Alapon

আমরা সাধারণ মানুষেরা জাহান্নামের আগুন নিয়ে অজ্ঞ থাকি...



ধরুন, এক ব্যক্তি তার বাচ্চাদের নিয়ে একটি বন দেখতে গেলো। সেখানে ছোট ছোট প্রাণীরা আছে; যেমন, ইঁদুর, পিঁপড়া ইত্যাদি ইত্যাদি। আর আপনি বনের ভেতর দিয়ে হেঁটে চলছেন। হঠাৎ দেখলেন, বিশাল এক সিংহ কোত্থেকে সামনে এসে উপস্থিত হলো। কি হবে তখন? আপনি কি তখন ছোট ছোট ইঁদুর আর পিঁপড়া নিয়ে চিন্তা করবেন?

আপনি তখন আপনার প্রচেষ্টার শতভাগ ব্যয় করবেন এই সিংহের আক্রমন থেকে বাচ্চাদের এবং নিজেকে রক্ষা করার জন্য। ছোট ছোট সমস্যাগুলো আপনার মাথা থেকে হারিয়ে যাবে। মাটিতে থাকা পিঁপড়াগুলো সম্পর্কে আপনি তখন কোনো চিন্তাই করবেন না।

বর্তমানে আমরা পিঁপড়া, ইঁদুর আর ছোট ছোট পোকামাকড় নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু সত্যিকারের সমস্যা নিয়ে আমাদের কোনো ভাবনা নেই। আমরা ছোট সমস্যাগুলো নিয়েই পড়ে আছি।
এই দুনিয়াতে আমাদের বাচ্চারা কিভাবে উন্নত জীবন যাপন করবে আমরা শুধু এটা নিয়েই চিন্তিত। তারা জাহান্নামের আগুন থেকে কীভাবে নিজেদের বাঁচাবে এ ব্যাপারে আমাদের কোনো চিন্তা আছে? এ ব্যাপারটার প্রতি আমরা কি আদৌ কোনো গুরুত্ব প্রদান করি?
এই জগতে আমাদের সবার সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হওয়া উচিত- কিভাবে নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাবো।

যে দুইটি কারণে মানুষ দোজখের আগুন নিয়ে চিন্তিত নয় তা হলো- ১. জাহালাহ এবং ২. গাফলাহ জাহালাহ মানে অজ্ঞতা। মানুষ ব্যাপারগুলো ভালো করে জানে না। আর গাফলাহ মানে- তারা আগুনের ব্যাপারটা জানে। কিন্তু এটা নিয়ে চিন্তা করতে চায় না। কারণ, এটা তাদের আনন্দ নষ্ট করে দেয়। তারা শুধু এ দুনিয়া উপভোগ করতে চায়।

এর মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অজ্ঞতা। বিশেষ করে মুসলিম নেতাদের অজ্ঞতা। অধিকাংশ মুসলিম নেতাদের মূল চিন্তা হলো ছোট ছোট সমস্যাগুলো। কারণ, এ ধর্ম কেন এতোটা সিরিয়াস তারা এ ব্যাপারটা ভালো করে বুঝার চেষ্টা করেনি। এখন, আপনি যদি অজ্ঞ মানুষদের নেতা মানেন কিভাবে পথ খুঁজে পাবেন? রাসূলুল্লাহ (স) কখনোই মাইনর ইস্যুগুলোকে (ছোট বিষয়গুলোকে) মেজর ইস্যুতে (বড় বিষয়ে) পরিণত হতে দেননি। তাঁর একমাত্র মূল চিন্তা ছিল মানুষকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানো।

অধিকাংশ সময় আমরা সাধারণ মানুষেরা জাহান্নামের আগুন নিয়ে অজ্ঞ থাকি এবং যাদের কথামতো চলি তারাও এ নিয়ে অজ্ঞ থাকে। হয়তো তারা আন্তরিক। কিন্তু, এ আন্তরিকতা যথেষ্ট নয়। আপনাকে জ্ঞান অর্জনও করতে হবে। কুরআন যে ব্যাপারটাকে তার মূল কনসার্ন বানিয়েছে আপনাকেও সেটাকে মূল কনসার্ন বানাতে হবে।

- ড. আকরাম নদভীর আলোচনা থেকে

পঠিত : ৩৬২ বার

মন্তব্য: ০