Alapon

পৃথিবীর দিকে তাকালে আমাদের চিন্তা করা উচিত...



কুরআনে প্রত্যেকবার যখনি আল্লাহ বিশ্ব দেখার কথা বলেছেন- পর্বতের দিকে তাকাও, উটের দিকে তাকাও, পৃথিবীর দিকে তাকাও, গাছপালার দিকে তাকাও, পাখির দিকে তাকাও ইত্যাদি ইত্যাদি; তখন একটি জিনিস আপনি বার বার পাবেন। "লাআল্লাকুম তা'কিলুন-সম্ভবত তোমরা বুঝতে পারবে।" "লাআল্লাকুম তাতাফাক্কারুন।" "লিউলিল আলবাব।" এমন মানুষদের জন্য যারা চিন্তা করে। এমন মানুষদের জন্য যারা গভীর ভাবনায় ডুবে যায়। এমন মানুষদের জন্য যারা বিশ্লেষণ করে।

অন্য কথায়, পৃথিবীর দিকে তাকালে আপনার কী করা প্রয়োজন? চিন্তা করা। মস্তিষ্ক ব্যবহার করা।

আমি আপনাদের কী বলতে চাচ্ছি। আয়াতুন নূর হলো হার্ট নিয়ে। আর 'তোমরা কি দেখো না?' এমন আয়াতগুলো মাইন্ড বা চিন্তাশক্তি নিয়ে।

অন্য কথায়, আয়াতুন নূর হলো আপনার আধ্যাত্মিক জীবন রক্ষা নিয়ে (আয়াতুন নূরের ব্যাখ্যার লিঙ্ক কমেন্টে)। আর চারদিকে দেখার আয়াতগুলো আপনার বুদ্ধির সংরক্ষণ নিয়ে। আমাদের দ্বীন আসলে এ দু'টি জিনিসের সমন্বয় রক্ষা করে চলতে বলে। একদিকে এটি আধ্যাত্মিক এবং অন্যদিকে এটি বুদ্ধিবৃত্তিক।

আপনি যদি শুধু বুদ্ধিবৃত্তিক হোন এতে সমস্যা আছে। আবার যদি শুধু আধ্যাত্মিক হোন তাতেও সমস্যা আছে।

আল্লাহ আমাদের পূর্বে আসা দুটি জাতির উদাহরণ দিয়েছেন। ইয়াহুদিরা ছিল খুবই বুদ্ধিমান জাতি। খুবই জ্ঞানবান জাতি। তাদের মাঝে ছিল প্রচুর স্কলার। তাদের সমস্যাটা কী ছিল? আল্লাহ বলেন- "সুম্মা কাসাত কুলুওবুকুম- অতঃপর তোমাদের অন্তর শক্ত হয়ে গেল।"

জ্ঞানগত দিক থেকে শক্তিশালী কিন্তু আধ্যাত্মিক দিক থেকে এবং আবেগের দিক থেকে মৃত।
বিপরীত প্রান্তে আছে খ্রিষ্টানরা। খুবই আধ্যাত্মিক জাতি। এ মানুষগুলো গডের জন্য প্রচুর কান্নাকাটি করে। তারা শুধু কাঁদতে থাকে। গির্জায় গান গাওয়ার সময় কাঁদে, গির্জায় নাচার সময় কাঁদে, কথা বলার সময় কাঁদে, আপনিও যদি গড নিয়ে কিছু বলেন তারা কাঁদতে শুরু করে। মুসলমানদের কোনো লেকচারে এলেও এরা কাঁদে। মুসলমানদের চেয়েও ওরা বেশি কাঁদে। তারা আসলেই প্রচুর কাঁদে। তারা খুবই খুবই আধ্যাত্মিক এক জাতি। তাদের কান্নাকাটি দেখলে আপনি ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়বেন। আমি ঈর্ষান্বিত।

কিন্তু তাদের কী নেই? বুদ্ধিবৃত্তিক দিক। প্রকৃতপক্ষে, আপনি যদি তাদের নিকট প্রমাণ উপস্থাপন করেন, যুক্তি উপস্থাপন করেন তারা বলে উঠে- "না, না, না। আমার অন্তরে গড আছে। আমাকে এসব বলতে এসো না। আমি বুদ্ধি ব্যবহার করতে চাই না। বুদ্ধি শয়তানের কৌশল।"

তাদেরকে উপহাস করার জন্য এগুলো বলছি না। বরং এ দিকটা দেখানোর জন্য যে, তারা বুদ্ধির চেয়েও আধ্যাত্মিকতার উপর বেশি গুরুত্ব দেয়।

তাহলে এখন, আপনার সামনে আছে দুইটি চরম দিক। ইয়াহুদিরা এক চরম প্রান্তে। আর নাসারারা আরেক চরম প্রান্তে।

এখন, আমরা যদি মধ্যপন্থী জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই, তাহলে আল্লাহ কোন কোন বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে বলেছেন? হার্ট এবং মাইন্ড। অন্তর এবং বুদ্ধি উভয়টার উপর। আমাদেরকে নামাজে দাঁড়িয়ে যেমন কাঁদতে হবে ঠিক তেমনি জ্ঞানগত দিক থেকেও উৎকর্ষতা সাধন করতে হবে। কুরআন অধ্যয়নে মনোনিবেশ করতে হবে। আমাদের উভয়টা থাকতে হবে।

- নোমান আলী খানের আলোচনা অবলম্বনে
- Surah Nur 1
- বায়্যিনাহ টিভি

পঠিত : ৮৬৬ বার

মন্তব্য: ০