Alapon

কথিত মাহদি জুহাইমাইন ট্রাজেডি : কাবা চত্বরে সাড়ে চারশো মানুষের প্রাণহানী



আজ থেকে ৪৩ বছর পূর্বে— খ্রিষ্টীয় ১৯৭৯ সাল; আর আরবি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১৪শ হিজরির ১ মহররম। দিনটি খুবই হিসেব করে বাছাই করা হয়েছিল। ১ মহররম এবং ১৪শ হিজরি। সেদিন একটা নতুন শতাব্দীর শুরু, হিজরি ১৪০০ সালের প্রথম দিন।
.
পৃথিবীর নানা প্রান্ত হতে আসা মুসলিমরা মসজিদুল হারামে ফজরের নামাজে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায়। ফজরের নামাজ মাত্র শেষ হতে চলেছে। হঠাৎ মুসল্লিদের মধ্য থেকে সাদা কাপড় পরা প্রায় শ-দুয়েক লোক অস্ত্র হাতে বেরিয়ে এলো। এই অস্ত্র তারা সেখানে আগেই মজুদ করে রেখেছিল। এদের কেউ অমুসলিম ছিল না; সবাই মুসলিম। তারা নিয়মিত কুরআন পড়ত; ইসলামের নানা বিষয় সম্বন্ধেও তাদের জানাশোনা ছিল। তাদের অনেকের পিতা প্রসিদ্ধ আলিম হিসেবেও পরিচিত ছিল। অথচ তারা চিন্তা-চেতনায় ছিল কট্টরপন্থি। তারা মনে করেছিল, কিয়ামতের সময় অতি সন্নিকটে। আর সেই পরিপ্রেক্ষিতে তারা ভেবেছিল যে, নতুন হিজরির প্রথম দিনই হলো বিশ্ববাসীকে ইমাম মাহদি উপহার দেওয়ার শ্রেষ্ঠতম দিন।
.
অস্ত্র নিয়ে কাবায় প্রবেশ করে তারা জামাতে ফজরের নামাজ পড়ল। কয়েকজন অস্ত্রধারী গিয়ে অবস্থান নিল ইমামের চারপাশে। ইমাম যখন নামাজ শেষ করলেন, অস্ত্রধারীরা মাইক্রোফোনের নিয়ন্ত্রণ নিল। তারপর তারা মাইকে এমন এক ঘোষণা দিলো, যা শুনে সবাই হতবাক হয়ে গেল।
অস্ত্রধারীদের একজন মাইকে বলছিল, ‘আজ আমরা ইমাম মাহদির আবির্ভাব ঘোষণা করছি। তিনি বিশ্বে ন্যায়বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করবেন। বিশ্ব এখন অন্যায়-অত্যাচার এবং অশান্তিতে ভরে গেছে। তাই আপনারা সবাই আসুন, দলে দলে ইমাম মাহদির নিকট বাইয়াত গ্রহণ করুন।’
.
তারপর তারা গ্রুপের মধ্য থেকে একজন ব্যক্তিকে সামনে এনে সবার সামনে পরিচয় করিয়ে দিলো। লোকটির নাম মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ আল কাহতানি। সশস্ত্র ব্যক্তিরা দাবি করল, ‘এই মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহই হচ্ছেন ইমাম মাহদি; যিনি আসবেন বলে রাসূল সা. ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।’
.
এটি পয়লা মহররম, অর্থাৎ হজের মাত্র তিন সপ্তাহ পরের ঘটনা। তাই নানা দেশ থেকে আসা হাজিরা তখনও মক্কায় অবস্থান করছিল। এই অস্ত্রধারীরা বন্দুকের ভয় দেখিয়ে সবাইকে বাইয়াত নিতে বাধ্য করেছিল। সেইসাথে তারা অনেককে গুলি করে আহত, এমনকি হত্যাও করেছিল। ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই যেন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিল। এরপর তারা মসজিদুল হারামে প্রবেশের সবগুলো দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। তারপর মেশিনগানসহ নানাবিদ অস্ত্র দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করে। কাবার মিনারগুলোতে নিজেদের সেনাদের প্রহরী হিসেবে নিয়োজিত করে।
.
অন্যদিকে এই ঘটনায় সৌদি সরকার হয়ে পড়ে হতবিহ্বল। কারণ, সৌদি প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এ জাতীয় ঘটনার বিষয়ে আগাম কোনো তথ্য ছিল না। তারা ছিল সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত। তাই স্বাভাবিকভাবেই অপ্রত্যাশিত এ ঘটনায় তারা হতচকিত হয়ে যায়। তাই এই ঘটনার পালটা পদক্ষেপ নিতে লম্বা সময় লেগে যায়।
.
এই অস্ত্রধারীদের কারণেই নতুন বছরের প্রথম দিনে হারামের মতো পবিত্র স্থানে খুন ও রক্তপাতের ঘটনা ঘটে। হারামের ভেতরে এই ধরনের হামলায় সৌদি প্রশাসন রীতিমতো ঘাবড়ে যায়। তারা প্রথম দফায় যে পুলিশ ও সেনাদের পাঠিয়েছিল, তাদের সবাইকে মিনারে অবস্থানরত বিদ্রোহীরা গুলি করে হত্যা করে। সরকার পুরো ঘটনা মিডিয়া থেকে আড়াল করার চেষ্টা করে; ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায়। ফলে, নানা ধরনের গুজবের ডালপালা বিস্তৃত হয়। কারা কাবার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিল— এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে নানা ধরনের আলোচনা-পর্যালোচনা শুরু হয়ে যায়।
.
খানায়ে কাবায় টানা দুই সপ্তাহ সব ধরনের নামাজ ও তাওয়াফ বন্ধ থাকে। ভেতরে যারা আটকা পড়েছিল, তারা অনাহারে মারা যাওয়ার উপক্রম হয়। কারণ, তাদের জিম্মি করা হয়েছিল, অথচ ন্যূনতম খাবারও প্রদান করা হচ্ছিল না। যখন তারা কাবা দখল করে, তখন অন্য সবার সাথে নারী ও শিশুরাও আটকা পড়ে। পরে অবশ্য নারী ও শিশুদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পুরুষ হাজি ও তাওয়াফকারীরা বেশ কয়েকদিন ভেতরে বন্দি ছিলেন। পরে তাদেরও ছেড়ে দিয়ে গোটা হারামের অভ্যন্তরে শুধু বিদ্রোহীরাই অবস্থান নেয়।
সেদিন যে সশস্ত্র গ্রুপটি পবিত্র কাবা ও হারাম শরিফের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল, তারা ছিল সালাফিপন্থি একটি কট্টর গোষ্ঠী। তাদের নেতা ছিল এক বেদুইন— জুহাইমান আল ওতাইবি।
.
সৌদি সরকার কোনোভাবেই এ সমস্যার সমাধান করতে না পেরে সিদ্ধান্ত নিল সন্ত্রাসীদের অনাহারে মারবে। কিন্তু দিনকয়েক বাদেই বোঝা গেল, তাদের কাছে প্রচুর খেজুর মজুদ রয়েছে, আর জমজম থাকায় পানিরও সমস্যা নেই। এরপর সৌদি সরকার বাধ্য হয়ে সেখানে কয়েকশো সৈন্য ও কমান্ডো দল পাঠায়। পাঠানো হয় সাজোয়া যান। মক্কার আকাশে উড়তে থাকে যুদ্ধবিমান। কাবা ও হারাম শরিফের ভেতরে সামরিক অভিযান চালানোর জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষ দেশটির ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে অনুমতি নিল। পরবর্তী কয়েকদিন সেখানে তীব্র লড়াই শুরু হলো। সরকারি বাহিনী একের পর এক হামলা চালাতে লাগল। তাতে মসজিদের একটি অংশ বেশ ক্ষতিগ্রস্তও হলো।
.
সৌদি সৈন্যরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল কাবার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার। সৌদি বাহিনীর কিছু এপিসি (সশস্ত্র সাজোয়া যান) মূল মসজিদ চত্বরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছিল। এক পর্যায়ে তারা ঢুকতেও সক্ষম হয়। কিন্তু জুহাইমানের লোকজনও ছিল প্রশিক্ষিত। বেশ কিছু কৌশল তারা রপ্ত করেছিল। তাদের কাছে ছিল গ্রেনেড ও ককটেল। তারা এপিসির ওপর গ্রেনেড ছুড়ে মারে। তাতে তা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত সৌদি বাহিনীর অপর একটি সাজোয়া গাড়ি মসজিদ চত্বরে প্রবেশ করতে সমর্থ হয়। তারা মসজিদের দ্বিতীয় তলার গ্যালারিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিলে বেশিরভাগ বন্দুকধারী বিদ্রোহী মসজিদের ভূগর্ভের করিডোরে গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরবর্তী কয়েকদিন তারা সেই অন্ধকার জায়গা থেকেই লড়াই চালিয়ে যায়।
.
মসজিদুল হারাম ঘিরে এই অবরোধ অবসানের জন্য সৌদিরা তখন ফরাসি সামরিক অধিনায়কদের সঙ্গেও শলাপরামর্শ করে। ফরাসি বিশেষ কমান্ডো বাহিনীর এই অধিনায়কদের গোপনে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। তারা পরামর্শ ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছিল। এই কমান্ডোরা মসজিদের ভূগর্ভে যেখানে সন্ত্রাসীরা লুকিয়ে আছে, সেখানে বিপুল পরিমাণ সিএস গ্যাস ছাড়ার পরামর্শ দেয়। উদ্ধার অভিযানের শুরুতে কয়েকবার আন্ডারগ্রাউন্ড সুড়ঙ্গ দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করা হয়। লুকিয়ে থাকা জায়গায় গ্রেনেড মেরে সন্ত্রাসীদের খোলা জায়গায় চলে আসতে বাধ্য করা হয়। এরপর খুলে দেওয়া হয় মসজিদের ভেতরকার সকল পানির পাইপ। ফলে কাবার ভেতরে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। সন্ত্রাসীরা সিক্ত অবস্থায় পানিতে দাঁড়িয়ে থাকে। এরপর পানিকে বিদ্যুতায়িত করা হয়। বাকিদের কাবু করা হয় টিয়ার গ্যাস ছুড়ে।
.
শেষ পর্যন্ত যে সন্ত্রাসীরা বেঁচে ছিল, তারা আত্মসমর্পণ করে। আর বাকি প্রায় কয়েকশো মানুষ এই দুই সপ্তাহের অবরোধের জেরে ও সংঘাতে মৃত্যুবরণ করে। এর মধ্যে যেমন সাধারণ মানুষ ছিল, তেমনি ছিল শতাধিক সৌদি পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তা, আর ছিল শতাধিক বিদ্রোহী সৈন্য। মসজিদুল হারামের পিলারকে আড়াল করেই উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ফলে কাবা চত্বরেই শত শত মানুষের লাশ পড়ে থাকে। রক্তে পিচ্ছিল হয়ে যায় গোটা এলাকা।
.
মা’সা অর্থাৎ যে পথ দিয়ে সাফা ও মারওয়ার মাঝখানে সায়ি করা হয়, সেখানে বিদ্রোহীরা আশ্রয় নেওয়ায় সৌদি সেনাদের ট্যাংক সেখানেও প্রবেশ করে। ট্যাংকের আক্রমণে সেখানকার একটি অংশ ভেঙে যায়। আর কথিত মাহদি তখন বেরিয়ে এসে ট্যাংকের সামনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। ফলে সেই ট্যাংকটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এই ঘটনাকে বিদ্রোহীরা বিরাট বিজয় হিসেবে মূল্যায়ন করে। কারণ, তাদের বিবেচনায় এই কাহতানি সত্যিকারের মাহদি হওয়ার কারণেই আল্লাহ তাকে এভাবে সাহায্য করেছেন। কাহতানির অনুসারীরা মনে করে, তারাই সত্যের পথেই আছে। আর সেই আত্মবিশ্বাসের জোরেই তারা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সাধারণ বেসামরিক মানুষ মারা যায় ২৫৫ জন, আর ৫৬০ জন আহত হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মারা যায় ১২৭ জন, আর আহত হয় ৪৫১ জন। সেই ঘটনায় কথিত মাহদিও নিহত হয়। জুহাইমান ও তার ৬৭ অনুসারী গ্রেফতার হয়। পরে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
.
এই বিদ্রোহীদের মধ্যে সৌদি, ইয়েমেনি, পাকিস্তানিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক ছিল। এমনকি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও একজন নাগরিক। বিদ্রোহীরা এতটা বেপরোয়া চেষ্টা চালিয়েছিল; কারণ, তারা নিজেদের সত্যপন্থি ভেবেছিল। আর তাদের সঙ্গে ইমাম মাহদি উপস্থিত আছেন, এ কথা ভেবেই তারা এভাবে লড়াই করতে পেরেছিল।
.
এই ঘটনার প্রেক্ষাপট ও বিবরণী উল্লেখ করার কারণ হলো— বিদ্রোহীরা ইমাম মাহদি সংক্রান্ত হাদিসের আলোকেই নিজেদের পদক্ষেপগুলো নিয়েছিল। হাদিসে আছে, ইমাম মাহদি কাবায় আশ্রয় নেবেন। আর হাজরে আসওয়াদ আর মাকামে ইবরাহিমের মধ্যবর্তী স্থানে বসেই তাঁর অনুসারীগণ তাঁর নিকট বাইয়াত নেবে। হাদিসের এই বর্ণনার ওপর ভিত্তি করেই বিদ্রোহীরা ফিল্মি স্টাইলে একটি চিত্রনাট্য ও গল্প নির্মাণ করে। এই হাদিসের বর্ণনার সঙ্গে মিলিয়ে তারা ইমাম মাহদিসহ নানা চরিত্রের জন্য লোক বাছাই করে। তারপর সব ব্যবস্থাপনা শেষ করে তারা ঘটনার চূড়ান্ত বাস্তবায়নে মাঠে নেমে যায়।
.
তারা অনুসারীদের এই বেপরোয়া প্রচেষ্টায় সম্পৃক্ত করার জন্য বুঝিয়েছিল, ‘দেখ, হাদিসে আছে যিনি ইমাম মাহদি হবেন তার নাম থাকবে মুহাম্মাদ। আর আমরা যাকে ইমাম মাহদি বলছি, তার নামও মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ আল কাহতানি। হাদিসে আছে ইমাম মাহদির নাক থাকবে খাড়া। দেখ, মুহাম্মাদ আল কাহতানির নাকও খাড়া। হাদিস বলছে, ইমাম মাহদি হাজরে আসওয়াদ আর মাকামে ইবরাহিমের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকবেন, আর তাঁর অনুসারীগণ সেখানেই তাঁর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করবে। এই দেখ, আমরা সেখানেই তার নিকট বাইয়াত নিলাম। হাদিসে আরও আছে, ইমাম মাহদির অনুসারীগণ কাবায় আশ্রয় নেওয়ার পর বাহির থেকে সেনারা তাদের আক্রমণ করতে আসবে। তখনই আল্লাহ তাঁর গায়েবি মদদে মাটি দুই ভাগ করে দেবেন আর আক্রমণে আসা সেনাদের মাটি গিলে ফেলবে। এই বিদ্রোহীরা চূড়ান্ত মুহূর্তে ঠিক এরকম একটি দৃশ্যপটের জন্যই অপেক্ষা করছিল।
.
উল্লেখ্য, বিদ্রোহী সেনারা কিন্তু তেমনটা বিশ্বাসও করেছিল। আর বিশ্বাস করেছিল বলেই তারা মাত্র শ-দুয়েক লোক নিয়ে কাবা অবরোধ করার দুঃসাহস করেছিল। মাত্র কয়েকশো লোক নিয়ে এ যুগে এসে কোনো সরকার বা কোনো দেশের সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করা যায় না, পরাজিতও করা যায় না। এটা কেবল তখনই সম্ভব হতে পারে, যদি আল্লাহ কোনো গায়েবি মদদ দিয়ে সাহায্য করেন। আর তারা ঠিক তেমন সাহায্যেরই অপেক্ষায় ছিল।
.
মনে রাখতে হবে, যারা হামলা চালিয়েছিল তারা অধার্মিক কেউ ছিল না; ছিল ইসলামেরই অনুসারী। কাবা প্রাঙ্গণে এই সন্ত্রাসী ঘটনার মূল হোতা ছিল জুহাইমান আল ওতাইবি; সে সৌদি আরবের নাজদের প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য। আর যাকে ইমাম মাহদি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল, সে ছিল জুহাইমানের শ্যালক মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ আল কাহতানি। এ ছাড়াও এ দলের মধ্যে প্রথামাফিক কিছু আলিমও ছিল, আলিমদের সন্তানও ছিল। তাদের মধ্যে অনেকেই মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রও ছিল। মানুষজন তাদের নেককার ও পরহেজগার হিসেবেই জানত।
.
প্রকৃতপক্ষে তারা অনেক কিছুই জানত ঠিকই, তবে সেই জানা ছিল ভুল বোঝাবুঝিতে ভরপুর। তারা এ কারণেই ইমাম মাহদির দৃশ্যায়ন করেছিল এবং আত্মবিশ্বাসের সাথেই করেছিল। কারণ, তারা আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার ব্যাপারেও ছিল নিশ্চিত! তারা দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করত, যত বড়ো সেনাবাহিনীই আসুক না কেন, আল্লাহ তাদের সাহায্য করবেন। কিন্তু আদতে কেউ তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। উলটো সেই কথিত মাহদি এই ঘটনায় নির্মমভাবে নিহত হয়। তার ছবি ইন্টারনেটে এখনও পাওয়া যায়। তার সকল অনুসারীও এই ঘটনায় নিহত হয়। আর যারা জীবিত ছিল, তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
.
(বই : কারবালা ইমাম মাহদি দাজ্জাল গজওয়ায়ে হিন্দ
মূল : ড. ইয়াসির ক্বাদি
অনুবাদ : আলী আহমাদ মাবরুর)

পঠিত : ৮৬৩ বার

মন্তব্য: ০