Alapon

যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করাকে অবহেলা করে তাদের প্রাপ্য শাস্তি

যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করাকে অবহেলা করে তাদের প্রাপ্য শাস্তি
.
শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল মুনাজ্জিদ হাফিজাহুল্লাহ
.
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। কুরআনের বহু আয়াত ও হাদিসে আল্লাহর পথে জিহাদ করার নির্দেশ এবং জিহাদকে অবহেলা করা সম্পর্কে সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। যদি মুসলিমরা আল্লাহর পথে জিহাদ করাকে অবহেলা করে এবং আরামের জীবনকে পছন্দ করে আর শুধুমাত্র এ দুনিয়ার প্রতি মনোযোগ প্রদান করে, তাহলে তারা অপমান ও লাঞ্ছনার সম্মুখীন হবে এবং তাদের সকল কর্মকাণ্ড দূর্নীতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। তারা নিজেদেরকে আল্লাহর ক্রোধ ও রাগের দিকে ধাবিত করবে এবং ইসলামকে কাফিরদের হাতে ক্ষতিগ্রস্ত ও পরাজিত হওয়ার দিকে ধাবিত করবে। তাই জিহাদকে অবহেলা করা একটি কবীরা গুনাহ।
.
ইবনে হাযার আল-যাওয়াজির কিতাবে বলেনঃ “৩৯০তম, ৩৯১তম ও ৩৯২তম কবীরা গুনাহ হচ্ছে জিহাদকে অবহেলা করা যখন তা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়, যখন (কাফির) হানাদার বাহিনী কোন মুসলিম ভূখন্ডে প্রবেশ করে অথবা যখন তারা কোন মুসলিমকে বন্দি করে এবং তাদের কবল থেকে তাঁকে উদ্ধার করার সম্ভাবনা থাকে এবং মানুষ সার্বিকভাবে জিহাদকে অবহেলা করে এবং যখন কোন অঞ্চলের মানুষ তাদের সীমানা জোরদার করতে অবহেলা করে, যার ফলে কাফিররা তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার ঝুঁকি বিদ্যমান থাকে”। উদ্ধৃতি সমাপ্ত।
.
তাই সাহাবাগণের মধ্যে এ বিষয়টি সুপরিচিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল যে, জিহাদ যখন ফরজে আইন (ব্যক্তিগত পর্যায়ের ফরজ) হয়ে যায় তখন কোন ব্যক্তি জিহাদে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে না, শুধুমাত্র সে-ই বিরত থাকে যে ব্যক্তি দূর্বল এবং উক্ত কারণে তাকে ক্ষমা করা হয় অথবা যে ব্যক্তি মুনাফিক। এ বিষয়টিই কা’ব ইবনে মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হয়েছে যখন তিনি তাবুকের (যুদ্ধ) অভিযান থেকে পিছনে থেকে গিয়েছিলেনঃ “রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে যাওয়ার পর আমি যখন লোকদের মাঝে বের হতাম, আমি তাদের মাঝে ঘুরাফেরা করতাম এবং এ বিষয়টি আমাকে খুবই ব্যথিত করতো যে, তখন মুনাফিক অথবা দূর্বল হওয়ার কারণে যাদেরকে আল্লাহ পিছনে থাকার অনুমতি দিয়েছেন তাদেরকে ব্যতীত অন্য কাউকে দেখতে পেতাম না”। আল বুখারী কর্তৃক বর্ণিত, ৪০৬৬; মুসলিম, ৪৯৭৩।
.
এরূপ কাজের ফলাফল হিসেবে (শরীয়তের) দলিল-প্রমাণ আরো কিছু শাস্তির বিষয় বর্ণনা করেছে। উদাহরণ স্বরূপঃ
.
১) জিহাদের প্রতি অবহেলা মানুষকে এই দুনিয়াতে এবং আখিরাতে দূর্ভাগ্যের দিকে পরিচালিত করে। দুনিয়াতে এই ভীরু কাপুরুষ অপমান ও বন্দিত্বের শিকার হয়। সে নেতা হতে পারে না, বরং সে হয় একজন অনুসারী। আখিরাতে আল্লাহর শাস্তি পাওয়ার একটি কারণ হবে জিহাদের প্রতি অবহেলা করা।
.
আল্লাহ বলেনঃ (ভাবানুবাদ) “আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে (অর্থাৎ সকল প্রকার জিহাদে) এবং নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না (আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয় না করার মাধ্যমে) আর তোমরা সৎকর্ম কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ মুহসিনুনদের (সৎকর্মশীলদের) ভালবাসেন। [সূরা বাকারা, আয়াত ১৯৫]
.
আত তিরমিযী (২৯৭২) বর্ণনা করেছেন যে, আসলাম আবু ইমরান বলেছেনঃ আমরা বাইজেন্টাইন (অর্থাৎ কন্সটান্টিনোপল) শহরে ছিলাম এবং বাইজেন্টাইনদের একটি বিশাল সেনাবাহিনী আমাদের নিকট বেরিয়ে এসেছিল। মুসলিম পুরুষদের মধ্যে একজন বাইজেন্টানদের আক্রমণ করতে করতে তাদের ভিতরে ঢুকে পড়লো। আর লোকেরা চিৎকার করে বলল, সুবহানাল্লাহ সে নিজেকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আবু আইয়ুব আল আনসারী দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে লোক সকল, তোমরা এভাবে এই আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা করছো। বরং এই আয়াতটি আমাদের, আনসারদের প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে। যখন আল্লাহ ইসলামকে বিজয়ী করলেন এবং তার অনুসারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেল, তখন আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে কথা না বলেই গোপনে একে অন্যকে বললামঃ আমাদের ধন-সম্পদ অবহেলিত হয়েছে। আল্লাহ ইসলামকে বিজয়ী করেছেন এবং তার অনুসারীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কেন আমরা আমাদের ধন-সম্পত্তির সাথে থাকছি না এবং এর উন্নতি সাধন করছি না? তখন আল্লাহ আমরা যা বলেছিলাম তা প্রত্যাখ্যান করে তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি আয়াত নাযিল করলেনঃ “আর তোমরা আল্লাহর পথে (অর্থাৎ সকল প্রকার জিহাদে) ব্যয় কর এবং নিজেকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না”। [সূরা বাক্বারা, আয়াত ১৯৫] এ ধ্বংস ছিল উন্নতি সাধন করার জন্য আমাদের ধন-সম্পদের সাথে থেকে যাওয়া এবং (জিহাদের ময়দানে) যুদ্ধ করতে অবহেলা করা। আবু আইয়ুব কখনোই আল্লাহর পথে যুদ্ধ করা বন্ধ করেন নি, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাঁকে কন্সটান্টিনোপলে দাফন করা হয়। সহীহ আত তিরমিযীতে আলবানী সহীহ বলেছেন।
.
তুহফাত আল আহওয়াসি-তে বর্ণিত হয়েছেঃ উক্ত হাদিস এ মর্মে নির্দেশনা প্রদান করে যে, নিজেকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে জিহাদি ব্যয়ের ক্ষেত্রে নিজের পরিবার ও ধন-সম্পদের দেখাশুনা করা।
.
২) জিহাদে অবহেলা করা অপমান ও বঞ্চনার একটি কারণ। আবু দাউদ (৩৪৬২) কর্তৃক বর্ণিত, ইবনে উমার বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “যখন তোমরা ঈনা লেনদেনে (লেনদেনের একটি পদ্ধতি যাতে রিবা বা সুদের নিষেধাজ্ঞাকে কৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়) জড়িত হবে, গরুর লেজ আঁকড়ে ধরবে, কৃষিকাজেই সন্তুষ্ট থাকবে (যখন কিনা জিহাদ করা ফরজ) এবং জিহাদ ছেড়ে দিবে, তখন আল্লাহ তোমাদের উপর অপমান চাপিয়ে দিবেন যা দূর করা হবে না যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের দ্বীনে ফিরে আসো, আল্লাহ তোমাদের উপর অপমান চাপিয়ে দিবেন যা দূর করা হবে না যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের দ্বীনে ফিরে আসো, আল্লাহ তোমাদের উপর অপমান চাপিয়ে দিবেন যা দূর করা হবে না যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের দ্বীনে ফিরে আসো”। সহীহ আবু দাউদ কিতাবে আলবানী সহীহ বলেছেন।
.
প্রকৃতপক্ষে আমাদের রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্য বলেছেন, কারণ আজকের দিনে মুসলিমদের অবস্থার দিকে যে ব্যক্তি দৃষ্টিপাত করবে সে দেখতে পাবে যে, তারা তাদের দ্বীন সম্পর্কে খুবই উদাসীন হয়ে পড়েছে। তারা সুদ গ্রহণ করছে এবং তারা এই দুনিয়ার প্রতি মনোযোগী হয়ে পড়েছে এবং তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করাকে অবহেলা করছে। আর এর ফলাফল কি? আল্লাহ তাদেরকে অপমানিত করেছেন, পূর্ব ও পশ্চিমে তারা অপমানিত ও নিচু হয়েছে। তারা তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সাহায্য প্রার্থনা করছে। আর তারা অনুধাবন করতে পারছে না যে, এই অপমান তাদের উপর থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে না যতক্ষণ না তারা তাদের দ্বীনের দিকে ফিরে যায়, যেমনটি সত্যবাদী রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন।
.
নিঃসন্দেহে আল্লাহ সত্য বলেছেনঃ মুনাফিকদের সুসংবাদ দাও যে, নিশ্চয়ই তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। যারা মুমিনদের পরিবর্তে কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারা কি তাদের কাছে সম্মান চায়? অথচ যাবতীয় সম্মান আল্লাহর। [সূরা নিসা, আয়াত ১৩৮-১৩৯ এর ভাবানুবাদ]
.
৩) জিহাদে অবহেলা করা এ পৃথিবীতে এবং আখিরাতে আল্লাহর শাস্তি পাওয়ার কারণ। আবু দাউদ (২৫০৩) আবু উমামাহ থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি যুদ্ধ করল না অথবা কোন গাযীকে (যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে) সজ্জিত করল না অথবা গাযীর অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের কোন উপকার করল না, তাকে আল্লাহ কিয়ামতের পূর্বে আল ক্বরী’আহ দ্বারা আঘাত করবেন”। সহীহ আবু দাউদ কিতাবে আলবানী হাসান বলেছেন। আল ক্বরী’আহ অর্থ এমন দূর্যোগ যা হঠাৎ সংঘটিত হয়ে থাকে।
.
আর আল্লাহ বলেছেনঃ (ভাবানুবাদ) “হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের কি হলো যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহর পথে (জিহাদে) বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা ভারাক্রান্ত হয়ে মাটিতে বসে পড়ো? তবে কি তোমরা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন নিয়ে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? বস্তুত পার্থিব জীবনের ভোগ-বিলাস তো পরকালের তুলনায় অতি সামান্য। যদি তোমরা (জিহাদে) বের না হও তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রদান করবেন এবং তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক জাতি সৃষ্টি করবেন, আর তোমরা তাঁর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান”। [সূরা তাওবা, আয়াত ৩৮-৩৯]
.
যে শাস্তি সম্পর্কে তিনি (আল্লাহ) তাদেরকে সতর্ক করেছেন তা শুধুমাত্র আখিরাতের শাস্তি নয়, বরং তা এ দুনিয়া এবং আখিরাতের শাস্তি, অপমানের শাস্তি যা আপতিত হয় তাদের ওপর যারা জিহাদে অংশগ্রহণ করে না, ভাল জিনিস (জিহাদের সুফল) থেকে বঞ্চিত হওয়ার শাস্তি যার মাধ্যমে কাফির শত্রুরা উপকৃত হয়ে থাকে। এছাড়াও যারা জিহাদ ত্যাগ করে তারা জিহাদে (সাধারণত) যে পরিমাণ জীবন ও সম্পদ হারানো যায় তার চেয়েও অধিক পরিমাণে জীবন ও সম্পদ হারাবে, আর তারা তাদের সম্মান ও মর্যাদা বজায় রাখার জন্য যতটুকু প্রয়োজন তার চেয়েও অধিক পরিমাণে ত্যাগ স্বীকার করবে। এমন কোন উম্মাহ অতিবাহিত হয় নি যারা জিহাদ ত্যাগ করেছে আর আল্লাহ তাদের উপর অপমান চাপিয়ে দেন নি। এভাবে শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদের ক্ষেত্রে যতটুকু প্রয়োজন ছিল, (জিহাদ না করার) পরিমাণ তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি। [আল জিলাল, ৩/১৬৫৫]
.
আস সা’দি (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ (পৃষ্ঠা ৫৩২) “হে ঈমানদারগণ” তোমরা কি ঈমানের শর্তাবলি সম্পর্কে জানো? তা হল তোমরা আল্লাহর নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে দ্রুততা অবলম্বন করবে এবং তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করবে এবং তোমাদের দ্বীনের স্বার্থে জিহাদে গিয়ে তাঁর শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করবে। তাই “তোমাদের কি হলো যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহর পথে (জিহাদে) বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা ভারাক্রান্ত হয়ে মাটিতে বসে পড়ো” অর্থাৎ তোমরা এত অলস ও দুনিয়ার প্রতি এত আগ্রহী কেন?
.
“তবে কি তোমরা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন নিয়ে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে” তোমাদের এরূপ কর্মকাণ্ড তাদের অনুরূপ যারা এ দুনিয়া নিয়ে সন্তুষ্ট এবং যারা দুনিয়াবি স্বার্থে সংগ্রাম করে, আখিরাতের প্রতি তারা মোটেই খেয়াল করে না কারণ তারা তাতে বিশ্বাসই করে না।
.
“বস্তুত পার্থিব জীবনের ভোগ-বিলাস তো পরকালের তুলনায় অতি সামান্য” যার প্রতি তোমরা আগ্রহী এবং যা তোমরা পছন্দ করে থাকো। আল্লাহ কি তোমাদেরকে এমন কারণ দেন নি, যাতে তোমরা দুটি বিষয়কে (দুনিয়া ও আখিরাতকে) পরিমাপ করতে পারো এবং দেখতে পারো কোন বিষয়টি অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্যতা রাখে? বিষয়টি কি এমন নয় যে, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ দুনিয়া আখিরাতের তুলনায় কিছুই নয়?
.
দুনিয়াবি এই জগতের হিসেবে একজন মানুষের জীবন কিরূপ হতে পারে, যেখানে শুধুমাত্র দুনিয়াবি স্বার্থ উদ্ধার করাই তার চূড়ান্ত লক্ষ্য ও উদ্বেগের বিষয় এবং তার সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা ও মনোযোগকে সে এই সংক্ষিপ্ত জীবনের প্রতি সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে যেখানে তা (দুনিয়া) সঙ্কট ও বিপদ-আপদ দ্বারা পরিপূর্ণ?
.
আপনি কিভাবে এটিকে (দুনিয়াকে) আখিরাতের তুলনায় পছন্দ করতে পারেন, যেখানে (অর্থাৎ আখিরাতে) রয়েছে কোন ব্যক্তির চাহিদা অনুযায়ী সকল প্রকার আমোদ-প্রমোদের ব্যবস্থা, যেখানে আপনি চিরকাল থাকবেন? যে ব্যক্তি আখিরাতের তুলনায় এই দুনিয়াকে বেশি পছন্দ করবে তার অন্তরে ঈমান বদ্ধমূল থাকতে পারে না এবং তাকে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করা যায় না। অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে সতর্ক করেন, যদি তারা (জিহাদের পথে) এগিয়ে না যায়। তিনি বলেনঃ
.
“যদি তোমরা (জিহাদে) বের না হও তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রদান করবেন” এই দুনিয়াতে এবং আখিরাতে, কারণ আদেশ দেওয়ার পরও (জিহাদে) বের না হওয়া একটি কবিরা গুনাহ যা সবচেয়ে কঠোর শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। কেননা এটি একটি বিরাট বড় ক্ষতির কারণ। কেননা যে ব্যক্তি (জিহাদ থেকে) পিছনে থাকে সে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্যতা করেছে এবং এমন কাজ করেছে যা তিনি (অর্থাৎ আল্লাহ) নিষিদ্ধ করেছেন, আর সে আল্লাহর দ্বীনের পক্ষে অথবা আল্লাহর কিতাব ও তাঁর বিধানকে রক্ষা করতে সাহায্য করেনি। সে তার মুসলিম ভাইকে সে সকল শত্রুর বিরুদ্ধে সাহায্য করেনি, যারা তাদেরকে উচ্ছেদ করতে চায় এবং তাদের দ্বীনকে নির্মূল করতে চায়। যাদের ঈমান দূর্বল তারা হয়ত তার (জিহাদ ত্যাগের) আদর্শকে অনুসরণ করতে পারে এবং যারা আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িত রয়েছে তারা হয়ত তার কারণে নিরুৎসাহিত হতে পারে। এভাবে সে ঐ সকল ব্যক্তিদের অনুরূপ হয়ে যাবে যাদেরকে আল্লাহ কঠোর শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করেছেনঃ “যদি তোমরা (জিহাদে) বের না হও তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রদান করবেন”।
.
আল্লাহ তাঁর দ্বীনকে রক্ষা করার এবং তাঁর বাণীকে সমুন্নত করার অঙ্গীকার করেছেন, আপনি আল্লাহর আদেশ মান্য করেন বা নাই করেন। “আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান” তিনি যা চান তা করতে তিনি অক্ষম নন এবং কেউ তাঁকে ব্যর্থ করতে পারে না। আমরা আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি যেন তিনি মুসলিমদেরকে তাদের দ্বীনে ফিরিয়ে আনেন এবং যেন তাদের উপর থেকে লাঞ্ছনাকে দূর করে দেন। আর আল্লাহই ভাল জানেন।
.
মূল ইংরেজি ফাতওয়ার লিংকঃ https://islamqa.info/en/46807

পঠিত : ২৯৩ বার

মন্তব্য: ০