Alapon

"দ্বীন বহির্ভূত ভ্রান্ত দ্বীনি সার্কেল যারা"



‘দ্বীন’ (دين) শব্দটাকে ধ্বংস করে ফেলেছে ১৪-১৫-১৬-১৭ সালের নতুন উঠতি ইসলামী সাহিত্য পড়ুয়ারা। শেষ পেরেকঠোকা দিয়েছে এরা করোনার সময়। ফ্রি সময়, কাজ নেই বই পড়া শুরু করছে। নাম দিয়েছে ‘দ্বীন প্র‍্যাক্টিস’(!) । সুযোগ পেয়েছে। বাই চান্স লেখক হয়েছে, বই লিখছে আবার নাম দিচ্ছে, ‘দ্বীন প্র‍্যাক্টিস’।

এখনো তালাকের ফতওয়া থেকে বের হতে না পারা শ্রেণীটাও নাকি দ্বীন প্র‍্যাক্টিস করছেন। নিরেট সুদী ব্যাংকে চাকরি করা ছেলেটা, নিরেট সরকারী আমলাতন্ত্রর কাছে ধরণা দেয়া ছেলেটা ইসলামী বই পড়ে ও লিখে দ্বীনি হয়ে যাচ্ছে।

ইসলামী আইন কায়েম, রাসুলুল্লাহ সা. এর নবুয়্যতী আইন প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতা এসব ছেলেদের কাছে নেই। কিন্তু এরা হয়ে যাচ্ছে দ্বীনি বন্ধু, দ্বীনি সার্কেল ও দ্বীনি ভাই।

এদিকে এদের এসব ঠুনকো দ্বীনি পরিবেশকে যারা সমালোচনা করছেন তারাও দ্বীন শব্দটির মৌলিক সেন্স ধরে রেখে সমালোচনা করতে পারছেন না।

আপনারা দ্বীন শব্দটির সঠিক অর্থ শিখুন। প্রয়োজনে মাওলানা সাহেবদের নিকট শিখুন। পবিত্র কুরআনে দ্বীনকে বলা হয়েছে আইন, আনুগত্য, সর্বময় ক্ষমতা ও কতৃত্ব। একমাত্র রাস্তা বা উপায়।

দ্বীন হচ্ছে এমন একটি কাঠামো যার কাজ শুধু পরিচালনা করা ও আদেশ জারি করা। একজন ব্যক্তি পূর্ণরূপে যখন আল্লাহর দাসত্ব করে তখন বলা যায় তিনি দ্বীনকে খালেসভাবে মান্য করেছেন।

পোলাপান সুদখোরের পাশে বসে নামাজ পড়ে, সুদবীহিন সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সাহস করতে পারে না। ঘুষখোরকে ঘুষ দিয়ে চাকরি করে, এই সংস্কৃতি উচ্ছেদ করার জন্য কোনো কার্যসিদ্ধি নেই। ফাসেক সরকারের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ কোনো কার্যক্রম নেই এদের।

নবীদের মূল কাজ ছিলো মানুষকে দাওয়াত দিয়ে এক ইলাহ, একটি দ্বীন ও একই আনুগত্যের মধ্যে নিয়ে এসে একটি সার্বিক তামাদ্দুনিক পরিবর্তনের আহবান করা।

দ্বীনের কাজ হলো একটি শক্তিকে উচ্ছেদ করে বিকল্প ইলাহী শক্তিকে কায়েম করা। কায়েম না হওয়া পর্যন্ত STRIVE করা। বিদ্রোহী হওয়া। বিদ্রোহ করে একটি অসৎ ও দুর্নীতিপ্রবণ সমাজকে ধ্বংস করে নতুন সমাজ কায়েম করার জন্য প্রাণ, জান দিয়ে চেষ্টা করা।

একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়াকে একটি সামগ্রিক তামাদ্দুনকে এই ছেলেগুলো কিছু ফ্যান্টাসীমূলক কাজ, কিছু কালারফুল বই লিখে, নতুন নতুন অনুদিত বই পড়ে একেই দ্বীন বানিয়ে দিয়েছে। এদের থেকে ও এদেরকে যারা সমালোচনা করেন- উভয় শ্রেণি থেকে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।

দ্বীনে আছে ত্যাগ ও পরীক্ষায়, জুলুম ও শাহাদাতে। دين হলো-প্রভূত্ব ও প্রাধান্য, শক্তি ও আধিপত্য, আনুগত্য ও দাসত্ব। প্রতিফল ও কর্মফল এবং পথ-পন্থা ব্যবস্থা ও আইন। আর এদের মধ্যে রয়েছে শুধু চাকচিক্য ও আকর্ষণ। এরা হচ্ছে দ্বীন বহির্ভূত ভ্রান্ত দ্বীনি সার্কেল।

~সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ তোফায়েল

পঠিত : ৭৮৫ বার

মন্তব্য: ০