Alapon

নির্দ্বিধায় যাদের কাফির আখ্যায়িত করা উচিত...



১. কমিউনিস্ট : যারা কমিউনিজমকে জীবনদর্শন এবং জীবনের মূল চাবিকাঠি মনে করে। কারণ, এটি ইসলামি চিন্তাধারা ও তার ধর্মবিশ্বাসের সম্পূর্ণ বিপরীত। আর কমিউনিজমের অনুসারীরা মনে করে, ধর্ম হচ্ছে মানবজাতির জন্য আফিমের মতো এক ভয়ংকর নেশাসদৃশ। তারা শুধু ইসলাম নয় বরং সব ধর্মেরই বিরোধিতা করে। কিন্তু বিশেষভাবে ইসলামকে তারা শত্রুতা এবং আক্রমণের মূল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। কারণ, ইসলামই হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ ধর্মবিশ্বাস এবং সঠিক জীবনদর্শন।

২. সেকুলার শাসক : সেকুলার দলের নেতারা আল্লাহপ্রদত্ত শরিয়তের প্রকাশ্য বিরোধিতা করে থাকে। তাদের মূল দর্শন ও কথা হচ্ছে--- রাষ্ট্র ও দ্বীন সম্পূর্ণ ভিন্ন ও পৃথক দুটি বিষয়। এদেরকে যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদর্শের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়, তখন এরা প্রকাশ্যে অস্বীকার করে এবং তা পালনে নিজেদের স্বাধীন বলে মনে করে। আরও ভয়ংকর কথা হলো, তারা আল্লাহর শরিয়ত ও দ্বীন প্রতিষ্ঠার আহ্বানকারীদের কঠোরভাবে প্রতিহত করতে চায়।

৩. পথভ্রষ্ট সম্প্রদায় : ইসলাম থেকে প্রকাশ্যে বের হয়ে যাওয়া ধর্মের অনুসারী বলে দাবি করা কিছু সম্প্রদায়। যেমন : দুরুয, নুসাইরিয়া, ইসমাইলিয়া ইত্যাদি এবং তাদের মতো বিভিন্ন বাতিনি ফিরকা। ইমাম গাযালিসহ অনেকের মতে, “এরা বাহ্যত অল্প কিছু বিষয়ের বিরোধিতা করে, কিন্তু এদের মনে রয়েছে শুধুই কুফরি।”

ইমাম তাকিউদ্দিন ইবনে তাইমিয়া বলেন, “এরা ইহুদি-খ্রিস্টানদের থেকেও ভয়ংকর কাফির।” কারণ, তারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত ইসলামের মৌলিক বিষয়কেও অস্বীকার করে। বর্তমান সময়ে এর উদাহরণ হচ্ছে ‘বাহায়ি’ সম্প্রদায়। এদের প্রবর্তিত ধর্মদর্শন দেখলে বোঝা যায়, তারা সম্পূর্ণ নতুন এক ধর্ম প্রবর্তন করেছে। আরেকটি হলো কাদিয়ানি সম্প্রদায়, যারা সর্বশেষ নবি ও রাসূল মুহাম্মাদ সা.-এর পর নতুনভাবে নবুয়তের দাবি করেছে।
.
আমাদের উচিত, যারা কোনোরকম লজ্জিত না হয়ে প্রকাশ্যে নিজেদের কুফরির কথা বলে বেড়ায়, তাদের কাফির আখ্যায়িত করা। কিন্তু যারা প্রকাশ্যে নিজেদের মুসলিম বলে; যদিও বাস্তবে তাদের মনে ঈমানের লেশমাত্র নেই, আমরা তাদের কাফির আখ্যায়িত করা থেকে বিরত থাকব। কারণ, ইসলামি পরিভাষায় তাদের মুনাফিক বলা হয়। যারা মৌখিকভাবে বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’, কিন্তু তাদের মনোজগতে ঈমানের কোনো স্থান নেই। তাদের কর্মকাণ্ড তাদের মুখের কথাকে সত্যায়িত করে না। দুনিয়াতে বাহ্যিক দাবি অনুযায়ী তাদের ওপর মুসলিমের হুকুম সাব্যস্ত হবে, আর আখিরাতে তারা পেটে লুকিয়ে রাখা কুফরির কারণে জাহান্নামের নিকৃষ্ট তলানিতে অবস্থান করবে।

লেখক : ড. ইউসুফ আল কারযাভী

পঠিত : ৩২৩ বার

মন্তব্য: ০