Alapon

সূরা ইনশিরাহ থেকে আমাদের জন্য শিক্ষা...?



৯৩ নাম্বার সূরা, সূরা আদ-দোহাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। তিনটি সহজ শব্দের মাধ্যমে আমি এই তিন অংশকে আপনাদের অন্তরে গেঁথে দিতে চাই।

১। আশা। অর্থাৎ, আল্লাহ আপনাকে (রাসূলুল্লাহকে) পরিত্যাগ করেননি। আল্লাহ আপনার প্রতি অসন্তুষ্ট নন। আপনার জন্য শুরুর দিকের চেয়ে শেষের দিক উত্তম হবে। আর আল্লাহ আপনাকে এতো বেশি পরিমাণে দিবেন যে আপনি খুশি হয়ে যাবেন। এ সবকিছু এক কথায়- আশা।

২। এরপর আল্লাহ যখন বললেন, আপনি এতিম ছিলেন আর আল্লাহ আপনাকে আশ্রয় দিয়েছেন। আপনি পথ খুঁজছিলেন আর তিনি আপনাকে পথ দেখিয়েছেন। আপনি নিঃস্ব ছিলেন, অতঃপর তিনি আপনাকে অভাবমুক্ত করলেন।

আল্লাহ এখানে রাসূলুল্লাহ (স)কে তাঁর অনুগ্রহগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তাই না? তাই, আমি এই দ্বিতীয় অংশকে বলবো- কৃতজ্ঞতা।

৩। সেজন্য ইয়াতীমের প্রতি কঠোর হবেন না। ভিক্ষুককে আপনি ধমক দিবেন না। আর আপনার প্রতি আপনার রবের অনুগ্রহ বর্ণনা করুন।

অন্য কথায়, মানুষকে আশা দান করুন। প্রত্যাশা দান করুন।

তাহলে তিনিটি অংশ হলো: ১। আশা ২। কৃতজ্ঞতা ৩। মানুষকে আশা প্রদান।
এখন, যদি পরের সূরা, সূরা আলাম-নাশরাহ পড়েন, দেখবেন এটি শুরু হয়েছে আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে। মানে, এগুলোর জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হোন। তাহলে প্রথম অংশ "কৃতজ্ঞতা" নিয়ে। এরপর মাঝখানে বলা হলো "কষ্টের সাথেই রয়েছে সুখ।" এখানে আশা দেখানো হচ্ছে।

তাহলে আগের সূরা অর্থাৎ ৯৩ নাম্বার সূরা, সূরা আদ-দোহার প্রথম অংশ 'আশা' নিয়ে আর ২য় অংশ 'কৃতজ্ঞতা' নিয়ে। অন্যদিকে, ৯৪ নাম্বার সূরা, সূরা আলাম-নাশরাহ এর প্রথম অংশ 'কৃতজ্ঞতা' নিয়ে আর দ্বিতীয় অংশ 'আশা' নিয়ে।

সূরা আদ-দোহা শুরু হয়েছে 'আশা' নিয়ে আর তাই এটি শেষ হয়েছে 'মানুষকে আশা দাও' এই মেসেজ দিয়ে।

সূরা আলাম নাশরাহ শুরু হয়েছে 'কৃতজ্ঞতা' দিয়ে। আপনি কার প্রতি কৃতজ্ঞ? আল্লাহর প্রতি। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা কিভাবে প্রকাশ করবেন? তাঁর ইবাদাত করার মাধ্যমে। আর তাই এটি শেষও হয়েছে আল্লাহর ইবাদাত করার নির্দেশ দিয়ে।

এখন, এখান থেকে আমাদের জন্য শিক্ষাঃ
আমাদের ধর্ম আমাদের কাছ থেকে মূলত দুইটি জিনিস দাবি করে। যা আমাদের অন্তরে ধারণ করা উচিত। আর তা হলোঃ
১। আল্লাহর প্রতি আমাদের আশা থাকতে হবে।
২। আল্লাহর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা থাকতে হবে।

আশা হলো ভবিষ্যতের জন্য। আর কৃতজ্ঞতা হলো অতীতের জন্য। বুঝতে পারছেন? যখন অতীত নিয়ে ভাববেন, তখন আপনার অন্তর কৃতজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া উচতি। আর যখন ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করবেন, তখন অন্তর কী দিয়ে ভরপুর হয়ে যাওয়া উচিত? আশা দিয়ে।

এখন, যদি এই দুইটি বীজ অন্তরে অবস্থান করে তাহলে এর থেকে দুইটি চারাগাছ উৎপন্ন হবে। কি কি সেগুলো?

১। আপনি মানুষের যত্ন নিবেন। মানুষকে আশা দিবেন।
২। আপনি নিজে আল্লাহর আরও উত্তম ইবাদাতকারিতে পরিণত হবেন।
অন্য কথায়, একদিকে আপনি মানুষের প্রতি ভালো হবেন, আবার অন্যদিকে আল্লাহর সাথেও আপনার উত্তম একটি সম্পর্ক গড়ে উঠবে।


- নোমান আলী খান

পঠিত : ১৭১৮ বার

মন্তব্য: ০