Alapon

পোশাক লিগ্যালিটির মামলা না, এথিকসের মামলা...



পোশাক প্রশ্নে সেক্যুলারিজমের এক চরম ও পরম সংকট আছে। রিসেন্ট একটা পোশাক বিতর্ক আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছ। পোশাকের শালীনতার মাত্রা নিয়ে আদালত একটা মন্তব্য করে। আদালতের সে মন্তব্যকে বাম ও সেক্যুলার লোকজন প্রশ্ন করে যে, পোশাক নিয়ে মন্তব্য করার অধিকার আদালতের আছে কিনা?
.
সেক্যুলার সিস্টেমে আদালতের সে অধিকার নেই। আদালতের কাজ লিগালিটি নিয়ে, এথিকস নিয়ে নয়। ওকে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, তাহলে পোশাকের শালীনতার মাত্রা কে নির্ধারণ করবে?
.
সেক্যুলার বয়ান হলো, ব্যক্তি নিজেই তা নির্ধারণ করবে। পোশাক নিয়ে প্রসঙ্গ এলেই নারীর পোশাকের ব্যাপার আসে। এর সঙ্গত ও বিধানগত কারণ আছে। মুসলিম বিধান অনুসারে পুরুষের সতর যে পরিমাণ পুরুষ তো তা ঢেকে রাখে। কিন্তু নারীর সতরের ক্ষেত্রেই যেহেতু নারীরা লঙ্গন করছে তাই তাদের প্রসঙ্গই আসে। পোশাক পর্দার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পর্দা আবার নারী পুরুষ উভয়েই লঙ্গন করে, সেটা ভিন্ন আলাপ।
.
যাহোক, সেক্যুলার বয়ান অনুসারে— একজন নারী চাইলে যে কোনো স্বল্পবসনের পোশাক পরতেই পারে। কিন্তু এ বয়ান তো মুসলিমদের আকিদা বিশ্বাসের বয়ান নয়। মুসলিমদের পোশাকে হালাল হারামের বিধান রয়েছে। কিন্তু আইরনিক্যালি আপনার থেকে এ বিধান নাই হয়ে গেছে। অর্থাৎ, এমনকি আপনার থেকে ইসলাম নাই হয়ে গেছে। আপনার থেকে কীভাবে ইসলাম নাই হয়ে গছে তা যদি অনুসন্ধান করেন দেখবেন, ইসলামের পরিবর্তে সেক্যলারিজম জায়গা দখল করেছে। পোশাকের কারণেই ইসলাম নাই হয়ে গেছে তা বলছি না। আপনি খুঁজে দেখেন, লিগ্যালিটি থেকে ইসলাম নাই হয়ে গেছে। যা আছে, তা ইউনিভার্সাল ল হিসেবেই আছে; মোস্টলি ইসলাম হিসেবে নাই। ইসলামের বিশাল একটা পরিসর হলো, এথিক্যাল তথা নৈতিক। ইসলাম স্বভাবগতভাবে দারোগা টাইফ ধর্ম না। ইসলামে হুদুদ খুবই কম। ইসলামের প্রাণ হলো, এথিকস। এই এথিকস আপনি পড়াশোনা করে শিখবেন, তারবিয়াতি মাধ্যমে শিখবেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়া নাই করে দেওয়া হয়েছে। সেক্যুলারিজম যতটা না ইসলামের আইনী কাঠামোয় আঘাত করেছে তারচে এথিকসের জায়গায় বেশি আঘাত করেছে। বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনের মূল স্রোত থেকে ইসলামের এথিক্যাল ফোর্সকে নাই করে দেওয়া হয়েছে। এখন এমন একটা ইম্প্রেশন দেওয়া হচ্ছে, যেন মুসলিমদের কোনো মোরাল কোডই নেই, ছিলও না।
.
কিন্তু প্রশ্ন হলো, আপনি তো সেক্যুলারিজম কবুল করেননি। সেক্যুলারিজম কীভাবে আপনার ওপর চেপে বসল? এর উত্তর হলো, সাংবিধানিকভাবে। স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রথমেই আপনার থেকে ইসলাম নাই করে দিয়েছে।
.
সেক্যুলারিজমের প্রতারণা হলো, এর মূল প্রেমিস সবাই নিজ নিজ দ্বীন পালন করবে। কিন্তু স্কুল কলেজের শিক্ষাব্যবস্থায় মুসলমানের সন্তানরা ইসলামের পর্দার বিধান জানা ও চর্চা থেকে কেন বঞ্চিত হলো? সেক্যুলার মূল্যবোধে তো পর্দার, পোশাকের কোনো ব্যপার নাই। অথচ আপনার ছিল, কিন্তু আপনার থেকে পোশাকের সে এথিকস নাই হয়ে গেছে।
.
পাবলিক স্পিয়ারে এখন এমন অবস্থা হয়েছে, কেউ পোশাক নিয়ে কিংবা ইসলামের বিধান নিয়ে ডিসাইসিভ কোনো কথা বলতে পারে না। এবং ভয়ানক ব্যাপার হলো, ইসলামের বিধান নিয়ে বিতর্ক হলে আমরা কী বলব আমরা এখন আর তা জানি না।
.
ওকে। পোশাক লিগ্যালিটির মামলা না, এথিকসের মামলা। কিন্তু মুসলামানের এথিকসের সেই ফোর্স কই?

পঠিত : ১৯৬ বার

মন্তব্য: ০