Alapon

বাংলাদেশের জনসংখ্যা আসলে কত?



২০০৭ সালে আমাদের জনসংখ্যা ছিল ১৫ কোটি। ১৫ কোটি মানুষের ৩০ কোটি হাত নামে একটা গান তখন বিটিভিতে প্রচার হতো। ২০১০ সালে আমাদের জনসংখ্যা ১৬ কোটি হিসেবে প্রচার পায়। ১১ সালে ছাত্রলীগ কর্মীদের দিয়ে একটা ভুয়া আদমশুমারী করা হয় সেখানে প্রায় ১৫ কোটি হিসেব দেখানো হয়।

এরপর পরিসংখ্যান ব্যুরোর বরাত দিয়ে ২০১৭ সাল থেকে আমাদের জনসংখ্যা সাড়ে ১৭ কোটি দেখানো হয়। এই কোভিডের শুরুতেও পরিসংখ্যান ব্যুরো একই কথা জানিয়েছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর জানিয়েছে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৮ কোটি।

প্রধানত দুটি উৎস থেকে দেশের জনসংখ্যাবিষয়ক তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়। প্রথমত, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) নিয়মিত জনসংখ্যা-সংশ্লিষ্ট নানা তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করে। দ্বিতীয়ত, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর জনসংখ্যার কিছু তথ্য দেয়। অধিদপ্তর জনসংখ্যা বিষয়ে কাজ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান।

২১ জুলাই পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ কোটি বা তার কিছু বেশি। অথচ ঐ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের দেওয়া হয় একটি বিশেষ প্রকাশনা। প্রকাশনায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানুর লেখায় বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ। দেশের জনসংখ্যা ১৮ কোটি।

অন্যদিকে জনসংখ্যা নিয়ে পরিসংখ্যান ব্যুরো দিচ্ছে ভিন্ন তথ্য। ‘কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনের উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নির্ধারণের সুবিধার্থে প্রাক্কলিত জনসংখ্যা’-এর তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দিয়েছিল পরিসংখ্যান ব্যুরো। পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছিল, ২০২১ সালের ১ জুলাই দেশের জনসংখ্যা ছিল ১৭ কোটি ৩ লাখ ১৭ হাজার ৭৭।

২০২১ সালের ১ জুলাইয়ের পর এক বছর পার হয়েছে। এই এক বছরে দেশের জনসংখ্যা বেড়েছে।

জনসংখ্যাবিদেরা বলছেন, দেশে প্রতিবছর ৩২ থেকে ৩৩ লাখ নতুন শিশু জন্ম নেয়। এক বছরে শিশুসহ প্রায় আট লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব হিসাব অনুযায়ী, দেশে মোট জনসংখ্যার সঙ্গে প্রতিবছর ২৪ থেকে ২৫ লাখ মানুষ যুক্ত হয়। পরিসংখ্যান ব্যুরোর দেওয়ার প্রাক্কলিত জনসংখ্যার সঙ্গে এই সংখ্যা যোগ করলে দেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি ৩০ লাখ।

এদিকে গত বছর কালের কন্ঠ সূত্রে জানা যায় দেশের মানুষ ১৭ কোটি ২০ লক্ষ হলেও জন্ম নিবন্ধন করেছে ১৮ কোটির বেশি। এই মাসের শুরু থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে এই আদমশুমারীতে আমাদের জনসংখ্যা হবে সাড়ে ১৬ কোটি। আজ সেই ঘোষণাই দেওয়া হলো।

১১ বছর পর গত জুনে দেশে ষষ্ঠ জনশুমারি হয়। ১৫ জুন জনশুমারি শুরু হয়ে চলে ২১ জুন পর্যন্ত। ষষ্ঠ এই জনশুমারি করা হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে। আগের পাঁচটি জনশুমারি হয় ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। এখানেও ব্যাপক দুর্নীতির হয়েছে বলে জানা যায়। ঢাকায় বহু মানুষ অভিযোগ করেছে তাদের বাসায় গণনা করার জন্য কেউই যায় নি।

২০১১ সালের পঞ্চম জনশুমারিতে দেশের জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৯৮ লাখ। ১৯৭৪ সালের প্রথম আদমশুমারিতে জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ১৫ লাখ।

পঠিত : ৮৭৮ বার

মন্তব্য: ০