Alapon

শিশুর জন্মের প্রথম তিনবছর এবং কিছু কথা...



হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় শিশুদের বিকাশ নিয়ে একটা গবেষণা করে।সেখানে তারা দেখায় যে, একটা শিশু তিন বছর বয়সের পুর্বেই প্রায় এক হাজার শব্দ বুঝার সক্ষমতা আছে। আর এই শব্দগুলো সে তার বাকি জীবনে কথাবার্তায় ব্যবহার করে থাকে।এজন্য ঐ তিনটা বছর একটা বাচ্চার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রায়শই দেখা যায় যেসব বাচ্চারা দরিদ্র আর্থ-সামাজিক ব্যকগ্রাউন্ড থেকে উঠে আসছে তারা পড়াশোনায় ভালো করতে পারছে না।আর এজন্য আমেরিকা ১৯৬৫ সালে প্রচুর পয়সা খরচ করে 'হেড স্টার্ট' নামে একটা প্রোগ্রাম চালু করে; যেখানে তিন বছরের বাচ্চাদের প্রি স্কুল প্রশিক্ষণের একটা ব্যবস্থা করে যাতে গরিব বাচ্চারা পরবর্তীতে স্কুলে এসে ভালো করতে পারে।কিন্তু এই প্রোগ্রাম আশানুরূপ লক্ষ্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়।
এই ব্যর্থতার পিছনে দুইটা কারণ উল্লেখ করা হয়।

(১) তিন বছর বয়সে প্রোগ্রাম শুরু করায় অনেক লেট হয়ে যায়।গবেষণা বলছে প্রথম দুই বছরেই হিউম্যান পার্সোনালিটি তৈরি হয় এবং প্রথম তিন বছরেই বেসিক স্কিল অর্জিত হয় যা একটা বাচ্চার বাকী জীবনে শেখার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

(২) প্রোগ্রামে বাচ্চাদের অভিভাবকদের ইনভলভ করা হয়নি।ফলে বাচ্চারা প্রি স্কুলে সেন্টার থেকে বাসায় আসলে পুনরায় আগের পরিবেশে ফিরে যাচ্ছে।

'হেড স্টার্ট' ব্যর্থ হওয়ায় তারা মিসৌরি স্টেটে আরেকটা প্রোগ্রাম চালু করে।যেখানে বাচ্চার পাশাপাশি অভিভাবকদের প্রতিও নজর রাখা হয়,অভিভাবকরা বাচ্চার প্রথম শিক্ষক এই স্লোগানকে সামনে রেখে।

৩৮০ টি ফ্যামিলির উপর চারবছর ব্যাপী এই প্রোগ্রাম চলতে থাকে।
গার্ডিয়ানদের প্রশিক্ষণ দেয়া,তাদের বাড়িতে রেগুলার যাতায়াত,শিশুর বিকাশের ব্যাপারে তাদের অবগত করা।কিভাবে একটা শিশুর ভাষাগত, মানসিক, সামাজিক ও মটর স্কিল ডেভেলপ করা যায় সে ব্যাপারে তাদেরকে তথ্য সরবরাহ করা হয়।

পেরেন্টসদের প্রশিক্ষক বাসায় বাসায় পার্সোনাল ভিজিট করতেন এবং মাসিক গ্রুপ বৈঠকের ব্যবস্থা করতেন।বাচ্চার বিকাশের অন্তরায়গুলোও বলে দিতেন।

তিন বছর পর যখন একটা পরীক্ষা করা হয়।যেখানে দেখা যায় 'মিসৌরী প্রোগ্রাম'র একটা বাচ্চা তার সম বয়সী ও সমান আর্থ-সামাজিক ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে উঠে আসা বাচ্চার চেয়ে অনেক এগিয়ে।

সুতরাং বাচ্চাদেরকে কেবল ভালো স্কুলে পড়ালেই বাচ্চার সর্বোচ্চ মানসিক বিকাশ সম্ভব নয়।অভিভাবকদের ভুমিকা ও বাসার পরিবেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

পঠিত : ২৪২ বার

মন্তব্য: ০