Alapon

আল্লাহু আকবার ধ্বনি এবং কতিপয় সাংবাদিকের গাত্রদাহ


মুয়াজ্জিন যখন আল্লাহু আকবার ধ্বনি দেয় তখন সে কোনো দলের দিকে আহ্বান জানায় না। ঈমানদার যখন আল্লাহু আকবার বলে সে মূলত আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও বড়ত্ব ঘোষণা করে
চট্টগ্রামের একটি জনসভায় একটি রাজনৈতিক দলের একজন নেতা নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারিত করায় কোনো কোনো সাংবাদিকের চরম গাত্রদাহ হয়েছে। তারা আল্লাহু আকবার ধ্বনিকে কোনো একটি দলের শ্লোগাণ বলে আখ্যায়িত করার হীন চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। আল্লাহু আকবার ধ্বনি কোনো দল গোষ্ঠী কিংবা গোত্রের ধ্বনি নয়। এটি প্রতিটি বিশ্বাসী মানুষের হৃদয়ের তন্ত্রীতে এ ধ্বনি সর্বদা উচ্চারিত হয়। একে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা বা ধলীয় শ্লোগাণ বলে আখ্যায়িত করা আল্লাহর অস্তিত্বের সাথে ধৃষ্টতার শামিল।
গোটা সৃষ্টি জগতের সকল কিছুর নিয়ন্তা, এর সৃষ্টি, স্থিতি, স্থায়িত্ব, পরিচালনা, মালিকানা, কর্তৃত্ব এবং নিরকুশ ক্ষমতা একমাত্র কেবলমাত্র শুধুমাত্র মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের হাতে নিবদ্ধ। তিনি রাজাধিরাজ, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। সকল কালে সকল যুগে কেউ স্বীকার করুক আর না করুক সব মানুষের প্রভ, মনিব এবং মালিক একমাত্র মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। মানুষের ¯্রষ্টা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। পৃথিবীতে মানুষকে তিনি তার খলিফা হিসেবে প্রেরণ করার পর মানুষের জীবনাচার, তার জীবন পরিচালনা বিধি, তার জীবনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং দায়িত্ব কর্তৃব্য সম্পর্কে অবহিত করা এবং মানুষকে ¯্রস্টার নির্দেশিত পথে পরিচালনা করার জন্য যাদেরকে প্রেরণ করেছেন তারা হলেন আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম। নবীদের আহŸান ছিলো তোমরা সকলে এক আল্লাহর দাসত্ব করো। আমরা এক বাক্যে বলতে পারি। মানুষের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য হচ্ছে। এক আল্লাহকে মেনে নেয়া। আল্লাহর নির্দেশের সামনে মাথা নত করার আগে ঘোষণা দেয়া যে, আল্লাহ বড়, আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ সর্বজ্ঞ, তিনি একক, তিনি মহান, তিনি মহিম, তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। তিনিই সকল কিছুর আধার। আল্লাহ ব্যতীত পৃথিবীর কোনো কিছু কল্পনা করা মানে নিজের অস্তিত্বতে অস্বীকার করা।
¯্রষ্টা বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষের কাছে এর চেয়ে প্রিয় শব্দ এর চেয়ে প্রিয় বাক্য আর কিছু হতে পারে না। প্রতিদিন পাঁচবার মুয়াজ্জিন নামাজের মাধ্যমে আহŸান করেন, আল্লাহু আকবার ধ্বনির মাধ্যমে। সালাতে প্রতিটি আরকানে আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারিত হয়। পশু পাখি জবেহ করতে আল্লাহু আকবার ধ্বনি দেয়া ওয়াজিব। এ ধ্বনি ব্যবহার না হলে সেই পশুর গোস্ত হালাল হবে না। বিশ্বাসী হৃদয়ের আবেগের ধ্বনি আল্লাহু আকবার। যে কোনো ভালো সংবাদে মুমিনের মূখে নিঃসৃত হয় আল্লাহু আকবার। বিপদে আপদে উচ্চারিত হয় আল্লাহু আকবার। শয়তানের ওয়াসওয়াসা হতে বাঁচতে উচ্চারিত হয় আল্লাহু আকবার। জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে আমাদের নিঃশ্বাসকে বুলন্দ করে আল্লাহু আকবার। সাহসের বাতিঘর আল্লাহু আকবার। দুশমনের হৃদয়ে কম্পন ধরাতে মুমিনের প্রিয় ধ্বনি আল্লাহু আকবার। এটিকে সাংবাদিক নামক যে ব্যক্তি কোনো দলের শ্লোগাণ বলে প্রচার করেছে, তিনি যদি ¯্রষ্টা বিশ্বাসী না হন, তার কাছে আহŸান থাকবে ¯্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বীকার করে নিজের অস্তিত্বকে স্বীকার করা যায় না, তাই ¯্রষ্টা সম্পর্কে জানুন। যদি তিনি আল্লাহ সম্পর্কে জানেন কিন্তু আল্লাহর নিরংকুশ ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব সম্পর্কে তিনি সন্দিহান থাকেন তাঁর প্রতি আহŸান থাকবে- আল্লাহর কর্তৃত্ব, ক্ষমতা এবং তাঁর নিরংকুশ প্রভূত্ব সম্পর্কে জানুন। ¯্রষ্টা বিশ্বাসী মানুষ তার জীবনের কঠিন বাস্তবতা দিয়ে, তার প্রতিটি ধ্বনিতে, তাঁর নিঃশ্বাসে তার বিশ্বাসে য়ে ধ্বনিকে সবচেয়ে বেশি আপন করে ভালোবাসে তা হচ্ছে আল্লাহু আকবার।
দ্বিতীয় প্রসঙ্গ হচ্ছে, যে রিপোর্টার সংবাদটি তৈরী করেছেন, তিনি আল্লাহ সম্পর্কে এবং আল্লাহু আকবার ধ্বনি সম্পর্কে জানতে পারেন। ঐ টিভি চ্যানেলে কি একজনও এমন ছিলেন না। যার জানা নেই যে, আল্লাহু আকবার মুসলামনের সবচেয়ে প্রিয় ধ্বনি ? এতে করে বোঝা যায়, আল্লাহু শব্দের মানুষের চির দুশমন শয়তানী চিন্তার আছর ঐ টিভি চ্যানেলের গোটা পরিবেশকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। শতকরা নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে আল্লাহু আকবার ধ্বনিকে নিয়ে প্রশ্নবোধক নিউজ তৈরী করে তাকে দলীয় শ্লোগাণ আখ্যায়িত করে ঐ টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। এ ধরনের নিউজ তৈরী করে তারা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মুসলমানের বিশ্বাস, চিন্তা, এবং অনভূতিতে আঘাত হেনেছেন। আশা করি ঐ টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল চিন্তা, ভুল দর্শন পরিত্যাগ করবেন এবং এ ধরণের স্পর্শকাতর নিউজ পরিবেশন করার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইবেন।

পঠিত : ১৪২০ বার

মন্তব্য: ০