Alapon

‘উদ্দীপক’ সমস্যার সমাধান



বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে এবং একজন শারীরতত্ত্বের ছাত্র হিসেবে আমি আমার অর্জিত জ্ঞানের সাথে গাদ্দারি করতে পারলাম না। এই অবস্থানের সাথে আমি পূর্ণ সহাবস্থান গ্রহণ করলাম। আপনিও নিজের সহাবস্থান জানান দিন।

মেন্টাল সেটআপ বা পুরুষের মানসিক গঠন ঠিক করা একটা দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। পুরো একটা জেনারেশান নিয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু অলরেডি যাদের মেন্টাল সেটআপ বিগড়ে আছে, তাদের হাত থেকে তো বাঁচতে হবে।

১.
গবেষকরা বলেছেন, চেহারার সৌন্দর্যের চেয়ে পুরুষ বেশি গুরুত্ব দেয় ফিগারকে। বিশেষ করে ‘বালুঘড়ি’র মতো গড়ন (hourglass figures)। এবং এই অনুভূতি হতে পুরুষের মগজ সময় নেয় সেকেন্ডেরও কম সময় (Dixson, 2012)।


২.
New Zealand-এর Victoria University of Wellington-এর নৃতাত্ত্বিক Dr Barnaby Dixson এর নেতৃত্বে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়। একই নারীর ছবিতে বুক, কোমর ও নিতম্বের মাপকে বাড়িয়ে কমিয়ে ভলান্টিয়ারদের দেখানো হয়। ইনফ্রারেড ক্যামেরার দ্বারা তাদের চোখ কোথায় কতবার আটকাচ্ছে দেখা হয় (numbers of visual fixations), কতক্ষণ কোথায় আটকে আছে তা দেখা হয় (dwell times), প্রথমবারেই কোথায় আটকাচ্ছে (initial fixations) তাও দেখা হয়।

সব পুরুষের চোখ প্রথমেই নারীর যে অঙ্গে আটকায় তা হলো বুক আর কোমর। সবচেয়ে বেশি সময় আটকে থাকেও এই দুই জায়গায়। তবে বারবার তাকিয়েছে এবং বেশিক্ষণ ধরে তাকিয়েছে বুকের দিকে। আর মার্কিং করার সময় বেশি আকর্ষণীয় হিসেবে মার্ক দিয়েছে চিকন কোমর ও ‘বালুঘড়ি’ শেপের ফিগারকে। (Dixson, 2011)

৩.
১৪ টা ছেলের ব্রেন স্ক্যান করে পাওয়া গেল, আকর্ষণীয় নারী বডিশেইপ (কোমর নিতম্বের অনুপাত ০.৭ এর কাছাকাছি) দেখে ওদের ব্রেনের সেই এলাকাগুলো উত্তেজিত হচ্ছে, যে এলাকাগুলো ড্রাগে উত্তেজিত হয়। এবং এই মাত্রার উত্তেজনা ব্রেন বারবার পেতে চায়, ফলে সৃষ্টি হয় আসক্তির (Platek, 2010)।
৪.
দর্জিকে মাপ দিয়ে যেসব আপুরা দুষ্টু হাসি দিয়ে বলেন, ‘মামা, ফিটিং’; সতর্ক হয়ে যান। কানাডার McMaster University-র Department of Psychology, Neuroscience and Behaviour-এর গবেষকেরা (O’Connor, ২০১১) দেখিয়েছেন, যেসব মেয়েদের কোমর-নিতম্ব অনুপাত (waist-to-hip ratios) পারফেক্ট বলে বুঝা যায় তাদের ব্যাপারে ছেলেদের মনে জন্ম নেয় ‘রেপমিথ’, যা ২৫% ধর্ষণের কারণ। বলেছেন Boston University Medical School-এর মনোবিজ্ঞানের প্রফেসর Dr. Robert Prentky. ফিগার-প্রকাশক নারীদের ব্যাপারে ছেলেরা যা ভাবে:
- ছেলেরা বেশি আকর্ষণীয় মনে করে (Singh, 1993; Singh & Dixson, 2010) তারা অন্য মেয়েদের হিংসার পাত্রী হয় (Buunk and Dijkstra, 2005)
- যৌন চাহিদা তাদের বেশি বলে রেটিং দেওয়া হয়েছে (van Anders and Hampson, 2005) মানে অন্যান্যরা মনে করে তাদের যৌনকামনা বেশি।
- তারা সঙ্গীর বাইরে অবৈধ সেক্সে (extra-pair sex) বেশি লিপ্ত হয়, বলে অন্যান্যরা মনে করছে (Susan, 2004)
তাহলে আপনার ফিটিং পোশাক আরেকটা পুরুষকে আপনার দিকে আকর্ষণ করছে, আপনার যৌন চাহিদাটাও বেশি বলে তাকে মেসেজ দিচ্ছে, এবং আপনাকে extra-pair sex-এ টেনে আনা সম্ভব বলে তাকে মিসগাইড করছে। আর ছেলেটার মনে যদি আগে থেকেই কোনো ‘রেপমিথ’ জেঁকে বসে থাকে তাহলে তো কথাই নেই। রেপমিথ আর আপনার পোশাক থেকে আসা ভুল ইনফরমেশান, দুইয়ে দুইয়ে চার। ‘আমার ইচ্ছেমতো আমি পোশাক পড়ব’—এই এঁড়ে তর্ক তো আপনার বিজ্ঞানই মেনে নিচ্ছে না।
প্রফেসর Mary P. Koss- এর কথাটা, ধর্ষণ ব্যাপারটা অনেকটা মাত্রা-নির্ভর (Dose). তাহলে আমাদের এই ফিটিং ফ্যাশন, স্বচ্ছ ওড়না, ফিতাওয়ালা বোরকা, উরুর অবয়ব প্রকাশ করে দেওয়া লেগিংস কি এক ফোঁটাও দায়ী নয়? একটুও দায়ী নয়? এখন আপনিই হিসেব করুন, আপনি কতজনের কত নম্বর ডোজ হয়েছেন?
আপনি কতজনের নেশাদ্রব্য হয়েছেন এ যাবৎ?

আপনার Optimal waist-to-hip ratio কত অগণিত পুরুষের neural reward center-কে ডোপামিনে ভাসিয়েছে?

ভিকটিমের পোশাক হয়তো সরাসরি দায়ী নয়, তবে আর যে হাজার হাজার নারী ধর্ষকটার সামনে দিয়ে হেঁটেছে বেসামালভাবে, তাদের ফিটিং স্বচ্ছ পোশাকের দায়, প্রকাশমান দেহাবয়বের দায় তো এড়ানো যাবে না। গবেষণাগুলোর ইঙ্গিত তো তাই বলছে, নাকি?


বই : মানসাঙ্ক
ডাক্তার সামছুল আরেফীন শক্তি

পঠিত : ৫২০ বার

মন্তব্য: ০