আধুনিক হতে গিয়ে আজ মুসলিমদের কাছে জ্ঞানও নেই, নৈতিকতাও নেই...
তারিখঃ ২২ আগস্ট, ২০২২, ১১:২৪
এমন একটা সময় ছিলো, যখন প্যান্ট পরাটাকে অন্যায় বা গুনাহ মনে করা হতো। তখন শার্টের সাথে পায়জামা পরা হতো।
আব্বা তার তারুণ্যের শুরুতে দাদুর অগোচরে একটা প্যান্ট বানিয়েছিলেন। আব্বা সেই প্যান্টটা দোকানেই লুকিয়ে রেখেছিলেন। দোকানের মাল করার জন্য যখন বগুড়া বা রংপুর শহরে যেতেন, তখন প্যান্টটা পরতেন।
একদিন দাদু যেকোনো ভাবেই হোক আব্বার প্যান্ট পরার কথা জানতে পারলেন। দাদু দোকান থেকে প্যান্টটা খুঁজে বের করলেন এবং সেটাকে আগুনে পুড়িয়ে তবেই শান্ত হলেন। এ ঘটনার পর আব্বা আর কখনোই প্যান্ট পরিধান করেননি; আজ অবধি পায়জামা পরেন।
আর একটা ঘটনা বলি। তখন অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের ছোট ভাই গোলাম মুয়াযযাম কলকাতা মেডিকেলে পড়তেন। ইন্টার্নশীপ শুরু হলে তিনি পিতার কাছে প্যান্ট পরিধান করার অনুমতি চেয়ে একখানা পত্র লিখলেন।
চিঠিতে প্যান্ট পড়ার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, 'রোগী দেখার সময় শার্টের নিচের দিকের কোনাগুলো রোগীর শরীরের সাথে লাগে৷ এতে অনেক রোগ জীবানু ভরতে পারে। পায়জামার সাথে শার্ট ইন করে পরলে খুবই বিশ্রী দেখায়। তাই প্যান্ট পরার অনুমতি চাচ্ছি।'
চিঠির জবাবে অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের পিতা লিখলেন, 'প্যান্ট পরা ছাড়া যদি মেডিকেলে পড়া সম্ভব না হয়, তাহলে মেডিকেলে পড়ার প্রয়োজন নেই।'
আর একটা ঘটনা বলি। অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের ছোট চাচা তখন ঢাকায় কলেজে পড়তেন। তিনি দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরলেন। তার মুখের দাড়ি গোফ সব কামানো। গোলাম আযম সাহেবের পিতা তার ছোট ভাইকে বললেন, 'পুরুষ মানুষকে দাড়িতেই সুন্দর দেখায়। তুমি যদি দাড়ি না রাখো তবে আগামী মাস থেকে তোমার পড়ালেখার খরচ দেওয়া বন্ধ করে দিবো।'
ইসলামের বিধিবিধান এবং শালীনতা রক্ষায় মুসলিম সমাজ এমনই কঠোর ছিলো। সেই কঠোরতার ফলশ্রুতিতে মুসলিম সমাজের মাঝে নৈতিক কোনো দুর্বলতা ছিলো না; থাকলেও যতসামান্য ছিলো।
কিন্তু যুগের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে যখনই আমরা একটার পর একটা কঠোরতাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছি, তখনই মুসলিম সমাজের মধ্য থেকে জ্ঞানের সাথে সাথে নৈতিকতাও হারিয়ে গেছে। আধুনিক হতে গিয়ে আজ মুসলিমদের কাছে জ্ঞানও নেই, নৈতিকতাও নেই।
মন্তব্য: ০