Alapon

লক্ষ্য টাকার ওয়াজ মাহফিল এবং কিছু কথা...



আমাদের বর্তমানে গ্রামঞ্চল-শহরে প্রচলিত মাহফিল গুলোতে লাখ লাখ টাকা খরচ হয়, বেনিফিট হিসাবে তেমনটা কিছু নেই বললে চলে। একটি মাহফিল পরিচালনা আয়োজন করতে, ১টি বছর আগে থেকে টেনশন করতে হয়। ১বছর আগে থেকে ঢাকার বক্তাদের সিডিওয়েল + হাদিয়া পাঠিয়ে বুকিং দিতে হয়। তাও তাদের সিডিওয়েল মিলে নাহ।

প্রতিটা জায়গায় জায়গায় মাহফিলের জন্য চাঁদা তুলা, কালেকশন করা থেকে শুরু করে মিনিমাম মাহফিল কয়েকমাস আগে থেকে। আর যদি মাদ্রাসা কেন্দ্রিক সভা হয়, হাফেজি পড়া ছাত্রদের নিয়ে রাস্তায় টাকা কালেকশনে বসায় দেয়। ঠিক এত এতদিনের কষ্টের টাকা কালেকশন ঢাকা শহর থেকে আগত বড় বড় শায়েখ ১ঘন্টা চিল্লায়ে, নিয়ে যাবে।
আমি এটা স্রেফ এভয়েড করি, এই ট্রেডিশনাল মাহফিল করতে সমর্থন দিয় নাহ। সামাজিক সংগঠন পরিচালনায় এই লাখ টাকায়, সমাজের অনেক কাজ করা যায়। যা মানুষ আপনাকে দোয়া করবে, আপনার মৃত্যুর পরবর্তি সম্বল হবে (সদকায়ে জারিয়া)।

*এই লাখ টাকায় কি কি করা যায়?

১. গ্রামাঞ্চলে ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প।
২. ফ্রি চক্ষু সেবা।
৩. সুদ ধ্বংস করে কার্জ হাসানা প্রজেক্ট।
৪. গভীর নরকূপ স্থাপন
(গ্রীষ্মে যেখানে পানির জন্য হাহাকার হয়ে উঠে)
৫. রাস্তা মেরামত।
৬. যে পরিবার, টাকার জন্য মেয়ে বিবাহ দিতে পারছে না।
৭. অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা।
৮. অসচ্ছল ছাত্র-ছাত্রীদের ফ্রি পাঠদান কেন্দ্র।
ইত্যাদি ইত্যাদি...

ট্রেডিশনাল মাহফিল বিকল্প প্রস্তাবনা:

১. জুমার খুৎবায় বিষয়ভিত্তিক আলোচনা।
২. সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা, কুনুতে নাজেলা পাঠ।
৩. অঞ্চল ভিত্তিক মাসে বা ৩মাসে একবার বিশেষ আলিম দিয়ে, প্রশ্ন-উত্তর পর্ব ও আলোচনা।
৪. মহিলাদের জন্য সাপ্তাহিক প্রশ্ন-উত্তর পর্ব ও
মাসআলা মাসায়েল বৈঠক আয়োজন করা।
৫. যুবক এবং মুরব্বীদের মসজিদ ভিত্তিক
কোরআন ও মৌলিক বিষয় কোর্স পরিচালনা।
৬. মসজিদ ও অঞ্চল ভিত্তিক জ্ঞানের জন্য লাইব্রেরি করা।
পরিশেষে, আমি বর্তমান ট্রেডিশনাল মাহফিল নিয়ে বলছি। যেটা এক প্রকার মৌসুমি বিসনেস মত। এর মাঝেও অনেক হক্কানি আলিম আছেন, তা শতভাগ সত্য যারা দ্বীনের জন্য কাজ করছে, যাদের পদচারণায় গ্রামের সেই কুসংস্কৃতি- যাত্রাপালা, নাচ গান, ঘোড়াদৌড়, বলি খেলা। প্রায় বিলিন বললে চলে...। সেই সকল উস্তাদ এবং আলিমরা প্রশংসারযোগ্য তারা আজীবন মানুষের অন্তরে থাকবে, তাদের জন্য দুআ করবে।
যারা কন্ডিশনে বা কন্ট্রাকি বক্তা যাদের অগ্রীম ব্যাংকে টাকা ডুকিয়ে দিতে হয়, মঞ্চে উঠার আগে বাকি টাকা প্রদান করতে হয়। তাদের জন্য অনেক মানুষ, অনেক উস্তাদ বদ-দোয়া করছে। তাদের থেকে ফানাহ চাচ্ছে।

যারা নি:স্বার্থভাবে সামাজিক কার্যক্রম করছে,
নি:শ্বার্থভাবে দ্বীনের আনজাম দিচ্ছে... আল্লাহ্ তাদের উত্তম জাজাহ্ দান করুক। যারা এই কাজ করতে করতে পৃথিবী ত্যাগ করেছেন, তাদের জান্নাতের মেহমান হিসাবে কবুল করুক। আমিন

পঠিত : ২২৫ বার

মন্তব্য: ০