Alapon

হাসিনা সরকার কি দেশটাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে যাচ্ছে...?



এই বাংলাদেশেই রাতের আঁধারে নির্বাচন হয়েছে। আবার এই বাংলাদেশেই রাতের আঁধারে তেল দাম বৃদ্ধি করা হলো। যাক তারপরও ভালো যে, সরকারের চক্ষু লজ্জা বলে কিছু একটা আছে।

গত বছরের নভেম্বরে সরকার কেরোসিন ও ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা করে বৃদ্ধি করেছে। আর ৮ মাস পরেই ডিজেল ও কেরোসিন প্রতি লিটার ৩৪ টাকা, পেট্রোল প্রতি লিটার ৪৪ টাকা এবং অকটেন লিটার প্রতি ৪৬ টাকা বৃদ্ধি করেছে। অর্থাৎ ডিজেল ও কোরোসিনের পূর্ব দাম ছিল ৮০ টাকা। বর্তমান মূল্য ১১৪ টাকা। পেট্রোলের পূর্ব দাম ছিল ৮৬ টাকা, বর্তমান মূল্য ১৩০ টাকা। অকটেনের দাম ৮৯ টাকা থেকে এখন হয়েছে ১৩৫ টাকা।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এটাই সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধির হার। এর আগে কখনোই এতোটা বৃদ্ধি করা হয়নি। তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সরকার দেখিয়েছে, বিশ্ববাজারে তেল দাম বৃদ্ধি এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ। যার ফলে গত বছরে সরকার ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। কিন্তু মজার বিষয় হল, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্ববাজারে তেলের দাম খুবই কম ছিল। এমনকি ব্যারেল প্রতি তেলের দাম ১০ ডলারও গিয়েছে। কিন্তু তখন সরকার তেলের দাম না কমিয়ে জনগণের থেকে লাভ করেছে। তখন সরকার প্রতি বছর তেল বিক্রি করে লাভ করেছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। এই সময়ে সরকার ৪৩ হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। সেই মুনাফার টাকাগুলো গেল কোথায়?

সরকার চুপি চুপি ৪৩ হাজার কোটি টাকা জনগণের থেকে মুনাফা করতে পারে, আর সেই জনগণের জন্য মাত্র ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েই হাপিয়ে গেল?

অথচ, কুইক রেন্টালের নামে সরকার এই চলতি বছরেই ১৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। আর এই ১৬ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে সরকার ১ মেগাওয়াটও বিদ্যুৎ পায়নি। অথচ কুইক রেন্টালের নামে এই দূর্নীতি বন্ধ করতে সরকারকে কোনোভাবেই আগ্রহী দেখা যাচ্ছে না। বরং, সরকার সাধারণ মানুষের পকেট কেটে এই দুর্নীতির ব্যয়ভার বহন করতে চাচ্ছে।

যে সরকার এতোদিন আমাদেরকে উন্নয়নের গল্প শোনালো, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু বানানোর গল্প শোনালো, সেই সরকার রাতের আঁধারে তেল দাম ৪০-৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করে দিলো। এই তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে বাজারে পন্যের দাম কি পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, তা এখন পর্যন্ত আন্দাজই করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, তেলের দাম বৃদ্ধির পর থেকেই গণ পরিবহণ প্রায় বন্ধ। পন্য পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকগুলো প্রায় বন্ধ। কারণ, এখন পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। যার দরুন পন্যের দাম কি পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে তা আমাদের মতো সাধারণ জনতার জানাশোনার বাহিরে।

একইসাথে আমরা এটাও জানি না, তেলের এই দাম বৃদ্ধির ফলে বাজারে যে অস্থির অবস্থা শুরু হবে, তা আমরা মোকাবেলা করতে পারব কিনা। অন্যদিকে শোনা যাচ্ছে, সরকার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি সাধারণ জনতার ধ্বংসকে ত্বরাণ্বিত করবে। আর সেই ধ্বংসস্তূপের মাঝেই কি নিজের সাম্রাজ্য গড়তে যাচ্ছে শেখ হাসিনা?

পঠিত : ৯৫৭ বার

মন্তব্য: ০