Alapon

হজ্জে এসেও জিনা !!



প্রথমেই বলে নেই, ঘটনাটি যে ভাইয়ের তার অনুমতি নিয়েই লেখা হচ্ছে এবং তার কোন পরিচয়ও প্রকাশ করা হচ্ছে না। তাই এটা গীবত এবং গোপন গুনাহ প্রকাশের ভেতর পড়বে না ইন শা আল্লাহ।

গতকাল ফজরের পর এক ভাইয়ের সাথে মসজিদুল হারমের চত্তরে দেখা হয়। ম্যাসেঞ্জারে নক করে খুব জরুরী একটি প্রয়োজনে দেখা করতে চাচ্ছিলেন। সেই সুবাদে আমরা মিট করি।

কী ব্যাপার, জানতে চাইলে তিনি বেশ অনেকক্ষন কোন কথা বলতে পারছিলেন না কান্নার কারনে। পরবর্তীতে কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর বললেন, ভাই! আমি খুব বড় এক গুনাহতে লিপ্ত হয়ে গিয়েছি।

বললাম, আল্লাহ তো সব গুনাহই মাফ করেন। আর আপনি আছেনও অনেক পবিত্র একটি জায়গায়। তাওবা করেন, ইন শা আল্লাহ আল্লাহ তাআলা সব গুনাহই মাফ করবেন। আমাকে ডিটেইলস বলার দরকার নেই। উনি বললেন, না ভাই! আপনি একটু শুনেন এবং পরামর্শ দিন।

রাজি হওয়াতে তিনি যেই গুনাহের বিবরন দিলেন, গায়ের পশম দাড়িয়ে যাওয়ার মত।
সংক্ষেপ কথা হলো, তার পরিচিত একজন মহিলা এবার মাহরাম ছাড়া সম্পুর্ন একা হজ্বে এসেছেন। এজেন্সি থেকে ব্যবস্থা করেছে। অন্যান্য মহিলাদের সাথে তিনিও চলে এসেছেন। তো হজ্বের আগে থেকেই তিনি বিভিন্ন বিষয়ে জটিলতায় পড়ছেন। খাবার দাবারে সমস্যা, শারিরিক অসুস্থতা ইত্যাদি। যেহেতু বাকি সবাই তাদের ফ্যামিলির সাথে এসেছেন, তাই কারো থেকে সেভাবে হেল্পও পাচ্ছেন না।

এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে সেই মহিলা এই ভাইয়ের কাছে হেল্প চায়। এবং সেই ভাইও মানবতার খাতিরেই তাকে হেল্প করা শুরু করেন। একটা পর্যায়ে তারা একসাথেই যেয়ে হোটেল থেকে খেয়ে আসতেন, মসজিদে একসাথে আসতেন, এমনকি সেই ভাই আরাফা থেকে মুযদালিফাতে আসা, কংকর মারাসহ যাবতীয় কাজগুলোতে তাকে পাশে থেকে সহযোগীতা করতে থাকেন।

আশা করছি, কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারছেন, সহযোগীতার উদ্দেশ্যে প্রথমে এগিয়ে এলেও তাদের ভেতরকার সম্পর্ক আরও এডভান্স হয়ে গিয়েছে।

হজ্বের পর। অফুরন্ত সময় সবার। কোন কাজ নেই। দুনিয়াবী ব্যস্ততা নেই। সেই ভাই প্রতিদিন দেখা করতে তার হোটেল যান। গল্পগুজব করেন। অবশেষে যা ঘটার তাই ঘটে। কোন এক সন্ধ্যায় তারা চুড়ান্ত পাপে লিপ্ত হয়ে পড়েন।

অবাক করা বিষয় হলো, এই দুজনই বিবাহিত। দেশে তাদের ফ্যামিলি আছে। এবং তাদের ভেতর হজ্বে আসার আগে কেবল হাই/ হ্যালো ছাড়া আর কোন ধরনের কোন সম্পর্কই ছিল না।
———————-
এই ঘটনায় কে বেশি দোষী কে কম, তা নির্ণয়ের জন্য এই পোস্ট দেয়া হয় নি। গোনাহ দুজন থেকেই হয়েছে, তাওবা করা উভয়ের জন্যই জরুরী।
তবে সর্বপ্রথম যেই ভুলটা হয়েছে, তা হলো সেই বোনের মাহরাম ছাড়া হজ্বে আসা। আল্লাহ এবং তার রাসুলের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তিনি যদি এখানে না আসতেন, এরকম অপরাধে তিনি জড়াতেন না, অন্যকেও লিপ্ত করতেন না। নানা ধরনের লজিক এবং যুক্তি আমরা দেখালেও, খাইর বারাকাহ এবং আমানের ফায়সালা যে ১৪০০ বছর আগের সেই রাসুলের পরামর্শের ভেতরই নিহিত, তা আমাদের অনেকে মানতেই চান না।
তাছাড়া কেবল এই গুনাহের জন্য বলছি না, হজ্জ উমরাহর সফর অন্য যে কোন সফর থেকেই ভিন্ন। এই পুরো সফরটাই একদিক থেকে যেমন ইবাদত, তেমনি এখানে এমন কিছু কার্যক্রম রয়েছে, যেগুলো একজন মাহরাম ছাড়া একজন মহিলার জন্য সম্পন্ন করা সো টাফ।
তাই যারা সামনে একাকী সফরের চিন্তা করছেন, তারা আশা করি আরেকবার একটু ভেবে দেখবেন।

পঠিত : ৫০১ বার

মন্তব্য: ০