Alapon

অসুরনামা"



"অসুরনামা"
জানেন কি, হিন্দু ধর্মে 'অসুর' আসলে কাদের বলা হতো?
অসভ্য দখলদার আর্যরা (ব্রাহ্মণরা তাদের বংশধর) ভারতে এসেছিলো হযরত ঈসা (আ.)-এর জন্মের দুইহাজারবছর আগে খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দে আর আমাদের বাংলাকে পুরোপুরি পদানত করে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলো ১ থেকে ১০০ খ্রিস্টাব্দে। এর আগে তারা অনার্যের ভূমি বাংলার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে পারে নি পুরোপুরি। বাংলার ভূমিপুত্র, এই বাংলার নিজের সন্তান, আদিবাসিন্দা বাঙালির আদিপুরুষ ছিলেন অনার্যরা, তারাই ছিলেন প্রকৃত বাঙালি ভূমিপুত্র- এই বাংলার নিজের সন্তান।

মধ্য এশিয়ার উরাল পাহাড়ের গুহা, ইরানের পাহাড়ি জঙ্গল থেকে ভারতে এসে দখলদারী কায়েম করেছিলো কুলাঙ্গার আর্যরা। ইরানের পূর্বে তাদের আদিবাস এশিয়া মাইনর বা ইউরোপের কোথাও ছিলো বলেও প্রত্নপ্রমাণে জানা যায়। সর্বশেষ বাস ছিলো পারস্যে- "ইরান" এসেছে "Aryan" থেকে যার অর্থ আর্যের ভূমি। বহিরাগত আর্যরা ভারত দখল করে সিন্ধু সভ্যতা ধ্ববংস করে উত্তর ভারত দখল করে নেয় শুরুতেই ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। তারা উত্তর ভারতের আদিবাসিন্দা অনার্যদের উৎখাত করে তাদেরকে দাসে পরিণত করে, চালায় শোষণ ও গণহত্যা। তারা দখল করে নেয় দ্রাবিড়দের ভূমি- দক্ষিণ ভারত। তবে দ্রাবিড়দের প্রতিরোধের মুখে তারা দ্রাবিড়দের ভাষা (তামিল-তেলেগু) কে শত চেষ্টাতেও ধ্বংস করতে পারেনি- তারপরেও তারা দখলে নেয় দক্ষিণভারত- দ্রাবিড়ভূম। আর্য অবাঙালি বহিরাগতরা দখল করতে সক্ষম হয়না শুধু একটি ভূমি, তা হলো- অনার্যভূমি বাংলা, অনার্য অধ্যুষিত বাংলা। বস্তুতপক্ষে কলিঙ্গ (উড়িষ্যা), বঙ্গ, মিথিলা সহ সমগ্র পূর্ব-ভারত ছিলো অনার্য-অধ্যুষিত ভূখণ্ড, আর্যদের নাগালের বাইরে। শত চেষ্টাতেও ২১০০ বছর তারা বাঙালিদের পরাজিত করে বাংলা দখল কর‍তে সক্ষম হয় নি!

অর্থাৎ, আমাদের বাংলার দুর্ধর্ষ অনার্য আদিবাসীরা সুদীর্ঘ ২১০০ বছর অবিশ্রান্ত লড়াই করে দখলদার আর্যদের পরাজিত করে নিজেদের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রেখেছিলেন। অনার্য বাঙালিরা যুদ্ধের সময় ভয়ঙ্কর মুখোশ পরে আসতেন, যাতে দখলদার আর্য আক্রমণকারীরা ভয় পায়। বীর বাঙালির সেই মুখোশে ছিলো অগ্নিবর্ণের চুল, দুই চোখের গর্তের চার পাশে লাল রঙ, যা দেখে মনে হতো চোখের চারপাশে রক্ত জমে আছে। বীর বাঙালিরা ছিলেন মহাশক্তিধর পরাক্রমশালী যোদ্ধা জাতি,আর্যরা এদেরকেই বলতো রাক্ষস।

যুদ্ধক্ষেত্রে এক জন বাঙালির মৃত্যু হলে দশ নিহতের জায়গায় এসে দাঁড়াতো, বীরদর্পে আর্যদের পরাজিত করেছিলো তারা। তাদের ভয়ংকর যুদ্ধ-মুখোশ (War-Mask) আর্যদের ভীত-সন্ত্রস্ত করে রাখতো। এই হলো রাক্ষসদের কাহিনীর অন্তরালে লুকিয়ে থাকা প্রকৃত সত্য, প্রখ্যাত হিন্দু ঐতিহাসিক ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদারও তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এসব বিশ্বাস করতেন। বারবার অনার্যদের কাছে মার খায় আর্যরা, খেয়েই যায়। ভয়ঙ্কর মুখোশ-পরিহিত যোদ্ধা বাঙালিদের ভয় পেয়ে আর্যরা তাদের নাম দেয়- "রাক্ষস"। বাংলা ছিলো দখলদারদের কবরস্থান।

তারা এতোটাই ভয় পেতো অনার্য বাঙালিকে এবং এতোটাই ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখতো যে একটি শ্লোকই রয়েছে-
"অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গেষু-সৌরাষ্ট্র-মগধেষুচ
তীর্থযাত্রাং বিনা গচ্ছন করহঃ সংস্কারঃ হতি শুদ্ধিতরং"
অর্থাৎ, অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ (উড়িষ্যা), সৌরাষ্ট্র (গুজরাট), মগধে (বিহার)
তীর্থযাত্রা ভিন্ন গমন করলে গঙ্গাজল দিয়ে শরীর ধুয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে)। এই ভূখণ্ডসমূহে কোনো আর্য তীর্থযাত্রা ছাড়া কোনো কারণে পা রাখলেই ভ্রষ্টআর্য হবে, পুনরায় 'পুনষ্ঠম' পূজা করে তাদের কে শুদ্ধ হতে হবে। সৌরাষ্ট্র সহজেই আর্যদের পদানত হলেও বাংলাভূমিগুলো পদানত হতে ২১০০ বছর লেগে যায়।

যখন আর্যরা বারবার অনার্য বাঙালিদের কাছে মার খেয়েই যাচ্ছিলো, তখন তারা নিজেদের ধর্মগ্রন্থে সেই বীর অনার্য বাঙ্গালীদের প্রতি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে তাদের নাম দেয়- "অসুর", তাদের গ্রন্থে বাঙালিদের নামকরণ করে অসুর বা অপশক্তি হিসেবে। কারণ- ভূমিপুত্র বাঙালিদের হাতেই বারবার মার খেতে হয়েছিলো তাদের। এমন পরাজিত হয়েছিলো যে, ১ থেকে ১০০ খ্রিস্টাব্দে যখন তারা বাংলাভূমি পদানত করলো, তখন তারা নিজেদের ধর্মগ্রন্থে অসুরবিনাশের (বাঙালিদের পরাজিতকরণ) কথা ফলাওভাবে প্রচার করতে থাকলো।
হিন্দু ধর্মের মূল ধারাটি এনেছিলো আর্যরা, বৈদিক সনাতন ধর্ম আর্যদের নিয়ে আসা। আর্যরা হিন্দু ধর্ম এনেছিলো- কথাটি পুরোপুরি সঠিক নয়,কারণ- হিন্দু ধর্ম আসলে বহু প্যাগান কালচারের সন্নিবেশ- আর্য, দ্রাবিড়, অনার্য সকল সংস্কৃতিই আছে সনাতন ধর্মে। তবে- বৈদিক সনাতন ধর্মের যে মূল ধারা, ধর্মগ্রন্থ-বেদ-গীতা-পুরাণ-শাস্ত্র, সংস্কৃত ভাষা, গোরুকে মা বলা, সৌরপূজা, শিব-বিষ্ণু-ব্রহ্মা-স্বরস্বতী-দুর্গা-লক্ষ্মী-ইন্দ্র-অগ্নিদেব-চন্দ্রদেব-সূর্যদেব, রাম-সীতা, হনুমান ইত্যাদি দেব-দেবী এসব সবই আর্যদের আমদানি- তারা নিয়ে এসেছিলো উরাল পাহাড়ের অন্ধকার গুহা থেকে। পরবর্তীতে দ্রাবিড় ও অনার্যদের কিছুসংখ্যক দেব-দেবীকেও তারা তাদের ধর্মে সংযোজন করে নেয় খেয়ালখুশিমতো- জন্ম হয় হিন্দুধর্মের।

বাংলার আদি অধিবাসীরা বৈদিক সনাতন ধর্মের অনুসারী ছিলেনই না; তারা ছিলেন প্রকৃতির উপাসক, প্রকৃতির ও লৌকিক দেব-দেবীর পূজা করতেন তারা। যেমন- সাপের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মনসা, শক্তিমত্তার দেবী- কালী, খাদ্যের দেবী-অন্নপূর্ণা (আর্যরা পরবর্তীতে তাদের দেবী দুর্গার সাথে অনার্যদের অন্নপূর্ণাকে গুলিয়ে খিচুড়ি বানিয়েছে)
রোগতাড়নার দেবী শীতলা, শিকারের দেবী-বনদেবী…প্রমুখ। তারা লৌকিক দেবীর উপাসনা করতেন, আদিবাঙালির ধর্ম কখনোই হিন্দু ছিলোনা, ছিলো অনার্য অন্ত্যজ প্রকৃতি-উপাসক। বঙ্গদেশের প্রধান দেবী ছিলেন কালী, যা ছিলো আদিবাঙালির শৌর্য-বীর্যের প্রতীক! যোদ্ধাবাঙ্গালীরা ছিলেন কালীর উপাসক। এসব ছিলো আদি বাঙালিদের দেবতা, আর্যদের দেবতা এরা ছিলেন না কখনোই।
অন্ধকার গুহা থেকে আসা আর্য অসভ্যরা বাংলা দখল করলো শেষমেশ… বাঙালি ভূমিপুত্রদের উপর আরম্ভ হলো অত্যাচার, শোষণ, নিপীড়ন…
আর্যরা তাদের পরিণত করলো দাসে। তাদের নাম দিলো- "শূদ্র" ও "চণ্ডাল"।
বহিরাগত আর্যরা কখনো বাঙালিকে আপন করে নেয়নি, শূদ্র-চণ্ডালদের উপর চালিয়েছে নিপীড়ন। তাদেরকে নাম দিয়েছে- "নিম্নবর্ণের হিন্দু"।

বর্তমানে যাদেরকে আমরা ব্রাহ্মণ বলে চিনি সেই ব্রাহ্মণরাই আর্যদের বংশধর। ব্রাহ্মণরা দীর্ঘদিন অত্যাচার করেছে 'So Called' নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের উপর…সেন ব্রাহ্মণ্যবাদীদের শাসনামলে শত শত শূদ্রকে হত্যা করা হয়, তাদের ছিলোনা শিক্ষা-দীক্ষার অধিকার, ছিলনা কোনো সম্মান

… কোনো চণ্ডাল (বর্তমানে 'দলিত' নামে চিনি) শহরে প্রবেশ করলে আগে থেকে ঘণ্টা বাজাতে হতো… যাতে ঘণ্টা শুনে ব্রাহ্মণরা ঘরের ভেতর চলে যায়, যাতে অনার্যদের মুখও দেখতে না হয় ব্রাহ্মণদের… এতটাই ঘৃণা করতো তারা বাঙালিদের, অনার্যদের…
কথিত নিচু জাতের ছোঁয়া লাগলে ইংরেজ আমলেও ব্রাহ্মণরা গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধি করত„ বলতো- জাতের ঠিক নেই! সেনরাজাদের পণ্ডিতেরা বলেছিলো- অনার্যের ভাষা বাংলায় কথা বললে বা সাহিত্যচর্চা করলে রৌরব নামক নরকে যেতে হবে!

আমরা যে বলি নিম্নবর্ণের হিন্দু, কারা এই কথিত নিম্নবর্ণের হিন্দু?
নিম্নবর্ণের হিন্দু তারাই যারা এই বাংলার আদিবাসিন্দা...এই বাংলার আসল বাঙালি, ভূমি পুত্র, "নীচু জাত" তারা যারা বঙ্গভূমির মূল সন্তান,যাদের বীরত্বে আর্য দখলদারেরা বারংবার পরাভূত হয়েছে। এই বাংলা তো তাদের। আর্যরা সেই দুর্ধর্ষ অনার্য অন্ত্যজ শূদ্রদের কাছে বারবার মার খেয়ে 'ভিলেন' গণ্য করে তাদের লেখা ধর্মীয়গ্রন্থগুলোর কাহিনীতে অনার্য বাঙালিকে নাম দেয়- "অসুর"/রাক্ষস/দৈত্য/দানব। যেমন- আসুন বাঙালি হিন্দুদের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা আসলে কী তা নিয়ে কথা বলি…

১. হিন্দু কাহিনীর মহিষাসুর আসলে প্রাচীন অনার্য বাংলার কোনো রাজা [প্রকৃত নাম জানা যায় না], যার কাছে দখলদাররা পরাজিত হতো বারবার।

২. হিন্দু পুরাণের কাহিনী: "মহিষাসুর কর্তৃক ইন্দ্র ও প্রত্যেক দেবতাকে পরাজিত ও বিতাড়িত করে স্বর্গ অধিকার করা" আসলে, বঙ্গের অনার্য রাজা কর্তৃক আর্যদের আবাসস্থল অধিকার।
সব দেবতা মিলে তাদের শক্তি দিয়ে দুর্গাদেবীকে সৃষ্টি করা মানে… সব আর্য দলপতি এক হয়ে অনার্য রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা…

৩. মহিষাসুর থেকে হাতি বেরিয়ে এসে দেবী দুর্গাকে পেঁচিয়ে ধরার কাহিনী আসলে- বাঙালিদের ঐতিহ্যবাহী রণহস্তীর বীরত্ব অর্থাৎ, অনার্যদের রণহস্তী দ্বারা আর্যরাজার জীবনের ক্ষতি হয়েছিলো। সর্বশেষে বলা হয়েছে মহিষাসুরের ঘাড়ে লাফিয়ে উঠে, দুর্গা তার মাথা কেটে নেয়। অর্থাৎ, আর্যদের প্রধান সেনাপতি পেছন থেকে সেই অসুর রাজের (বাঙালি রাজার) মাথা কেটে নিয়েছিলো।

এভাবেই আর্য-অনার্য লড়াইকে কল্পনা বিলাসী জঘন্য ব্রাক্ষণরা ধর্মীয় কাহিনীতে পরিণত করে। প্রত্যেকটা দুর্গাপূজায় অসুরদের গায়ের রং কালো দেখানো হয় এবং দুর্গার দুধে-আলতা। কারণ- অনার্য আদিবাঙালিরা ছিলেন গৌরবর্ণ এবং আর্যরা ফর্সা।
কাজেই
যারা বাঙালি হিন্দু তাদের কে বলছি- আপনাদের দেবতা রাম, শিব, বিষ্ণু, দুর্গা এসব সব আর্যদের নিয়ে আসা। এরা কখনোই বাংলার দেবতা ছিলোনা, এরা ছিলো আর্যদের দখল করা অঞ্চলের তথা উত্তরভারতের দেবতা! আর আপনারা যে দুর্গাকে এতো শ্রদ্ধা করেন, সেই দুর্গার অসুরনিধন আসলে বস্তুতপক্ষে- "আর্য অবাঙালি কর্তৃক অনার্যদের পরাজিত করে বাংলাভূমি বাংলাকে দখল করে নেবার কাহিনী!' যে 'মহিষাসুর-এ'র কাহিনী তিনি আসলে মাতৃভূমি রক্ষায় জীবন দানকারী এক বাঙালি রাজা।

যে দুর্গাপূজা নিয়ে মাতামাতি তা আসলে বাঙালিদের ভূমি দখল করে নেয়ার হৃদয়-বিদারক কাহিনী… তাই মুসলিম শাসকদের অবাঙালি বলার আগে আপনারা বাঙালি হয়ে কোন উৎসব পালন করছেন তা ভেবে লজ্জিত হওয়া উচিত।
মুসলমানদের ধর্মকে আরবদের ধর্ম বলার আগে আপনারা বাঙালি হয়ে জন্মে কোন ধর্ম পালন করছেন তা জানা উচিত। অল্প বিদ্যে ভয়ঙ্করী!

★এবার আসা যাক- বাঙালি মুসলিমরা কাদের বংশধর?
আর্যরা এই ভূমি দখলের পর আদিবাঙালিদের দাসে পরিণত করে নাম দেয়- শূদ্র। ইসলাম আসলে এই অনার্য শূদ্ররাই সর্বাধিক ইসলাম গ্রহণ করে দলে দলে মুসলিম হতে থাকেন। আমরা বাঙালি মুসলিমরা বেশিরভাগ বাংলার ভূমিপুত্র আদি বাঙালিদের বংশধর, যারা ব্রাহ্মণের অত্যাচার ও শোষণ থেকে বাঁচতে ইসলাম গ্রহণ করেছিলো । মুসলিম শাসনামলে বাঙ্গালী শূদ্ররা (অনার্য, কথিত নিম্নবর্ণের হিন্দু) বেশিরভাগ ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।
বাইরে থেকে যে মুসলিমরা এদেশে এসেছিলেন সেইসব তুর্কী,পারসিক, পাঠান,আরব, রাজপুত মুসলিমরা বাংলায় এসে বাঙালিদের বিবাহ করে বাঙালি জনজাতির সাথে মিশে গিয়েছিলেন। বাঙালি মুসলিমরা অনেকে তাদের বংশধর হলেও
বাঙ্গালী মুসলমানের মূলধারাটি অনার্য শূদ্রদের বংশধর।

হ্যাঁ,এটাই আমাদের গর্ব যে, আমাদের পূর্ব-পুরুষরা অনার্য শূদ্র (আর্যদের ভাষায়-নিম্নবর্ণের হিন্দু) ছিলেন...এটাই আমাদের অন্যতম বড় গৌরব যে- আমরা অনার্য শূদ্রদের বংশধর…- এই বাংলা তো আমাদের বাঙালি মুসলিমদের, কারণ- আমরা বেশিরভাগ এই বাংলার আদিসন্তান অনার্যদের বংশধর..আমরাই হাজার বছরের বাঙালি…
আমরা বাঙালি মুসলিমরাই বাংলার ভূমিপুত্র, এই বাংলাকে রক্ষার জন্য আমাদের পূর্বসুরীরা জীবন দিয়েছেন। আমাদের পূর্ব-পুরুষরাই খাটিবাঙালি…

এটাই তো আমাদের গৌরব..আমরা ব্রাহ্মণদের মতো বহিরাগত সন্ত্রাসীদের বংশজাত নই, আমরা বাঙ্গালী মুসলমানেরা বেশিরভাগ বীর অনার্যদের বংশধর... এতে লজ্জার কিছুনাই।আমরা আগেও বীর,এখনো বীর। যখন আমরা পৌত্তলিক ছিলাম তখনো আমরা বীরজাতি ছিলাম, যখন আমরা মুসলিম হয়েছি তখনো আমরা বীর…
ইসলাম গ্রহণের আগে যেমন বাঙ্গালীরা শক্তিধর এক জাতি ছিল, ইসলাম গ্রহণের পরও বাঙ্গালীরা বীরজাতিই আছে।

ইসলাম গ্রহণের আগে আর্যদের হটিয়েছি, ইসলাম গ্রহণের পর হটিয়েছি দিল্লীর দখলদারদের! আমাদের তলোয়ারের আঘাতে যেমন আর্যরা টুকরো টুকরো হয়ে যেত, তেমনি আমরা মুসলিম হবার পর আমাদেরই তলোয়ারের আঘাতে নেপাল,উড়িষ্যা, কামরূপ, বার্মার মুশরিকরা টুকরো টুকরো হয়ে গেছে!✊✊
মুসলমানদের অবাঙালি বলতে হলে আগে ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়দের তাদের পিতৃভূমি ও যোগ্যস্থান- উরাল পাহাড়ের অন্ধকার গুহায় পাঠিয়ে দিতে হবে… অসভ্য জাতির স্থান অন্ধকারে… …।।


✍️✍️লেখক- রাজিত তাহমীদ জিত

তারিখ- ২৮. ০৮.২০২২

চিত্র- ১.মানচিত্রে প্রাচীন অনার্যভূমিসমূহ [বাংলাভূমি]
২. কররানী রাজবংশের শাসনামলে বাংলা সালতানাতের পতাকা
৩. Bengal Sultanate- Empire of the Bengali Muslims
তথ্যসূত্র- ১. আমি শূদ্র আমি মন্ত্রহীণ - কিঙ্কর সিংহ
২. বাঙালি মুসলমান প্রশ্ন- হাসান মাহমুদ
৩. The Rise of Islam and the Bengal Frontier- Professor Richard Eton Maxwell
৪. হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ ও জৈন ধর্মের ইতিহাস- ড. জিয়াউর রহমান
৫. Castes in India - Dr. Bhimrao Ambedkar

পঠিত : ১১৮৭ বার

মন্তব্য: ০