Alapon

আলেমদের যেভাবে কথা বলা উচিত...



ধরা যাক, আপনার সাথে কারও কোনো একটি বিষয়ে মতপার্থক্য হয়েছে। বিষয়টা এমন যে, তা নিয়ে মতপার্থক্য করার সুযোগও আছে । কুরআন ও সুন্নাহতে উক্ত বিষয়ে পরিস্কারভাবে হয়তো কিছু বলাও নেই। আবার বিষয়টা এমনও গুরুত্বপূর্ন নয় যে, এর জন্য আপনার জান্নাতে যাওয়া আটকে যাবে। তা স্বত্বেও আপনি অবলীলায় বলে যাচ্ছেন, আপনার বিপরীতে যিনি মতামত দিয়েছেন তা কোনোমতেই গ্রহনযোগ্য নয় এবং তার মত গ্রহন করলে খুবই বাজে ও নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিতে পারে।

শুধু তাই নয়, আপনার বিপরীতে যিনি মত দিয়েছেন, তার মতামত খুবই ক্ষতিকারক ও ধ্বংসাত্মক- এটা প্রমান করার জন্য খুব অবলীলায় বলে দিচ্ছেন আপনার প্রতিপক্ষ ইহুদী ও খৃষ্টানের চেয়েও ভয়ংকর। অর্থাৎ সাধারনভাবে ইহুদী ও খৃষ্টানেরা মুসলমানদের জন্য কতটা ভয়ংকর, এ বিষয়ে আপনি কখনোই খুব একটা উচ্চবাচ্য না করলেও নিজের মতকে সঠিক প্রমান করার জন্য আপনি ঠিকই এই আশংকাটিকে ব্যবহার করলেন।

হতে পারে, আপনার বিপরীতে যে মতটি এসেছে তার কিছু নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে, তবে তা নিশ্চয়ই এতটাও নয় যতটা আপনি দাবি করছেন। সর্বোপরি, কুরআন ও সুন্নাহতে আনুগত্য ও পারষ্পরিক সম্পর্ককে যেখানে অনেক বেশী গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, সেখানে নিজের দীনি ভাইকে তাচ্ছিল্যভরে সমালোচনা করে গোটা বিষয়টাকে যেন আরো অবহেলায় ও ব্যর্থতায় পর্যবসিত করছেন।

আমরা সকলেই ঈমান নিয়ে, ইসলামের বিশ্বাসের চেতনা নিয়ে কথা বলি। কিন্তু আমরা কি সঠিক উপায়ে এই আলোচনাটি করি? আমরা কি সঠিকভাবে মানুষকে ঈমানের বিষয়ে শিক্ষা দেই? আমরা কি এই চেতনাগুলোকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করি? বাস্তবতার সাথে কি সঠিক ও প্রাসঙ্গিকভাবে ঈমানকে সম্পৃক্ত করতে পারি? আমরা কি কখনও এই ঈমানী চেতনার গুরুত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি?

কখনও কখনও আমরা কোনো চিন্তাধারাকে প্রত্যাখান করার অজুহাত হিসেবে ঈমানকে আলোচনায় টেনে আনি। আমরা কোনো একটি দৃষ্টিভঙ্গি বা মতামতকে খারিজ করার অভিপ্রায়ে প্রায়শই বলি, “আপনার অভিমতটি ঈমানের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক।” আমরা এমনটা বলি কারণ, যখনই একজন মানুষকে ঈমানের সাথে সংঘাতের কথা বলা হয়, তখনই সে ঘাবড়ে যায়, এবং সেই চিন্তাগুলো পরিহার করার চেষ্টা করে।

এ কারণে সার্বিকভাবে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত, মানুষকে ঈমানের ব্যপারে শিক্ষিত ও সচেতন করা। মানুষের ঈমান ও আমলকে সঠিক করার চেষ্টা করা। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো যাতে আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগন, আসমানি কিতাবসমূহ, প্রেরিত নবি ও রাসুলগণ এবং শেষ বিচারের দিনের ওপর প্রত্যেকের ঈমান দৃঢ় ও মজবুত হয়।

ড. সালমান আল আওদাহ

পঠিত : ৩১৪ বার

মন্তব্য: ০