ও নারীর লোভ দেখাচ্ছিল, আমার এক হাতে চন্দ্র আরেক হাতে সূর্য এনে দিলেও আমি এই সত্য প্রচার থেকে বিরত হব না।

হয় এই পথে বিজয় লাভ করব, নয় এই পথেই ধ্বংস হয়ে যাব। হ্যাঁ তিনিই আমাদের প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ)। যার জন্য সাহাবীরা আপন পিতা ভাই এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধ রত মুহাজির ও আনসারদের মন খারাপ আবেগ দেখে তিনি বললেন যে, তাঁরা দুনিয়া পেল, আর তোমরা তোমাদের রাসুল কে পেলে?

চারিদিকে কান্নার রোল পরে গিয়েছিল।

তিনিই আমাদের রাসুল (সাঃ) যিনি ক্ষোদ অমুসলিমদের কাছেও আস্থার প্রতীক ছিলেন। অমুসলিমরা তাঁর কাছে বিচার ফায়সালার জন্য আসত। তাঁরা জানতো মুহাম্মাদ আর যাই হোক অবিচার করবেনা। যিনি আমাদের জন্য হাসরের মাঠে আল্লার কাছে শাফায়াৎ করবেন, আমাদের কে হাউজে কাউসারের পানি পান করাবেন।

তিনিই আমাদের রাসুল (সাঃ) কিন্তু সে প্রিয় নবীর সাথে কি আমরা ইনসাফ করতে পেরেছি? আমরা কি তাঁর প্রতি আমাদের হক আদায় করতে পেরেছি?
আমাদের সন্তানরা আজ কাদের দেখে বড় হচ্ছে? কাদের কে রোল মডেল বানাচ্ছে? কোথায় আজ প্রিয় নবীর সুন্নাত, আর কোথায় নবীর আদর্শ?

আমাদের প্রজন্ম আজ প্রচার আচরনে, পোষাকে – আশাকে কাদের অনুসরণ করছে?

তাঁর অনুসরণ করছে টিভি তারকাদের যারা জাহেলিয়াতের পথে সর্বদা আহব্বান করে। আমাদের সন্তারা আজ গ্যাং স্টার হতে চায়, নিজের মা বাবা কে তাঁরা কুপিয়ে মারে। তাঁরা নিজেদের জীবন কে উপভোগ করার জন্য নিজের পিতা মাতা কেই হত্যা করে। কিন্তু কেন তাঁরা রাসুল কে অনুসরণ করতে চায়না? কেন তাঁরা রাসুল কে আদর্শ বানাতে চায়না? কারন আমরা আমাদের প্রজন্মের কাছে সেই মানুষটির জীবনি তুলে ধরতে পারিনি। রক্ত, ঘাম, আর অস্রুময় সেই জীবন টা পড়ে আছে অজত্নে, অবহেলায়। তাই আসুন রাসুলের আদর্শ কে ছড়িয়ে দেই সবার মাঝে।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে, আসুন প্রিয় নবীর প্রতি আমরা আমাদের হক আদায় করি।
সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

পঠিত : ৭৬৫ বার

মন্তব্য: ০